- স্থানীয়রা বলছেন, নি¤œমানের কাজেই ধস
- সাবেক প্রকল্প কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে
- প্রশাসন তদন্তের আশ্বাস দিয়েছে
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার বিনোদপুর ইউনিয়নের নলবোনা খালের ওপর নির্মিত একটি সেতু সম্প্রতি ভেঙে পড়েছে। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ৩২ লাখ ৫৩ হাজার ৫৬০ টাকা ব্যয়ে নির্মিত এ সেতুটি ভারি বর্ষণে নয়, বরং নির্মাণে অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণেই ধসে পড়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
গত ৩১ অক্টোবর রাতে হঠাৎ বৃষ্টির পানিতে সেতুটি সম্পূর্ণ ভেঙে যায়। সরেজমিন দেখা যায়, ধসে পড়া সেতুর কারণে এখন ওই এলাকার মানুষের চলাচল মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এ ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও হতাশা দেখা দিয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা আমিনুল ইসলাম (চুটু ডাক্তার) বলেন, ‘ব্রিজের কাজের সময় অনিয়ম দেখেছিলাম। প্রতিবাদ করায় আমাকে অপমানিত ও লাঞ্ছিত হতে হয়েছিল।’
বিনোদপুর ইউনিয়নের তৎকালীন ৪নং ওয়ার্ড সদস্য ঈদুল আহমেদ বলেন, ‘ব্রিজের অনিয়মের বিষয়ে কথা বলায় আমাকে খাইরুল মেম্বার ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা হুমকি দিয়েছিলেন।’
স্থানীয় জনসাধারণের দাবি, তৎকালীন প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আরিফুল ইসলাম ও খাইরুল মেম্বারের ছত্রছায়ায় নি¤œমানের সামগ্রী ব্যবহার করে তড়িঘড়ি করে সেতুটি নির্মাণ করা হয়।
শিবগঞ্জ উপজেলার তৎকালীন প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আরিফুল ইসলামের তত্ত্বাবধানে দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে এই সেতু নির্মিত হয়।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজটি পায় মেসার্স ঝুমা এন্টারপ্রাইজ, যার মালিক হেমন্ত চন্দ্র বর্মন (বি-৩২২ উপশহর, রাজশাহী)। তবে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পরবর্তী সময়ে এই ঠিকাদারি লাইসেন্সটি বিক্রি করে শিবগঞ্জের এক ব্যক্তি ব্যবহার করেন।
বর্তমান বিনোদপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রুহুল আমিন বলেন, ‘সেতুটি ৮-৯ বছর আগে নির্মিত হয়। তখন থেকেই ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ ছিল। তারই ফল আজ এই ধ্বংসাবশেষ।’
অভিযুক্তদের বিষয়ে জানতে চাইলে সাবেক চেয়ারম্যান খাইরুল বলেন, ‘আমি নিজে কোনো কাজ করিনি, আমার ঠিকাদারি লাইসেন্সও নেই। প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আরিফুল ইসলামই সব দেখেছেন।’
তবে আরিফুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘মিটিংয়ে আছি, পরে কথা বলব।’ এরপর আর ফোন ধরেননি।
বর্তমান প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, ‘সেতুটি ভেঙে পড়ার খবর পেয়েছি। সরেজমিনে গিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আজাহার আলী বলেন, ‘কালভার্টের পাশে মাটি ফেলে অস্থায়ী সংস্কার করা হবে। অনিয়মের বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

