সোমবার, ১৮ আগস্ট, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


আজাদুল ইসলাম, পীরগঞ্জ

প্রকাশিত: আগস্ট ১৮, ২০২৫, ০৭:৫০ এএম

কাজ শেষ না হতেই বাঁধে ধস

আজাদুল ইসলাম, পীরগঞ্জ

প্রকাশিত: আগস্ট ১৮, ২০২৫, ০৭:৫০ এএম

কাজ শেষ না হতেই বাঁধে ধস

# প্রকল্পের শুরু থেকেই নি¤œমানের কাজ নিয়ে প্রশ্ন ওঠে
# যথাযথ দুরমুজ বা ফিনিশিং ছাড়াই বসানো হচ্ছে ব্লক
# বৃষ্টির মধ্যে ব্লক বসানোয় বাঁধ ধসে পড়ছে
# বিছানো হচ্ছে ডাইস মেশানো ইটের খোয়া
# মাটি নরম থাকায় ব্লক সরে যাচ্ছে
#  ঠিকাদার নিজ খরচে ঠিক করে দেবে: পাউবো প্রকৌশলী

নদীভাঙন প্রতিরোধে বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু হলে তীরবর্তী ও এলাকার বাসিন্দারা আশায় বুক বেঁধেছিলেন। কিন্তু কাজ শেষ না হতেই রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার চতরা ইউনিয়নের আখিরা শাখা নদীর তীর সংরক্ষণ বাঁধ ধসে পড়েছে। গত সপ্তাহ থেকে বাঁধের ব্লকগুলো ফাটল ধরে খসে পড়ছে। ভাঙন ঠেকাতে আবারও জোড়াতালি দিয়ে মেরামত করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

স্থানীয়দের অভিযোগ, নি¤œমানের কাজ, দুর্বল মনিটরিং এবং যথাযথ ডাম্পিং ছাড়া বৃষ্টির মধ্যে ব্লক বসানোর কারণে বাঁধে ধসের ঘটনা ঘটেছে। তাদের দাবি, প্রকল্প শুরুর পর থেকেই কাজের মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তবে ব্লক ধসে যাওয়ার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করলেও নি¤œমানের কাজের অভিযোগ অস্বীকার করে মাটির সমস্যার কথা জানিয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালের ১৬ অক্টোবর একনেক বৈঠকে রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলায় ‘রংপুর জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার নদীতীর সংরক্ষণ, ছোট নদী, খাল-বিল পুনঃখনন ও জলাবদ্ধতা নিরসন শিরোনামে একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। এর অংশ হিসেবে আখিরার শাখা নদীর তীর সংরক্ষণে বাঁধ নির্মাণ ও সৌন্দর্য বর্ধনের কাজটি শুরু হয়।

আখিরা শাখা নদী রক্ষায় চতরা ইউনিয়নের চতরা হাট এলাকায় ৮০০ মিটার বাঁধ নির্মাণের জন্য কাজ পান রংপুরের হাসিবুল হাসান নামে এক ঠিকাদার। এ কাজে ব্যয় ধরা হয়েছে ৫ কোটি ৩৮ লাখ ৩৪ হাজার ৭৪৭ টাকা। ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে কাজ শুরু হয়ে ওই বছরের ৩০ নভেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কাজ শুরু হয় ২০২৫ সালের মাঝামাঝি। এ হিসাবে ২০২৬ সালের ৩০ জুন কাজটি শেষ হওয়ার কথা। আর কাজটি করছেন রংপুরের আরেক ঠিকাদার ভরত প্রসাদ।

সম্প্রতি ওই এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, প্রকল্পের অধিকাংশ কাজই প্রায় শেষ। বসানো হচ্ছে ব্লক। তবে ব্লক বসানো শেষ হওয়ার আগেই অনেক অংশে ব্লক খসে পড়েছে। ওয়াকওয়ের টাইলস উঠে যাচ্ছে।

