ঢাকা সোমবার, ২৭ অক্টোবর, ২০২৫

চট্টগ্রামে আজ প্রথম টি-টোয়েন্টি

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ছন্দ ধরে রাখতে চায় বাংলাদেশ

মাঠে ময়দানে প্রতিবেদক
প্রকাশিত: অক্টোবর ২৭, ২০২৫, ০২:৫৫ এএম

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে সময়টা বেশ ভালো যাচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের। এশিয়া কাপের ফাইনালে ওঠার ব্যর্থতা বাদ দিলে টানা চারটি দ্বিপক্ষীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়ের সাফল্য দেখিয়েছে বাংলাদেশ। গত জুলাইয়ে শ্রীলঙ্কাকে তাদের ঘরের মাটিতে ২-১ ব্যবধানে হারায় লাল-সবুজের জার্সিধারীরা। এরপর মিরপুরে পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়ের (২-১ ব্যবধানে) ইতিহাস গড়েছে তারা। এশিয়া কাপের আগে তিন ম্যাচের সিরিজ নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ২-০ এবং সর্বশেষ আফগানিস্তানকে টি-টোয়েন্টি সিরিজে ৩-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ করেছে বাংলাদেশ। অন্যদিকে বিপরীত মেরুতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের অবস্থান। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট খেলাটাই যেন ভুলতে বসেছে সাবেক বিশ^ চ্যাম্পিয়নরা! টানা সিরিজ হারের মধ্যে আছে তারা। গত এক বছরে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে মোট আটটি সিরিজ খেলে মাত্র একটিতে জিতেছে ক্যারিবিয়ানরা। গত মে মাসে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ জয়ের আগে ও পরে শুধু হারের হতাশায় পুড়েছে তারা।

এমনকি আইসিসির সহযোগী সদস্য দেশ নেপালের কাছেও টি-টোয়েন্টি সিরিজ হারের দুঃস্মৃতির জন্ম দিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। পরিসংখ্যানের হিসাবে চট্টগ্রামে আজ তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরু হওয়ার আগে বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ আছে ভিন্ন দুই মেরুতেই। হতাশার শেষ বিন্দুতে পৌঁছে যাওয়া ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সাম্প্রতিক সাফল্যের ধারাবাহিকতা ধরে রাখার লক্ষ্য থাকবে বাংলাদেশের। এ জন্য বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে জয়ে দিয়েই টি-টোয়েন্টি সিরিজের শুরু করতে চায় লিটন দাসরা। বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচটি শুরু হবে সন্ধ্যা ৬টায়।

মিরপুরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জেতায় বাংলাদেশ দল বেশ চনমনে। ওয়ানডে দলের বেশির ভাগ ক্রিকেটারই টি-টোয়েন্টি দলে রয়েছেন। ইনজুরি কাটিয়ে দলে ফিরেছেন নিয়মিত অধিনায়ক লিটন দাস। তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ দল টি-টোয়েন্টিতে বেশ উন্নতি করছে। টি-টোয়েন্টি মেজাজের ক্রিকেটটা যেভাবে খেলতে হয়, সেই আগ্রাসী মনোভাব দেখাচ্ছে বাংলাদেশ। ব্যাটসম্যানরা আগের চেয়ে বেশি মারমুখী হচ্ছেন। বোলাররাও বিপজ্জনক হয়ে উঠছেন। সব মিলিয়ে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে যে বাংলাদেশকে দেখা যাচ্ছে, তাতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে বাংলাদেশের সিরিজ জয় প্রত্যাশা করাই যায়।

অন্যদিকে, টানা হেরে দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের। কোচ ড্যারেন সামির দল বাংলাদেশ সিরিজ দিয়ে টি-টোয়েন্টি ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করবে। কেননা, তাদের আর হারানোর কিছু নেই। কোনো রকম রিদম পেয়ে গেলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ অনেক ভয় জাগানিয়া দল হয়ে দাঁড়াতে পারে। চট্টগ্রামে সবুজ উইকেটে খেলা হবে। এই উইকেটই ওয়েস্ট ইন্ডিজকে স্বপ্ন দেখাচ্ছে। ওয়ানডে সিরিজে মিরপুরের কালো মাটির উইকেটে সুবিধা করতে পারেনি ক্যারিবীয়রাও। যদিও একটি ম্যাচ জিতেছে তারা। কিন্তু সিরিজের শেষ ম্যাচে অসহায় আত্মসমর্পণ করেছে সফরকারীরা। এবার চট্টগ্রামের সাগরিকার উইকেট তাদের স্বস্তি দিচ্ছে। এই উইকেটে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ঘুরে দাঁড়ানোর অভিন্ন লক্ষ্য নিয়েই মাঠে নামবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

এ পর্যন্ত বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ পরস্পরের বিপক্ষে ১৯টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছে। এর মধ্যে বাংলাদেশের জয় ৮টি ম্যাচে। ৯টি ম্যাচে জিতেছে উইন্ডিজ। বাকি দুটি ম্যাচের ফল হয়নি। বাংলাদেশের মাটিতে দুই দল ৬টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছে। এর মধ্যে ৪টিতে জিতেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। বাংলাদেশের জয়ের সংখ্যা ২। তবে সর্বশেষ ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ জিতেছে বাংলাদেশ। ঘরের মাঠে সবশেষ সিরিজেও জয়ের রেকর্ড বাংলাদেশের আছে। আর সবশেষ আফগানিস্তানকে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে ৩-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ করেছে লাল-সবুজের জার্সিধারীরা। এই টানা জয়ের ধারাবাহিকতা ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে ধরে রাখার মিশন তাদের। এ মিশনে কতটা সফল হবে বাংলাদেশ, সেটিই দেখার অপেক্ষা।