বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে এ বছর মাষকলাইয়ের ফলন আশানুরূপ না হওয়ায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকরা। যমুনা, বাঙালি ও সুখদহ নদী বেষ্টিত এ উপজেলার বিস্তীর্ণ চরাঞ্চল এবং নদীবিধৌত বহু ফসলি জমিতে প্রতিবছরের মতো এবারও কৃষকরা মাষকলাইয়ের আবাদ করেছেন। ইতোমধ্যে বহু এলাকায় শস্য উত্তোলন শুরু হয়েছে।
কৃষকদের ভাষ্য, মাষকলাই চাষে ব্যয় কম এবং পরিচর্যার তেমন ঝামেলা নেই। জমিতে বীজ ছিটিয়ে দিলেই দ্রুত চারা গজায়, ফলে কম খরচে লাভবান হওয়া যায়। তবে গত বছরের তুলনায় এ বছর ফলন উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। যেখানে প্রতি বিঘায় ৫ থেকে ৬ মণ করে মাষকলাই উৎপাদন হতো, সেখানে এ বছর বিঘাপ্রতি মাত্র ৩ থেকে ৪ মণ করে পাওয়া যাচ্ছে।
কর্ণিবাড়ী ইউনিয়নের কৃষক আব্দুল বাকি জানান, তিনি মথুরাপাড়া চর এলাকায় ১০ বিঘা জমিতে মাষকলাই চাষ করেছিলেন। গাছ ভালো হলেও ফলন আশানুরূপ হয়নি। তিনি বলেন, ‘অসময়ে অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত এবং পোকার আক্রমণের কারণে ফলন কমে গেছে। বাধ্য হয়ে জমি মহিষের মালিকের কাছে ৪০ হাজার টাকায় বিক্রি করেছি, এখন সেগুলো মহিষ খাচ্ছে।’
সারিয়াকান্দি কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, গত বছর উপজেলায় ৫৩৫ হেক্টর জমিতে মাষকলাইয়ের আবাদ হয়েছিল। এ বছর লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৫৫০ হেক্টর। তবে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে চাষ হয়েছে মোট ৭৫৩ হেক্টরে। এ পর্যন্ত ১০ হেক্টর জমির ফসল উত্তোলন শেষ হয়েছে। গত বছর হেক্টরপ্রতি গড় ফলন ছিল ১,৫০০ কেজি। বর্তমানে বাজারে প্রতি মণ মাষকলাই বিক্রি হচ্ছে ৪,০০০-৪,৫০০ টাকায়। বিঘাপ্রতি গড় ফলন ধরা হচ্ছে সাড়ে ৪ থেকে ৫ মণ, কেজিপ্রতি মূল্য প্রায় ১২০ টাকা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মাদ আলী জিন্নাহ বলেন, ‘চরাঞ্চলের পতিত জমিতে মাষকলাই চাষ করে কৃষকরা কম খরচে আয় করে স্বাবলম্বী হয়েছেন। কোথাও কম ফলনের খবর পাওয়া যাচ্ছে, যা অধিক ঘন করে বপন এবং অসময়ে অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের কারণে হয়েছে। তবে অনেক স্থানেই ভালো ফলন হয়েছে।’
বগুড়া জেলা কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. তানবীর হাসান বলেন, ‘গত বছরের তুলনায় এ বছর গাছে পডের সংখ্যা কিছুটা কম দেখা গেছে। মনে হচ্ছে সঠিক সময়ে যথাযথ পরিচর্যার ঘাটতির কারণে এমনটি হয়েছে।’

সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন