রবিবার, ০৬ জুলাই, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: জুলাই ৬, ২০২৫, ১২:০৭ এএম

পাটপণ্যে অ্যান্টি-ডাম্পিং শুল্ক বাড়াতে চাপ

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: জুলাই ৬, ২০২৫, ১২:০৭ এএম

পাটপণ্যে অ্যান্টি-ডাম্পিং শুল্ক বাড়াতে চাপ

বাংলাদেশ ও নেপাল থেকে আমদানি করা পাটজাত পণ্যের ওপর আরোপিত অ্যান্টি-ডাম্পিং শুল্ক বাড়াতে চাপ দিচ্ছেন ভারতের ব্যবসায়ীরা। তাদের মতে, এসব পণ্যের রপ্তানিমূল্য হ্রাস পাওয়ায় সেগুলোর অ্যান্টি-ডাম্পিং শুল্ক পুনর্মূল্যায়ন ও বৃদ্ধি করা দরকার। এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদনও করেছেন এই ব্যবসায়ীরা। তাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ও নেপাল থেকে আমদানি করা পাটজাত পণ্যের ওপর আরোপিত অ্যান্টি-ডাম্পিং শুল্কের মধ্যমেয়াদি পর্যালোচনা এরই মধ্যে শুরু করেছে ভারত। 
এদিকে ভারতীয় বার্তা সংস্থা পিটিআই বলছে, জুট মিলস অ্যাসোসিয়েশন এবং এপি মেস্টা টোয়াইন মিলস অ্যাসোসিয়েশনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই পর্যালোচনা শুরু করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনের ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ট্রেড রেমিডিজ (ডিজিটিআর)। অ্যান্টি-ডাম্পিং শুল্ক বলতে অতিরিক্ত আমদানি করকে বোঝায়, যা কোনো দেশ এমন পণ্যের ওপর আরোপ করে, যেগুলো স্বাভাবিক মূল্যের চেয়ে কম দামে (রপ্তানিকারক দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারমূল্যের চেয়েও কম) আমদানি করা হয়।
এই শুল্কের উদ্দেশ্য হলো দেশীয় শিল্পকে অস্বাভাবিক ও অন্যায্য প্রতিযোগিতা থেকে সুরক্ষা দেওয়া। পিটিআইয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ ও নেপালের পাটজাত পণ্য রপ্তানির ওপর বিদ্যমান অ্যান্টি-ডাম্পিং শুল্ক পুনর্মূল্যায়ন ও বৃদ্ধি করা প্রয়োজন বলে মনে করছে আবেদনকারীরা, কারণ এসব পণ্যের রপ্তানিমূল্য হ্রাস পেয়েছে। ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে বাংলাদেশ থেকে আমদানি করা পাটজাত পণ্যের ওপর টনপ্রতি ১৯৩৫২ ডলার অ্যান্টি-ডাম্পিং শুল্ক আরোপ করে ভারত, যা পাঁচ বছরের জন্য কার্যকর ছিল। এই মেয়াদ ২০২২ সালের ১
জানুয়ারি শেষ হওয়ার পর আরও পাঁচ বছর বাড়ানো হয়।
অন্যদিকে, নেপালের তৈরি পাটজাত পণ্যের ওপর ১২ দশমিক ৫ শতাংশ কাউন্টারভেইলিং শুল্ক (সুবিধা সমতা শুল্ক) আরোপ করে ভারত। পরে সে শুল্ক তুলে নেওয়া হলেও ওইসব পণ্যের ওপর ২-৪ শতাংশ অ্যান্টি-ডাম্পিং শুল্ক আরোপ করা হয়। সাত বছর ধরে ভারত এই অ্যান্টি-ডাম্পিং শুল্ক বজায় রেখেছে।
এর আগে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ??বাংলাদেশের পাটপণ্য আমদানিতে অ্যান্টি-ডাম্পিং শুল্কের মেয়াদ আরও পাঁচ বছর বাড়িয়ে দেয় ভারত। দ্বিতীয় এই মেয়াদে প্রতি টনে শুল্ক আরোপ করা হয় সাড়ে ৬ ডলার থেকে ৩৫২ ডলার পর্যন্ত। ২০২৭ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন পাটকলের জন্য আরোপ করা হয়েছে ভিন্ন ভিন্ন হারে। পতিত সরকারের আমলে ভারতের ওই সিদ্ধান্ত পুরোপুরি অন্যায্য ও হতাশাজনক বলে মনে করেন বাংলাদেশের বেসরকারি পাটকল মালিকরা। তারা বলেছিলেন, পাটপণ্যের রপ্তানি আরেক দফা সংকটে পড়ল। এর আগে পাঁচ বছর এই শুল্ক আরোপের কারণে বাজার হারিয়ে অনেক পাটকল বন্ধ হয়ে যায়। এবার আরও কিছু পাটকল বন্ধ হয়ে যেতে পারে। ভারতের সিদ্ধান্তের বিষয়ে সরকারকে বিশ্ববাণিজ্য সংস্থায় (ডব্লিউটিও) নালিশ করার পরামর্শ দিয়েছিলেন তারা।
