- পণ্য খালাসে গতি বাড়বে ১০ গুণ
- রাজস্ব আয়ের পাশাপাশি বাড়বে কর্মসংস্থান
ভূমি অধিগ্রহণে দীর্ঘসূত্রিতাসহ নানা জটিলতা কাটিয়ে অবশেষে পাবনার নগরবাড়ী নৌবন্দর নির্মাণকাজ শেষে উদ্বোধন হতে যাচ্ছে আজ (শনিবার)। যদিও প্রকল্পটির সময়সীমা দুবার বাড়ানো হয়েছে। কর্তৃপক্ষের দাবি, উদ্বোধন শেষে জাহাজ থেকে পণ্য খালাসে গতি বাড়বে অন্তত ১০ গুণ। সেই সঙ্গে সরকারের রাজস্ব আয়ের পাশাপাশি বাড়বে কর্মসংস্থান।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উত্তরাঞ্চলে কম খরচে সহজে নদীপথে বিপুল পরিমাণ সার, কয়লা, সিমেন্ট, পাথরসহ অন্যান্য পণ্য আনা-নেওয়া হয় পাবনার নগরবাড়ী নৌবন্দর দিয়ে। এ কারণে নৌপথে পণ্য পরিবহনের সুবিধা বাড়াতে নগরবাড়ীতে দেশের সবচেয়ে আধুনিক নদীবন্দর নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ৫৬৩ কোটি টাকা ব্যয় ধরে ৩৬ একর যায়গার ওপর ২০১৮ সালে বেড়া উপজেলার নগরবাড়ী ঘাটে যমুনা নদীর পাড়ে শুরু হয় কর্মযজ্ঞ। চার বছর মেয়াদি প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২২ সালের জুনে। তবে ভূমি অধিগ্রহণে দীর্ঘসূত্রিতাসহ নানা জটিলতা থাকায় মেয়াদ বাড়ানো হয় দুবার।
আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সংবলিত এই নৌবন্দরে তৈরি হয়েছে ৩৬০ মিটার কংক্রিটের জেটি, টার্মিনাল, ওয়ারহাউস, গোডাউন, বাফার গোডাউন, ওপেন শেড, ওপেন স্টেজসহ দ্রুততম সময়ে পণ্য লোড-আনলোডের সব সুব্যবস্থা। স্থানীয়রা মনে করছেন, প্রকল্পটি উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে ব্যাবসা-বাণিজ্যে প্রসারের পাশাপশি পাল্টে যাবে এলাকার চিত্র।
নগরবাড়ী থেকে পণ্য আনা-নেওয়ার কাজে থাকা ট্রাকচালক আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘বন্দরটা নির্মাণ হওয়ায় বন্দর এলাকার রাস্তাঘাটের উন্নয়ন হয়েছে। আগে ভাঙা রাস্তার কারণে যাতায়াতে সমস্যা হতো। আধুনিক বন্দর হওয়ায় পণ্য আনা-নেওয়ায় গাড়ি চলাচল বাড়বে, আমাদের কাজ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আয়ও বাড়বে।
স্থানীয় শ্রমিক মোস্তফা কামাল বলেন, ‘অনেক দিন ধরে নদীবন্দরের নির্মাণকাজ চলছিল। অবশেষে কাজ শেষ হওয়ায় শনিবার উদ্বোধন হবে। সরকার এখানকার মানুষের কর্মসংস্থান বাড়ালে আমাদের অনেক উপকার হবে।’
নগরবাড়ী-কাজীরহাট-নরাদহ নদীবন্দরের পোর্ট অফিসার খাইরুজ্জামান বলেন, আধুনিক নৌবন্দর চালু হলে উত্তররবঙ্গ তথা দেশের মানুষ এই প্রকল্পের সুফল পাবে, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে এই নৌবন্দর ভূমিকা রাখবে। বন্দরটিতে আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহারে ফলে জাহাজ থেকে পণ্য খালাস বাড়বে কয়েক গুণ। আগে যেখানে প্রতিদিন মালপত্র খালাস করা হতো গড়ে ২ হাজার টন, এখন সেখানে পণ্য খালাস করা যাবে অন্তত ২০ হাজার টন; পাশাপাশি সরকারের রাজস্ব আয়ও বাড়বে।’
প্রসঙ্গত, আজ (শনিবার) আধুনিক নদীবন্দরের উদ্বোধন করবেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন। অনুষ্ঠানে বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান কমরেড আরিফ আহমেদ মোস্তফাসহ অনেকের উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।

