আগামী মঙ্গলবার ঢাকায় আসছেন ব্রাজিলের বিশ^কাপ জয়ী অধিনায়ক কাফু। বিশ্ব ফুটবলের সর্বকালের অন্যতম সেরা ডিফেন্ডার ধরা হয় তাকে। তার নেতৃত্বে সর্বশেষ বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ব্রাজিল। ২০০২ সালে জাপানে ব্রাজিলের হয়ে তিনিই শেষবারের মতো বিশ্বকাপের ট্রফি উঁচিয়ে ধরেছিলেন। সেই কাফু ১১ ডিসেম্বর সকালে বাংলাদেশে আসবেন।
আগামী ৫ থেকে ১১ ডিম্বের ঢাকায় জাতীয় স্টেডিয়ামে ‘এএফবি লাতিন-বাংলা সুপার কাপ’ ফুটবল টুর্নামেন্ট হবে। এতে আর্জেন্টিনার একটি দল অ্যাথলেটিকো চারলন ও ব্রাজিলের সাও বার্নাদো ক্লাবের অধীনে আরেকটি বাছাইকৃত দল বাংলাদেশে আসবে। এ দুই দেশের দুই ক্লাবের দলের সঙ্গে বাংলাদেশের একটি বয়সভিত্তিক দল গড়বে বাফুফে। এই প্রতিযোগিতার সমাপণী দিনে কাফু পুরস্কার প্রদান করবেন। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বড় তারকা আগমনের ঘোষণা দেয়। পরবর্তীতে তার বাস্তবায়ন তেমন দেখা যায় না। তাই গতকাল বিকেলে সংবাদ সম্মেলনজুড়ে প্রশ্ন ছিলÑ কাফু আসলেই আসছেন কি না। এএফবির ম্যানেজিং ডিরেক্টর এমডি আসাদুজ্জামান হারুন বলেন, ‘কাফুর বাংলাদেশের ভিসা হয়েছে, টিকিটও কনফার্ম। ১১ ডিসেম্বর সকালে ঢাকায় আসবেন। আমাদের সঙ্গে চুক্তিও হয়েছে। একটি ভিডিও বার্তা দিয়েছেন। সেটা আপনারা দেখেছেনও। আশা করছি তিনি আসবেন। ব্রাজিলের পাশাপাশি আমরা আর্জেন্টিনা থেকে ওর্তেগা, ক্যানিজিয়া এবং ভেরনকেও আনার চেষ্টা করছি।’ বাংলাদেশ বিশ্ব ফুটবল র্যাঙ্কিংয়ে পিছিয়ে থাকলেও ফুটবল উন্মাদনায় সারা বিশ্বে নজর কাড়ে। ২০২২ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সমর্থকদের উন্মাদনা সে সময় আলোচিত ছিল। এই উন্মাদনার পরে আর্জেন্টিনার গোলরক্ষক এমি মার্টিনেজ এসেছিলেন। তারপর ব্রাজিলের রোনালদিনহোকেও এনেছিল আরেক ব্যাবসায়িক প্রতিষ্ঠান। দুবারই অনেক অব্যবস্থাপনা ছিল। ফুটবল-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, গণমাধ্যম উপেক্ষিত ছিল উভয় ক্ষেত্রে। কাফুর ক্ষেত্রে তেমন কিছু ঘটবে না সেই অঙ্গীকার হারুনের, ‘আমাদের কোনো অব্যবস্থাপনা হবে না। প্রয়োজনে আমরা কাফুর জন্য একটি উন্মুক্ত সংবাদ সম্মেলনও রাখব।’ সংবাদ সম্মেলন অবশ্য সেই ভরসা খুব একটা দিচ্ছে না। বেলা ৩টার নির্ধারিত সম্মেলন শুরু হয়েছে এক ঘণ্টা পর। সংবাদ সম্মেলন শেষে সাংবাদিকেরা খানিকটা বিড়ম্বনায়ও পড়েছিলেন। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার রাষ্টদূতের উপস্থিতির কথা উল্লেখ করলেও দুই দেশের ঢাকাস্থ দূতাবাসের কোনো প্রতিনিধি ছিলেন না। নব্বইয়ের দশকের শেষের দিকে ঢাকায় ব্রাজিল থেকে একটি দল এসেছিল। একেবারে অপেশাদার সেই দলের বুটই ছিল না। বঙ্গবাজার মার্কেট থেকে বুট, জার্সি কিনেছে। ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা থেকে আগত দলের এমন অভিজ্ঞতা হবে না তো? এমন প্রশ্নের উত্তরে হারুন বলেন, ‘আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিলে যে ক্লাব থেকে ফুটবলাররা আসছে, তারা মূলত অনূর্ধ্ব-২০। সেই তালিকা আমাদের দিয়েছে। তারা ভালো মানের ফুটবলার।’ বিগত কয়েক বছরে বিশ্বমানের ফুটবল তারকারা ঢাকায় এসেছিলেন বিভিন্ন ব্যাবসায়িক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে। বাফুফের সঙ্গে কোনো সম্পৃক্ততা ছিল না। লাতিন-বাংলা সুপার কাপে বাফুফেকে সম্পৃক্ত করা হয়েছে। আজকের সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত বাফুফের নির্বাহী সদস্য কামরুল হাসান হিলটন বলেন, ‘তারা ফেডারেশনে একটি প্রস্তাব দিয়েছিল। আমরা এতে সম্মত হয়ে তাদের মাঠ বরাদ্দ দিয়েছি। এ ছাড়া টেকনিক্যাল সাপোর্ট দেব, বাকি সব ব্যবস্থাপনা তাদেরই।’ আসাদুজ্জামান হারুন ক্রীড়াঙ্গনে পরিচিত পেশাদার বক্সিং আয়োজন করেন। তার অধীনে ঢাকায় গত কয়েক বছরে আন্তর্জাতিক পেশাদার বক্সিং হয়েছে কয়েকটি। আকস্মিকভাবে তিনি ফুটবলের এমন উদ্যোগ নেওয়ার কারণ সম্পর্কে বলেন, ‘মানুষ পরিচিতি চায়। সেটা ভেবেই আমি এটা করছি। ঢাকার মাটিতে আর্জেন্টিনা-ব্রাজিলের দল আসছে, সেটা যে স্তরেই হোক। এতে মানুষ আমাকে মনে রাখবে।

