নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ভূমিকম্পে রবিনটেক্স গার্মেন্টসের তিনটি ভবনে ফাটল দেখা দিলে শ্রমিকদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দেয়। পরে তারা কাজে যোগদান না করে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে অবস্থান নেয়। গতকাল শনিবার সকাল ৮টা থেকে দিনব্যাপী উপজেলার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের আউখাব এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
শ্রমিকেরা জানান, গত শুক্রবার সকালে সারা দেশে ৫.৭ মাত্রার ভূমিকম্প সংঘটিত হয়। এতে করে দেশের বিভিন্ন স্থানে নিহত ও আহতের বহু ঘটনা ঘটে। প্রতিদিনের মতো গতকাল শনিবার সকালে রবিনটেক্স গার্মেন্টসের শ্রমিকেরা কাজের উদ্দেশে কারখানায় আসেন। পরে কারখানার তিনটি ভবনে বিভিন্ন অংশে ফাটল দেখতে পেয়ে শ্রমিকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এর জের ধরে সকাল থেকে শ্রমিকেরা কাজে যোগদান না করে অসন্তোষ প্রকাশ করছে। পরে কারখানা কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের বুঝিয়ে কাজে যোগদান করান। কাজে যোগদান করানোর পর শ্রমিকেরা যখন ভবনগুলোতে অবস্থান করছিল, তখন বিল্ডিং কেঁপে ওঠে, এতে শ্রমিকেরা আতঙ্ক ও ভয়ে দ্রুত বের হওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় শতাধিক শ্রমিক আহত হন। আহতদের স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
বর্তমানে কারখানায় কর্মরত শ্রমিকেরা যেকোনো সময় ভবনধসের মতো দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা করছেন।
ওই কারখানার শ্রমিক আসমা আক্তার জানান, ভূমিকম্প চলাকালে তারা ভবন থেকে নিচে নামার সময় পা পিছলে তিনিসহ অনেকেই পড়ে আঘাত পেয়েছেন। বেশ কয়েকজনকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
রাবেয়া নামের আরেক শ্রমিক জানান, ভূমিকম্প শুরু হলে কারখানার বহুতল ভবনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বিভিন্ন তলার শ্রমিকেরা আতঙ্কে একসঙ্গে নিচে নেমে আসার চেষ্টা করেন। এ সময় হুড়োহুড়িতে পদপৃষ্ট হয়ে শ্রমিকেরা আহত হয়েছেন। এ অবস্থায় কাজে যোগদান করা সম্ভব নয়।
গার্মেন্টস কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দুটি বিল্ডিংয়ের মাঝের প্লাস্টারের আস্তরে ফাটল সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে শ্রমিকেরা নিরাপত্তা ঝুঁকির কথা তুলে ধরে কাজে যোগদান করতে অনীহা প্রকাশ করছে। ঘটনাটি গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করে ভবনটি সিভিল ইঞ্জিনিয়ার দ্বারা জরুরি পরিদর্শন করানো হয়েছে। সিভিল ইঞ্জিনিয়ার পরিদর্শন শেষে জানিয়েছেন, ফাটল শুধু প্লাস্টার স্তরে, ভবনের কাঠামোগত অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি বলে জানায় কারখানা কর্তৃপক্ষ।

