ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৬ নভেম্বর, ২০২৫

ক্ষোভেই পদত্যাগের সিদ্ধান্ত সালাউদ্দিনের!

মাঠে ময়দানে প্রতিবেদক
প্রকাশিত: নভেম্বর ৬, ২০২৫, ০২:১৯ এএম

ফারুক আহমেদ সভাপতি থাকাকালে ২০২৭ ওয়ানডে বিশ^কাপ পর্যন্ত বাংলাদেশ জাতীয় দলের সিনিয়র সহকারী কোচ নিয়োগ পান মোহাম্মদ সালাউদ্দিন। কিন্তু হঠাৎ করেই বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে (বিসিবি) পদত্যাগপত্র জমা দিলেন তিনি। আগামী ১১ নভেম্বর থেকে শুরু হতে যাওয়া আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্ট ও তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের পর আর জাতীয় দলের থাকছেন স্থানীয় এই কোচ। সালাউদ্দিন জানান, ‘আমি বিসিবিতে আমার পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দিয়েছি। আমি আয়ারল্যান্ড সিরিজ পর্যন্ত আছি। পদত্যাগপত্র জমা দিলেও নির্ধারিত নোটিশ পিরিয়ড পর্যন্ত কাজ করে যাব।’

হঠাৎ করেই কেন দায়িত্ব ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিলেন সালাউদ্দিন? এমন প্রশ্নের জবাবে ব্যক্তিগত কারণ বলেছেন তিনি। আসলেই কী ব্যক্তিগত কারণে জাতীয় দলের কোচিং প্যানেল থেকে নিজেকে সরিয়ে নিচ্ছেন এই কোচ? সালাউদ্দিনের কথায় ক্ষোভ আর হতাশার আভাসই পাওয়া গেল। নানা কারণে নিজের দায়িত্ব পালনের কাজটি আর উপভোগ করতে পারছেন সালাউদ্দিন। তিনি বলেন, ‘মাঠই আমার সব। যদি কোনো কারণে সেটা উপভোগ না করতে পারি, তাহলে সরে যাওয়াই ভালো। আমি আমার দায়িত্বটা আর উপভোগ করছি না।’

সম্প্রতি আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে ৩-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ হয়েছে বাংলাদেশ। এরপর ঘরের মাঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজেও ৩-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ হয়েছে টাইগাররা। এই হতাশার পেছনের গল্প হলো ব্যাটিং ব্যর্থতা। সহকারী কোচ হলেও ব্যাটিং কোচের অনুপস্থিতিতে দায়িত্ব পালন করছিলেন তিনি। তাই দলের ব্যাটিং ব্যর্থতার দায়ভারটা তার কাঁধেই পড়েছে। যদিও অফিসিয়ালি বিশেষজ্ঞ ব্যাটিং কোচ নন সালাউদ্দিন। এ ছাড়া আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজে নুরুল হাসান সোহানের পরিবর্তে কিপিংয়ের দায়িত্ব পান জাকের আলী অনিক। এই দায়টাও সালাউদ্দিনকে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ওই সিরিজে সোহানই কিপিং করুক, সেটি চেয়েছিলেন সালাউদ্দিন নিজেও। প্রধান কোচ ফিল সিমন্সের সিদ্ধান্তে কিপিং করেছিলেন জাকের। এ ছাড়া জানা গেছে, বিসিবি ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান নাজমুল আবেদীন ফাহিমের সঙ্গেও দূরত্ব তৈরি হয়েছে সালাউদ্দিনের। জাতীয় দলের বিষয়গুলো দেখেন ফাহিম। অথচ তার সঙ্গে সালাউদ্দিনের সুসম্পর্ক নেই। অপর দিকে, হঠাৎ করেই সাবেক অধিনায়ক মোহাম্মদ আশরাফুলকে আয়ারল্যান্ড সিরিজের জন্য জাতীয় দলের ব্যাটিং কোচ হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে বিসিবি। অনেকে মনে করছেন, বিসিবিতে আগে থেকেই অনেক অভিজ্ঞ কোচ থাকার পরও আশরাফুলকে সরাসরি জাতীয় দলের কোচিং প্যানেলে আনা ঠিক হয়নি। সব মিলে তৈরি হওয়া ক্ষোভ ও হতাশা থেকেই যে দায়িত্ব থেকে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সালাউদ্দিন, সেটি আর বলার অপেক্ষা রাখে না। সাবেক বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ দায়িত্ব দেওয়ার সময় সালাউদ্দিনের অনেক প্রশংসা করেছিলেন। বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়ে এবার জাতীয় দল ছাড়ছেন সালাউদ্দিন। জাতীয় দলের দায়িত্ব ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিলেও সালাউদ্দিনকে ঘরোয়া ক্রিকেট টুর্নামেন্টে দেখা যাবে। সামনেই বিপিএলের আসর। এ টুর্নামেন্টে হয়তো কোনো দলের প্রধান কোচের ভূমিকায় দেখা যাবে সালাউদ্দিনকে।