- নেপথ্যে ক্ষমতাবান এক কর্মকর্তা
- শত শত নিরীহ কৃষক পরিবার দিশাহারা
- ভুক্তভোগীরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সরকারের উচ্চ মহলের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন
লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার চরকাদিরা ইউনিয়নে প্রশাসনের ক্ষমতাবান এক কর্মকর্তার ছত্রছায়ায় হোসেন ওরফে ‘সমস্যা’ নামের এক ব্যক্তি এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়দের দাবি, তার অত্যাচার, ষড়যন্ত্রমূলক মামলা ও জুলুম থেকে কৃষক, জেলে, স্কুলশিক্ষকসহ শত শত পরিবার রক্ষা পাচ্ছে না।
অভিযোগ রয়েছে, হোসেন তার দুই মেয়েকে নোয়াখালী পিবিআইয়ের তৎকালীন এসপি ও বর্তমান পঞ্চগড়ের পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান মুন্সির বাসায় গৃহপরিচারিকা হিসেবে পাঠিয়ে ঘনিষ্ঠতা গড়ে তোলেন। সেই প্রভাবকে কাজে লাগিয়ে তিনি এলাকায় বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। স্থানীয়দের ভাষায় তিনি এখন ‘অঘোষিত এসপি’।
গত রোববার রাতে পুলিশ হোসেনকে লক্ষ্মীপুর শহর থেকে গ্রেপ্তার করে। গতকাল সোমবার সকালে তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, হোসেন জমি দখল, বাড়ি উচ্ছেদ, হামলা ও মিথ্যা মামলা দিয়ে সাধারণ মানুষকে হয়রানি করছে। তার বিরুদ্ধে অন্তত এক ডজন মামলা ও একাধিক গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকা সত্ত্বেও প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন তিনি।
কৃষক মো. বেলাল জানান, ৮ লাখ ৪০ হাজার টাকা দিয়ে জমি কেনার পরও জমি পাননি, বরং মিথ্যা মামলায় জেলে যেতে হয়েছে তাকে। বৃদ্ধ আবদুল মোমিন বলেন, আশ্রয় দেওয়ার পর হোসেন তার বাড়িই বিক্রি করে দেন। আরজু হাওলাদার অভিযোগ করেন, তার জমি ও ঘরের মালামাল লুট করে মামলা দিয়ে হয়রানি করা হয়েছে। শফিক খোনার জানান, তাকে অপহরণ করে নির্যাতনের পর সাদা কাগজে সই নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। রহিমা বেগম বলেন, তাকে উচ্ছেদ করে তার বাড়ি বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে।
চর কাদিরা ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান হারুন বলেন, হোসেন এলাকার শত শত মানুষকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়েছে। নোয়াখালীর পিবিআইয়ের তৎকালীন এসপি মিজানুর রহমান তার হয়ে রিপোর্ট দিতেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
অভিযুক্ত হোসেনের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
কমলনগর থানার ওসি মো. তৌহিদুল ইসলাম জানান, হোসেনের বিরুদ্ধে কয়েকটি মামলা ও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা আছে। তাকে গ্রেপ্তারে পুলিশ তৎপর রয়েছে।
বর্তমান পঞ্চগড়ের এসপি মিজানুর রহমান বলেন, অভিযোগ থাকলে প্রশাসন তদন্ত করবে। হোসেনের মেয়েরা তার বাসায় কাজ করছেন কি না এবং তদন্তে তার সম্পৃক্ততার বিষয়ে তিনি মন্তব্য করেননি।