বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সঙ্গে কাজ করছেন পাওয়ার হিটিং কোচ জুলিয়ান উড। ২৮ দিনের জন্য নিয়োগ দেওয়া হয়েছে এই ইংলিশ কোচকে। জাতীয় ক্রিকেট দলে ব্যাটারদের সক্ষমতা বাড়াতেই মূলত পাওয়ার হিটিং কোচ উড়িয়ে এনেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। তবে জাতীয় দলে পাওয়ার হিটিং কোচের কাজ করার বিষয়টি নতুন মাত্রা যোগ করেছে। এ সম্পর্কে হয়তো অনেকের ধারণা নেই। আবার পাওয়ার হিটিং কোচ ক্রিকেটারদের ক্লোজ ডোর অনুশীলন করাচ্ছেন, যে কারণে পাওয়ার হিটিং বিষয়টি ঘিরে নানাজনের মনে বেশি কৌতূহল তৈরি হয়েছে।
এই কোচের অধীনে এক মাস অনুশীলন করে বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের কত দূর উন্নতি হবে, তা নিয়েও শঙ্কা রয়েছে। তবে পাওয়ার হিটিং বিষয়টি পরিষ্কার করেছেন বিসিবি ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান নাজমুল আবেদীন ফাহিম। তার মতে, পাওয়ার হিটিং কোচ নিয়োগের যথার্থতা রয়েছে। এ ধরনের কোচ সব দেশে অল্প সময়ের জন্য আসেন। কোনো দেশেই দীর্ঘ মেয়াদে পাওয়ার হিটিং কোচ নিয়োগ দেওয়া হয় না। তিনি বলেন, ‘পাওয়ার হিটিং হচ্ছে একটা কনসেপ্ট (ধারণাগত বিষয়)। এটা প্রথাগত ব্যাটিং, বোলিং ও ফিল্ডিংয়ের স্পেশালিস্ট কোচিংয়ের মতো নয়। এ কারণেই ক্রিকেটারদের আগে স্থানীয় কোচদেরও পাওয়ার হিটিং কনসেপ্ট সম্পর্কে অবহিত করা হয়েছে। তাদেরও ধারণা দেওয়া হয়েছে।’
ফাহিম আরও বলেন, ‘ব্যাটার ও বোলারÑ সবার পাওয়ার হিটিং সামর্থ্য বাড়ানোই স্বল্পমেয়াদি ট্রেনিংয়ের উদ্দেশ্য। আর পৃথিবীর সব দেশেই এই পাওয়ার হিটিং কোচিংটা স্বল্প মেয়াদেই হয়। এটা কোনো ট্যাকটিক্যাল (কৌশলগত) ব্যাপার নয়। তাই পাওয়ার হিটিংয়ে দীর্ঘমেয়াদি কোচের দরকার তেমন নেই।’ পাওয়ার হিটিং সক্ষমতা সবার মধ্যে থাকার দরকার বলে মনে করেন ফাহিম। তিনি বলেন, ‘পাওয়ার হিটিং ট্যাকটিক্যাল বিষয় নয় বলেই সবার জানা দরকার। বাংলাদেশে দেখা যায়, দু-তিনজন পাওয়ার হিটার থাকেন।
সেটা মোটেই যথেষ্ট নয়। সবাইকে হিট করতে জানতে হবে। কারণ পাওয়ার হিটিং একটা কনসেপ্ট।’ ফাহিমের মতে, শুধু জাতীয় দলের জন্য নয়, বয়সভিত্তিক দল; বিশেষ করে অনূর্ধ্ব-১৯, এইচপি ও ‘এ’ দলের ক্রিকেটারদেরও এই পাওয়ার হিটিং কনসেপ্টের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়া খুব দরকার। আগামীতে জাতীয় দলের পাশাপাশি যুব দল, হাই পারফরম্যান্স ইউনিট ও ‘এ’ দলের জন্যও পাওয়ার হিটিং কোচ নিয়োগ দেওয়া হবে বলে জানান ফাহিম। তিনি বলেন, ‘আগামীতে জাতীয় দলের পাশাপাশি অনূর্ধ্ব-১৯, এইচপি আর ‘এ’ দলের জন্যও পাওয়ার হিটিং কোচ নিয়োগের চেষ্টা করব।’
সীমিত ওভারের ক্রিকেটে অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড ও ভারতের মতো দলগুলো পাওয়ার হিটিংয়ে অনেক এগিয়ে যাচ্ছে। সে তুলনায় পাওয়ার হিটিংয়ের দক্ষতায় বাংলাদেশ পিছিয়ে পড়ছে। তাই ব্যাটারদের আরও পারদর্শী করতে কাজ করছেন উড। আগে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দলের সঙ্গেও কাজ করেছেন এই ইংলিশ কোচ।
পাওয়ার হিটিং শারীরিক আকৃতির একটি বিষয়। বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা উভয় দলের খেলোয়াড়দের দিকে তাকালে দেখা যায়, তারা খুব বেশি বড় আকৃতির নয়। যেখানে ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান, ইংলিশ খেলোয়াড়েরা বড় এবং শক্তিশালী। বাংলাদেশি বা লঙ্কান খেলোয়াড়দের কিছুটা ভিন্নভাবে কাজ করতে হবে, যেখানে ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান বা ইংলিশ ব্যাটাররা মূলত শক্তির ওপর নির্ভর করে। যদিও একজন খেলোয়াড়ের খেলায় শক্তি যোগ করা যায়, তবে যারা ছোট আকারের খেলোয়াড়, মূলত তাদের ছন্দ এবং টাইমিং সেন্স এবং ধারাবাহিকতা গুরুত্বপূর্ণ। এভাবেই ছোট আকৃতির খেলোয়াড়েরা বড় ছক্কা মারতে পারে।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন