গরুর জিব্বা কেটে বালতিতে রেখে গেল দুর্বৃত্তরা

ময়মনসিংহের ত্রিশালে গরুর জিব্বা কেটে বালতিতে রেখে গেছে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধমে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এ নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

জানা যায়, গত মঙ্গলবার রাতে উপজেলার বৈলর ইউনিয়নের সম্মুখ বৈলর নামাপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় স্থানীয় সংবাদকর্মী সাইফুল ইসলাম তুহিন ব্যক্তিগত আইডিতে একটি ভিডিও পোস্ট করেন। ওই পোস্টে নীরব পথিক নামে এক আইডি থেকে মন্তব্য করা হয়। লেখা হয়, ‘আল্লাহ আপনি সবই পারেন, আপনি আপনার কুদরতি হাত দিয়ে গরুটা পুনরায় সুস্থ করে দিন। যেন তার জীবন চলার পথে কোনো বাধা না থাকে।’

চৌধুরী আনোয়ার মন্তব্যে লিখেন, ‘যে দেশে মৃত ব্যক্তিকে কবর থেকে উঠিয়ে পুড়িয়ে ফেলে উল্লাস করে। সে দেশে আর কি আশা করা যায়। বড়ই কষ্টদায়ক কাজগুলো ঘটে যাচ্ছে, কেউ কোনো কথাই বলতে পারছে না। বড়ই নির্মম।’

মন্তব্যে এমডি রনি নামে একজন লেখেন, ‘আল্লাহ তোমার কাছে মন থেকে বলছি। এই বোবা প্রাণীটার সঙ্গে যে এত বড় জঘন্য কাজটা করল, তাকে তুমি এর চেয়ে ভয়ানক শাস্তি দিও আল্লাহ। বোবা প্রাণীটা কীভাবে চোখের পানি ফেলছে, আল্লাহ। এই চোখের পানির বিচার তুমি কইরো।’

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গরুর জিব্বা কেটে বালতিতে রেখে যাওয়ায় ঘটনায় এলাকার মানুষের মধ্যে বিস্ময় ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তারা বলছেন, প্রাণীর প্রতি এমন নিষ্ঠুর আচরণ কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।

গরুর মালিক মালিক হরমুজ আলী বলেন, ‘গত মঙ্গলবার রাতে আমার মেয়ে এসে খবর দেয়-বালতির মধ্যে একটি জিহ্বা পাওয়া গেছে। পরে গোয়ালঘরে গিয়ে দেখি গরুর মুখ থেকে রক্ত বের হচ্ছে। আমার জানামতে, আমার কোনো শত্রু নেই। গরু তো কোনো অপরাধ করেনি। আল্লাহ যেন এই নিষ্ঠুরতার বিচার করেন। পেটের বাচ্চার কথা চিন্তা করে পশু চিকিৎসকের সহযোগিতায় গাভিটিকে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করছি। আক্রান্ত গরুটি প্রায় ৫ মাসের গর্ভবতী। ঘটনার পর থেকে গরুটি তীব্র যন্ত্রণায় ছটফট করছে।’

আবুল হোসেন নামে স্থানীয় বৃদ্ধ বলেন, ‘আমার জীবনে এমন ঘটনা কখনো দেখিনি। একটি বোবা প্রাণীর ওপর এমন অত্যাচার ঘৃণ্য ও নিকৃষ্ট কাজ। এটি শুধু পশুর প্রতি নির্যাতন নয়, বরং মানবতার ওপর এক চরম আঘাত।’

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা নাজনীন সুলতানা বলেন, ‘খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। গাভিটির জিহ্বা আংশিকভাবে কাটা হয়েছে। আমরা চিকিৎসা সহায়তা দিচ্ছি এবং গর্ভের বাছুরের জীবন রক্ষায় সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।’

ত্রিশাল থানার ওসি মো. মনসুর আহমেদ বলেন, ফেসবুকে ভিডিও দেখে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। তবে গরুর মালিকপক্ষ থেকে এখনো কেউ কোনো অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ দিলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।