ঢাকা বুধবার, ০৫ নভেম্বর, ২০২৫

নির্মাণের তিন মাসে ধসে পড়ে সেতু, সাত বছরেও হয়নি পুনর্নির্মাণ

মাহফুজার রহমান মাহফুজ, ফুলবাড়ী
প্রকাশিত: নভেম্বর ৫, ২০২৫, ০৩:১৩ এএম

*** চরম দুর্ভোগে স্থানীয় বাসিন্দারা

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের পশ্চিম ধনিরাম এলাকায় ২০১৭-১৮ অর্থবছরে দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে নির্মিত একটি সেতু নির্মাণের মাত্র তিন মাসের মধ্যেই ধসে পড়ে। এতে সরকারের প্রায় ৩১ লাখ টাকা ব্যয় নির্মিত সেতুটি অচল হয়ে যায়। ধসে পড়ার সাত বছর পার হলেও সেতুটি পুনর্নির্মাণ না হওয়ায় চরম দুর্ভোগে রয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

সরেজমিন দেখা যায়, উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের আবাসন সংলগ্ন খালের ওপর নির্মিত সেতুটি ভেঙে যাওয়ায় ওই গ্রামের মানুষজন ঝুঁকি নিয়ে অস্থায়ী ড্রামের ভেলায় পারাপার হচ্ছেন। বিশেষ করে স্কুলগামী শিক্ষার্থী, কৃষক ও কর্মজীবী মানুষের যাতায়াতে দেখা দিয়েছে চরম দুর্ভোগ।

স্থানীয় কুটিবাড়ী ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী সেলিনা খাতুন ও সুমাইয়া খাতুন বলেন, ‘ভেলায় করে স্কুলে যাওয়া কষ্টকর ও ঝুঁকিপূর্ণ। মাঝে মাঝে পড়ে যাই, বইপত্র ভিজে যায়। বন্যার সময় তো আমরা খালের ওপারের শিক্ষার্থীরা স্কুল কলেজে যেতেই পারি না।’ স্থানীয় বাসিন্দা মোবারক আলী, শহিদুল ইসলাম, মন্টু মিয়া, কোরবান আলী, জাদু মিয়া বলেন, ‘ব্রিজটা ভাঙার পর থেকে বহু বছর হয়ে গেল, কেউ নতুন করে বানানোর উদ্যোগ নেওয়নি। প্রতিদিন ড্রামের ভেলায় ঝুঁকি নিয়ে পার হতে হয়। ভেলায় পারাপার হতে গিয়ে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে।’

শাহজালাল নামের আরেকজন বলেন, ‘খাল পারাপারে এই সেতুটির নির্মাণকাজ সম্পন্ন হওয়ার পর আমাদের আনন্দের সীমা ছিল না। কিন্তু আমাদের সেই আনন্দ বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। সেতুটি নির্মাণের পর মাত্র তিন মাস যেতে না যেতেই এটি ভেঙে গেছে। সেই থেকে খাল পারাপারে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। আমরা চাই, আমাদের ভোগান্তি বিবেচনা করে নতুন সেতু নির্মাণ করা হোক।’

স্থানীয় ইউপি সদস্য গোলাম মোস্তফা সরকার বলেন, ‘সেতুটির এমন পরিণতিতে আবাসনবাসীসহ স্থানীয় বাসিন্দারা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। সেখানে নতুন করে সেতু নির্মাণ না হলে খাল পারাপারে তাদের এ ভোগান্তি থেকেই যাবে।’

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সিরাজউদ্দৌলা জানান, ‘খালের ওপর নির্মিত সেতু ধসে পড়ার পর দুই প্রান্তের মাটিও ধসে গেছে। ফলে খালের প্রশস্ততা আগের থেকে অনেক বেড়ে গেছে। বর্তমানে নকশা অনুযায়ী নতুন সেতু নির্মাণ সম্ভব নয়।’

উপজেলা প্রকৌশলী মামুনুর রহমান বলেন, ‘আগের সেতুটি দুর্যোগ ও ত্রাণ বিভাগের প্রকল্পে নির্মিত হয়েছিল। ওই রাস্তাটির কোনো সরকারি আইডি না থাকায় নতুন করে সেতু নির্মাণ প্রকল্প অনুমোদন পাওয়া যাচ্ছে না।’ স্থানীয়দের দাবি, এলাকার মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে দ্রুত সেখানে একটি মজবুত সেতু নির্মাণে সরকারের উদ্যোগ প্রয়োজন।