টাঙ্গাইলের নাগরপুরে প্রায় ৫৫ বছর ধরে একই উঠানে চলছে মসজিদ ও মন্দিরের নিয়মিত কার্যক্রম। এখানকার মুসলমান ও হিন্দু সম্প্রদায় শান্তিপূর্ণভাবে নিজ নিজ ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পালন করে আসছেন। উপজেলা সদরের চৌধুরী বাড়িতে ৯১ বছর আগে প্রতিষ্ঠিত হয় পূজাম-পটি। পরে পাশেই গড়ে ওঠে নাগরপুর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ। সেখান থেকেই পাশাপাশি শুরু হয় দুই ধর্মের ধর্মীয় কার্যক্রম।
সরেজমিনে দেখা যায়, পূজাম-পে ঢাক-ঢোল বাজছে, উলুধ্বনি হচ্ছে। আবার আজানের সময় হলে থেমে যায় পূজার কার্যক্রম। নামাজ শেষ হওয়ার পর পুনরায় শুরু হয় পূজা। স্থানীয়রা জানান, এখানে কখনো কোনো প্রকার বিশৃঙ্খলা হয়নি, বরং ঈদে হিন্দুরা যেমন আনন্দ করেন, তেমনি পূজায় মুসলমানেরাও আনন্দ ভাগ করে নেন। পূজামন্দিরের সভাপতি লিটন কুমার সাহা বলেন, ‘এখানে ৫৫ বছর ধরে আমরা সম্প্রীতির সঙ্গে পূজা উদযাপন করছি। কোনো সমস্যা হয়নি, সবাই নিজ নিজ দায়িত্বে উৎসব পালন করে।’ মসজিদের ইমাম মো. আব্দুল লতিফ জানান, ‘আমি প্রায় ৩৮ বছর ধরে ইমামতি করছি। মুসলমানরা সবসময় মন্দিরের নিরাপত্তায় খেয়াল রাখেন। এখানে ধর্মীয় সম্প্রীতির অনন্য দৃষ্টান্ত আছে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরাফাত মোহাম্মদ নোমান বলেন, ‘প্রশাসন শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মাঠে থাকে। তবে এ এলাকায় কখনো কোনো প্রকার বিশৃঙ্খলা হয়নি। মুসলিম-হিন্দু উভয়ের মধ্যে চমৎকার সম্পর্ক রয়েছে।’
জেলা পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান পূজাম-প পরিদর্শন কালে বলেন, ‘নাগরপুরের এই দৃষ্টান্ত প্রমাণ করে বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। এই দৃষ্টান্ত যদি বিশ্বে ছড়িয়ে দেওয়া যায় তবে সাম্প্রদায়িক হানাহানি কমে যাবে।’