- আব্দুর রাজ্জাক শিকদারের বিরুদ্ধে ৪০-৫০% অর্থ লুটপাটের অভিযোগ
- প্রতিবাদ করলে রাজনৈতিক মামলা ও হয়রানির হুমকি
- মাসিক সভা ও আয়-ব্যয়ের হিসাব প্রকাশ করা হচ্ছে না
- জন্ম-মৃত্যু সনদ ও টিসিবি কার্ডের জন্য অর্থ দিতে হচ্ছে
দাউদপুর ইউনিয়ন পরিষদের বিভিন্ন গ্রামীণ উন্নয়ন প্রকল্পের ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ টাকা লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক শিকদারের বিরুদ্ধে। অভিযোগকারীরা জানান, রাস্তাঘাট, কালবার্ট, মসজিদ, মাদ্রাসা, কবরস্থানসহ অন্যান্য উন্নয়ন কর্মকা-ের নামে কোটি টাকা অনিয়মিতভাবে আত্মসাৎ করা হচ্ছে।
ভুক্তভোগী ইউপি সদস্যরা অভিযোগ করেছেন, উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা বিএনপির কিছু নেতাকর্মী পার্সেন্টের বিনিময়ে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে ‘শেল্টার’ দিয়ে আসছেন। মাসের পর মাস ইউনিয়ন পরিষদের অর্থের লুটপাট চললেও ইউপি সদস্যরা প্রতিবাদ করলে আওয়ামী লীগ ট্যাগ দিয়ে রাজনৈতিক মামলার হুমকি দিয়ে হয়রানি করা হয়। অভিযোগের ভিত্তিতে তারা জেলা প্রশাসক, উপজেলা প্রশাসন ও দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) লিখিতভাবে তদন্ত ও বিচারের দাবি জানিয়েছেন।
সদস্যদের অভিযোগ অনুযায়ী, সাবেক মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে ২০২০ সালে বিনা ভোটে রাজ্জাক শিকদারকে ১ নম্বর প্যানেল চেয়ারম্যান করা হয়। এরপর থেকে চেয়ারম্যান স্বেচ্ছাচারিতা, লুটপাট ও ইউপি সদস্যদের ওপর হামলার মাধ্যমে নিজের শাসন পরিচালনা করছেন।
ভুক্তভোগী ইউপি সদস্য হাসিবুর রহমান বলেন, পিআইসির প্রতি প্রকল্পে ২ লাখ টাকা বরাদ্দ পাওয়া যায়। কিন্তু তার ৫০ শতাংশ রাখেন চেয়ারম্যান এবং বাকি ১ লাখের মধ্যে ১০ হাজার টাকা সিকিউরিটি কেটে নেওয়া হয়। তিনি আরও জানান, ২০২৪ সালের নভেম্বর ও ২০২৫ সালের জুন মাসে বরাদ্দকৃত প্রকল্পের অর্ধেক অর্থের কোনো হিসাব নেই।
অন্য অভিযোগগুলো হলোÑ প্রকল্প বরাদ্দের অর্ধেক শুধু ৮ নম্বর ওয়ার্ডে দেওয়া হচ্ছে। ইউনিয়ন পরিষদের মাসিক সভা হয় না, আয়-ব্যয়ের হিসাব প্রকাশ করা হয় না। বিভিন্ন ভাতা কার্ড বিতরণে স্বজনপ্রীতি ও অনিয়ম। ইউপি সদস্যদের মতামত প্রকল্পের কাজে গুরুত্ব পায় না।
দাউদপুরের সাধারণ সেবা গ্রহণকারীরা অভিযোগ করেছেন, জন্ম ও মৃত্যু সনদ করার জন্য ৩০০-৫০০ টাকা দিতে হয়। তিসিবি কার্ডের জন্য দরিদ্ররা কার্ড পাচ্ছেন না, অথচ সম্পদশালী ব্যক্তিদের দেওয়া হচ্ছে।
ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক শিকদার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘পরিষদের কার্যক্রমে স্বেচ্ছাচারিতা বা অনিয়মের অভিযোগ ভিত্তিহীন। আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যাচার করা হচ্ছে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জানান, অভিযোগ পেয়েছি এবং ভিত্তি যাচাই করে ইউনিয়ন পরিষদের দায়িত্বে প্রশাসক নিয়োগের জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন পাঠানো হয়েছে।

