রাজবাড়ীতে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে মশার উপদ্রব। বিশেষ করে রাজবাড়ী পৌরসভা, গোয়ালন্দ, পাংশা ও বালিয়াকান্দি উপজেলার শহর এলাকায় মশার আধিক্য চরমে উঠেছে। মশার কামড়ে রাতে ঘুমাতে পারছে না সাধারণ মানুষ। বিশেষ করে শহরের অলিগলির খোল, ড্রেন ও নালায় ময়লার স্তূপ, জমে থাকা পানি এখন মশার প্রজননক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া ও ম্যালেরিয়া যেমন আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে, তেমনি সদর হাসপাতালসহ উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে প্রতিদিন জ¦রে আক্রান্ত রোগীর ভিড় লেগেই থাকে। এদের অনেকের শরীরে ডেঙ্গুর উপসর্গ পাওয়া যাচ্ছে।
জেলার বিভিন্ন পৌর এলাকায় ডাম্পিং স্টেশন ও ময়লা-আবর্জনা অপসারণের যথাযথ ব্যবস্থা না থাকায় সড়কের পাশে ও খোলা স্থানে ময়লা ফেলে রাখা হয়েছে। এসব জায়গা থেকে ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ এবং দূষিত হচ্ছে পরিবেশ। পাশাপাশি এই আবর্জনা থেকেই জন্ম নিচ্ছে অসংখ্য মশা। পৌর কর্তৃপক্ষ নিয়মিত বর্জ্য অপসারণ ও ফগিং কার্যক্রম না হওয়ায় জনস্বাস্থ্যের ওপর পড়ছে বিরূপ প্রভাব।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, মশার উপদ্রব এখন অসহ্য। রাতে ঠিকমতো ঘুমানো যায় না। পৌরসভা থেকে ওষুধ ছিটানোর কথা শোনা গেলেও তা বাস্তবে দেখা যায় না। দ্রুত মশা নিধন অভিযান শুরু ও শহর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার দাবি জানান তারা।
স্থানীয় সচেতন মহল বলেছে, মশা দমন শুধু ফগিং করে সম্ভব নয়, প্রয়োজন সমন্বিত উদ্যোগ। নাগরিকদেরও নিজেদের বাড়িঘর ও আশপাশ পরিষ্কার রাখা, জমে থাকা পানি সরানো এবং পুরোনো টায়ার, বোতল, পাত্র ইত্যাদি যেখানে পানি জমে থাকে, সেগুলো নিয়মিত ফেলে দেওয়া জরুরি।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা জানান, জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ডেঙ্গু জ্বরের রোগী পাওয়া যাচ্ছে। এখনই পৌরসভার উদ্যোগে ড্রেন পরিষ্কার, ময়লা-আবর্জনা অপসারণ ও নিয়মিত ফগিং কার্যক্রম শুরু না করলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হতে পারে।
গোয়ালন্দ পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ফেরদৌস আলম খান জানান, প্রায় পৌনে ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে বর্জ্য পরিশোধনাগার নির্মাণ প্রকল্পের কাজ চলছে। এর ৯০ শতাংশ কাজ শেষ হলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কারণে শেষ ধাপের কাজ কিছুদিন ধরে বন্ধ রয়েছে। কাজ সম্পন্ন হলে গোয়ালন্দসহ পুরো জেলায় ময়লা-আবর্জনা ব্যবস্থাপনায় আমূল পরিবর্তন আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা মো. হেমায়েত হোসেন বলেন, মশা নিধনে প্রশাসক নির্দেশ দিয়েছে। মেডিসিন ও ফগার মেশিন প্রস্তুত থাকলেও টেকনিশিয়ানের অভাবে কার্যক্রম কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে অভিযান শুরু হবে বলে তিনি জানান।