স্থানীয়রা বলেন, কাজের মান এতই নি¤œমানের যে বন্যা হলে তীর সংরক্ষণ বাঁধ আর রক্ষা করা সম্ভব হবে না। তাদের অভিযোগ, মাটি ফেলে তা সঠিকভাবে ডাম্পিং করা হয়নি। বালুমাটি নরম থাকায় ব্লক ঠিকমতো থাকছে না। একটু পানিতেই পানির সঙ্গে নিচের মাটি সরে যাওয়ায় ব্লক ধসে পড়ছে।

নদীতীরবর্তী  আশ্রয়ণ কেন্দ্রের বাসিন্দা পরিমল চন্দ্র বলেন, নদীর সাইড ঠিকভাবে দুরমুজ বা ফিনিশিং না করে পানির মধ্যে ব্লক বসিয়ে কাজ করছেন ঠিকাদার। এ জন্য আমার ঘরের সামনে ব্লকে ফাটল ধরেছে। নদীর বাম তীর পুরোটাই ধসে যাওয়ার ভয়ে আছি। কারণ, এই সাইটের অনেক ব্লক এমনিতেই দেবে ও ফাঁকা  হয়ে যাচ্ছে। সঠিকভাবে তদারকির অভাবে কাজটি খারাপ হয়েছে।

চতরা এলাকার গফুর মিয়া বলেন, এখন পর্যন্ত নদীর বাম তীরে প্রায় ২০০ মিটার ব্লক দুইবার ধসে পড়ছে এবং ঠিকাদারের লোকজন সঙ্গে সঙ্গেই মেরামত করছে। বাঁধের নিচের বালুমাটি ধুয়ে ব্লকগুলো আস্তে আস্তে নিচে নেমে ধসে পড়ছে। তার মতে, পাথর-সিমেন্টের কাজ বাঁশ দিয়ে করা যায় না।

একই এলাকার আশরাফুল ইসলাম জানান, জোড়াতালি দিয়ে করা হচ্ছে নদীর সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ। ঠিকাদার কাজ শুরু করেছেন বর্ষা মৌসুমে। ব্লকের কাজে ওই নদীর বালু-মাটি ব্যবহার করা হয়েছে। বৃষ্টির কারণে কিছু কিছু স্থানের ব্লক ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া ডাইস মেশানো ইটের খোয়া বেডে বিছিয়ে দেওয়া হয়েছে, কোথাও দেড় ইঞ্চি, কোথাও আড়াই ইঞ্চির ওপর ব্লক বসানোর কারণে ভেঙে ও দেবে যাচ্ছে।

ভরদ প্রসাদ নামের ওই ঠিকাদারের ম্যানেজার শ্যামল বাবু  বলেন,  আমরা কাজটি দেরি করে বর্ষা মৌসুমে শুরু করেছি। যেখানে সমস্যা হয়েছে, সেখানে আবার ঠিক করে দিতে হবে।

রংপুর পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলামের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, ওখানকার কাজ দেবে গেছে, এ জন্য ঠিকাদারকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। বাঁধে যেখানে সমস্যা হয়েছে, সেখানে ঠিকাদার ঠিক করে দেবে। এক বছর থাকে ঠিকাদারের ডিফেক্ট লায়াবিলিটিজ প্রিয়ড। এর মধ্যে কোনো সমস্যা হলে ঠিকাদার তার খরচে ঠিক করে দেবে।

কাজ দেরিতে শুরু হওয়ার কারণ জানতে চাইলে রবিউল ইসলাম বলেন, আসলে ওখানকার খালটি মৎস্য অফিস থেকে লিজ দেওয়া ছিল। সেখান থেকে লিজ ক্যানসেল হয় এ বছরের এপ্রিলে। এরপর কাজটি শুরু করতে দেরি হয়ে যায়। তবে এটি এখনো পাউবোর কাছে হস্তান্তর করা হয়নি।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!