রাজশাহীর বাগমারায় সরকারি খাদ্যগুদাম ভর্তি রয়েছে পচা ধান আর চাল। গুদামে সংরক্ষিত চালের ৭০-৮০ শতাংশ চাল নষ্ট হয়ে গেছে। এ পচা চাল সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পের সুফলভোগীদের মধ্যে বিক্রয় করা হয়ে থাকে। ফলে পচা চাল খেয়ে মারাত্মক ব্যাধির সম্মুখীন হতে পারেন সুবিধাভোগীরা। গুদামের এই চাল সুফলভোগীরা খেতে পারছিলেন না। যার কারণে তারা প্রশাসনের কাছে মৌখিক অভিযোগ করেন। ভুক্তভোগীদের অভিযোগের ভিত্তিতে খাদ্যগুদাম পরিদর্শন করে উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঘটনার সত্যতা পান।
গত বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলার ৪টি খাদ্যগুদামে ধান এবং চালের বস্তা সরেজমিনে দেখেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুবুল ইসলাম। পরিদর্শন করে তিনি অধিকাংশ ধান ও চাল নষ্টের সত্যতা পান।
বাগমারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুবুল ইসলাম বলেন, এটি আসলে গুদাম কর্মকর্তাদের অবহেলা। তিনি যে পদের দায়িত্ব পালন করবেন, সেটি খেয়াল রাখবেন না, সেটা তো মেনে নেওয়া যায় না। সরকারের কোটি কোটি টাকার মালামাল নষ্ট হচ্ছে অথচ তিনি জানেন না, এটা হতে পারে না। এ চাল খাওয়ার অনুপযোগী। আমি নিজেও জানতাম না। সুফলভোগীদের অভিযোগের ভিত্তিতেই গুদামে অভিযান পরিচালনা করি। অনিয়ম প্রমাণিত হওয়ায় বর্তমানে চারটি গুদাম সিলগালা করে দেন তিনি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাগমারা উপজেলার ১৬টি ইউনিয়ন ও দুটি পৌরসভার সরকারি সুফলভোগীদের মধ্যে এ চালগুলো বিক্রয় করা হয়ে থাকে। এ চালের মান এতটাই খারাপ, যা খাওয়ার অনুপযোগী। উপজেলার ওসিএলএসডি বাচ্চু মিয়া দাবি করেন, এত চাল চেক করে নেওয়া সম্ভব হয় না। পাশাপাশি চাল বিভিন্ন ঠিকাদার কর্তৃক সংগ্রহ করা হয়ে থাকে। ট্রাকভর্তি করে ওই সব চালের বস্তা আনা হয় খাদ্যগুদামে। যার কারণে সব চেক করা যায় না।
খাদ্যগুদামে এই অনিয়মের ঘটনায় চারটি গুদাম সিলগালা করেছে উপজেলা প্রশাসন। খাদ্যগুদামে অভিযানকালে উপস্থিত ছিলেন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মেহেদী হাসান, মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা মিজানুর রহমান, উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক নবী নওয়াজেশ আমিনসহ ওসিএলএসডি বাচ্চু মিয়া।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক নবী নওয়াজেশ আমিন বলেন, উপজেলা খাদ্যগুদামে কখন কী পরিমাণ চাল বা ধান গুদাম জাত করা হচ্ছে, সেটি মূলত যিনি গুদাম কর্মকর্তা তিনি দেখে এবং বুঝে নেন। কী পরিমাণ চাল নষ্ট হলো এটি আসলে বলা সম্ভব হচ্ছে না।