ঢাকা রবিবার, ২৬ অক্টোবর, ২০২৫

নিষেধাজ্ঞা শেষে ইলিশ ধরতে নদীতে জেলেরা

চাঁদপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: অক্টোবর ২৬, ২০২৫, ০১:৫৪ এএম

প্রজনন মৌসুম উপলক্ষে ইলিশ ধরায় সরকারের ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে গতকাল শনিবার মধ্য রাতে। এরই মধ্যে চাঁদপুরের মেঘনা উপকূলীয় জেলেরা নিষেধাজ্ঞা শেষে ইলিশ ধরার জন্য নদীতে নামছে মাছ ধরতে।

জেলেরা জানান, নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাদের সময় ভালো কাটেনি। সরকারি সহায়তা পেলেও তা ছিল খুবই কম। তারপরেও আবার নতুন করে জাল নিয়ে নদীতে নামছেন। মৎস্য বিভাগ বলছে এবারের অভিযান কঠোর হয়েছে। যার ফলে ইলিশ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হবে। গতকাল শনিবার সকালে সরেজমিনে মেঘনা উপকূলীয় এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, জেলেদের ইলিশ ধরার ব্যস্ততা। এসব এলাকার বেশিরভাগই লোকজন ইলিশসহ অন্যান্য মাছ আহরণ করে জীবিকা নির্বাহ করে। নিষেধাজ্ঞা উঠে যাবে এজন্য শহরের যমুনা রোড, টিলাবাড়ি, পুরান বাজার রনাগোয়াল, দোকানঘর, বহরিয়া ও হরিণা ফেরিঘাট এলাকায় অধিকাংশ জেলে জাল এবং নৌকা মেরামত করছে। ইলিশ ধরার আগাম প্রস্তুতি হিসেবে সরগরম হয়ে উঠেছে প্রতিটি মহল্লা। এখন শুধু কাক্সিক্ষত ইলিশ ধরার অপেক্ষা।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, জেলার মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল থেকে হাইমচর উপজেলার চরভৈরবী পর্যন্ত প্রায় ৭০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে মা ইলিশ ডিম ছাড়ার জন্য অভয়াশ্রম এলাকা ঘোষণা করা হয়। এসব এলাকায় নিবন্ধিত জেলেপরিবার হচ্ছে প্রায় ৪৫ হাজার ৬১৫। এসব জেলেদের ২২ দিনের জন্য ২৫ কেজি করে খাদ্য সহায়তা হিসেবে চাল দিয়েছে সরকার।

ইব্রাহীমপুর ইউনিয়নের জেলে মফিজুল ইসলাম ও শওকত হোসেন বলেন, আগের তুলনায় জেলের সংখ্যা বেড়েছে। যার ফলে ইলিশ কম পাওয়া যায়। জ্বালানি খরচ বেশি। ইলিশ কম পেলে লোকসান গুনতে হয়। তারপরেও ইলিশ প্রাকৃতিক সম্পদ পাওয়ার আশা নিয়ে নদীতে নামবেন।

লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়নের রামদাসদী গ্রামের জেলে আকবর খান ও শামছুদ্দিন বলেন, গত ২২ দিন খুবই কষ্টের মধ্যে সংসার চলেছে। ২৫ কেজি চাল দিয়ে বর্তমান বাজারে কিছুই হয় না। জাল ও নৌকা প্রস্তুত করেছেন। নদীতে নামবেন। ইলিশ পেলে চলবে তাদের সংসার।

চাঁদপুর সদর উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা মির্জা ওমর ফারুক বলেন, জেলা ও উপজেলা টাস্কফোর্সের ২২ দিনের অভিযান কঠোর হয়েছে। যার ফলে ইলিশ নিরাপদে ডিম ছাড়তে পেরেছে। ইলিশ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুম হিসেবে গত ৪ অক্টোবর শুরু হয় নিষেধাজ্ঞা। এ সময় জেলা ও উপজেলা টাস্কফোর্স অভিযান চালিয়ে ২১ দিনে ৯৪ জন জেলে আটক করে। জাল জব্দ হয় সাড়ে ৫ লাখ মিটার।