বাংলাদেশ জুট মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিজেএমএ) মহাসচিব আব্দুল বারেক খান ওই সময় প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, অ্যান্টি-ডাম্পিং শুল্কের কারণে পাটকল বন্ধ হয়ে বেকার হয়েছেন অনেক শ্রমিক। পরে বাকি পাকটলগুলোও বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়। তিনি জানান, নানা কারণে দীর্ঘদিন ধরে পাটপণ্যের রপ্তানি বাজার হিসেবে ভারতকেই বোঝেন অনেক রপ্তানিকারক। অন্যায়ভাবে অ্যান্টি-ডাম্পিং শুল্ক আরোপ করেছে ভারত। ডব্লিউটিওর নিয়ম হলো, যে দেশের পণ্যে এ শুল্ক আরোপ হবে, সে দেশের কাছে তথ্য-প্রমাণসহ এ বিষয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিতে হবে। কিন্তু ভারত বাংলাদেশকে কোনো তথ্য বা ব্যাখ্যা না দিয়েই অন্যায়ভাবে এই শুল্ক আরোপ করেছে।
উৎপাদন মূল্যের তুলনায় কম দামে বাংলাদেশের পাটপণ্য ভারতে রপ্তানি হচ্ছে- ভারতীয় উৎপাদনকারীদের এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৭ সালের ৫ জানুয়ারি পাঁচ বছরের জন্য অ্যান্টি-ডাম্পিং শুল্ক আরোপ করে ভারত সরকার। বাংলাদেশ থেকে প্রতি টন পাটপণ্য আমদানিতে ১৯ থেকে ৩৫২ ডলার পর্যন্ত শুল্ক ধরা হয়। দেশের পাট খাতের উদ্যোক্তারা তখন থেকেই বলে আসছেন, ভারতের এ সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক ও অন্যায্য। বেসরকারি খাত উৎপাদন ব্যয়ের চেয়ে কম দামে পণ্য রপ্তানি করে লোকসান গুনতে পারে না।
বাংলাদেশের পাটপণ্যের মোট রপ্তানি ৬০ শতাংশ যায় ভারতে। অ্যান্টি-ডাম্পিং শুল্ক আরোপের পর থেকে দেশটিতে বাংলাদেশের পাটপণ্যের রপ্তানি ব্যাপক হারে কমতে থাকে। অ্যান্টি-ডাম্পিং কার্যকর হওয়ার আগের বছরÑ অর্থাৎ ২০১৬ সালে মোট ১ লাখ ৪২ হাজার টন পাটপণ্য রপ্তানি হয় ভারতে। পরের বছর তা ৮০ হাজার টনে নেমে আসে। এর পর তা আরও কমে আসে। বিজেএমএর তথ্য বলছে, তাদের সদস্য পাটকলের সংখ্যা ছিল ২০২টি। এখন ১৩২টি উৎপাদনে আছে। অর্থাৎ ৬৮টি পাটকল বন্ধ। চালু থাকা পাটকলেরও দুই-তৃতীয়াংশ তাঁত বন্ধ হয়ে গেছে।
অ্যান্টি-ডাম্পিং শুল্কের প্রথম মেয়াদ শেষ হওয়ার দুই বছর আগে থেকেই দ্বিতীয় মেয়াদ বাড়ানোর প্রক্রিয়া শুরু করে ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ট্রেড রেমিডিস (ডিজিটিআর)। ২০২২ সালের শুরুতেই ‘সানসেট রিভিউ নোটিফিকেশন’ বা চূড়ান্ত পর্যালোচনা নোটিশ জারি করে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ।  ভারতীয় কর্তৃপক্ষের এ-সংক্রান্ত উদ্যোগ ডব্লিউটিওর বিধিবিরোধী কি না এবং বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এর কী প্রতিকার আছে- এসব বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে ট্যারিফ কমিশনের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছিল। পররাষ্ট্র, বাণিজ্য এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিদের রাখা হয় এই কমিটিতে। কমিটি একাধিক বৈঠক করে বেশ কিছু সুপারিশ দিয়েছিল। 

রূপালী বাংলাদেশ

Shera Lather
Link copied!