নওগাঁর মান্দায় স্বামীর নামের আংশিক মিল থাকায় দুবাইপ্রবাসীর স্ত্রীকে আটক করে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ। এমন ঘটনার জন্ম দিয়েছে মান্দা থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) সোহেল রানা। ঘটনাটি এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার কালিগ্রাম দৌডাঙ্গী গ্রামের বাবুল আলী ও তার স্ত্রী সামেনা বেগমের নামে ব্যাংকের দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছিল। কিন্তু ওই মামলার আসামি সামেনা বেগমকে না পেয়ে পুলিশ আটক করে অন্যজনকেÑ প্রবাসী বাবুল হোসেনের স্ত্রী লাবনী বেগমকে।
গত ১৪ অক্টোবর সকালে এএসআই সোহেল রানা কুসুম্বা ইউনিয়নের বড়পই গ্রামে লাবনী বেগমের ভাই মোজাহারুল ইসলামের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করেন। লাবনী ও তার পরিবার তখনই জানায়, তার নাম লাবনী বেগম, স্বামী বাবুল হোসেনÑ তিনি মামলার আসামি নন। কিন্তু পুলিশ তাদের কথা না শুনে লাবনীকে থানায় নিয়ে যায়। পরে লাবনীর বড় ভাই থানায় জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়ে উপস্থিত হলেও পুলিশ তাকে গুরুত্ব না দিয়ে থানা থেকে বের করে দেয়। এরপর দ্রুত লাবনীকে আদালতে পাঠানো হয়। আদালতে জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদর্শনের পর লাবনীকে ভাই মোজাহারুল ইসলামের জিম্মায় মুক্তি দেওয়া হয়।
এই ঘটনায় চরম মানসিক আঘাত পেয়েছেন লাবনী ও তার পরিবার। তিনি বলেন, ‘সকাল সাড়ে ছয়টায় পুলিশ এসে গেট খুলে ফেলে। আমি বললাম, আমার নাম লাবনী বেগম, স্বামীর নাম বাবুল হোসেন। কিন্তু তারা শুনল না। থানায় নিয়ে গিয়ে খারাপ ব্যবহার করেছে। আদালতেও কিছু মেলেনি। আমার মানসম্মান নষ্ট হয়েছে, টাকাও খরচ হয়েছে। আমি পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা ও ক্ষতিপূরণ চাই।’
লাবনীর ভাই মোজাহারুল ইসলাম অভিযোগ করেন, ‘ওয়ারেন্টে নাম ছিল সামেনা বেগম। আমি বারবার বলেছি, আমার বোনের নাম লাবনী। কিন্তু এএসআই সোহেল নিজ হাতে নামের পাশে লাবনী লিখে আমার বোনকে ধরে নিয়ে যায়। পরে জামিনে ছাড়াতে হয়েছে।’
অভিযুক্ত এএসআই সোহেল রানা বলেন, ‘তারা বলেনি যে তিনি সামেনা নন। আমি ভেবেছি তিনিই আসামি। পরে তার ভাই ২৫ হাজার টাকা নিয়ে থানায় এসেছিলেন। তখনো কিছু বলেননি। যদি আগে জানতাম, আটক করতাম না।’ তবে বক্তব্যের একপর্যায়ে সাংবাদিকের সঙ্গে ফোন সংযোগ কেটে দেন তিনি।
এ বিষয়ে মান্দা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বলেন, ‘আমি ১১ থেকে ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত প্রশিক্ষণে ছিলাম। বিষয়টি এখন জেনেছি। যা ব্যবস্থা নেওয়া দরকার, তা নেওয়া হবে।’

