এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বে ভারত ও নেপালের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচ খেলার জন্য ইংল্যান্ড থেকে ঢাকায় উড়ে এসেছেন দেওয়ান হামজা চৌধুরী। এরই মধ্যে দলের সঙ্গে অনুশীলনে যোগ দিয়েছেন তিনি। অবশ্য এর বাইরেও অনেক কাজে ব্যস্ত সময় পার করতে হয়েছে লেস্টার সিটির এই মিডফিল্ডারকে। রবি আজিয়াটা পিএলসির ব্র্যান্ড অ্যাম্বসেডর হয়েছেন এই প্রবাসী ফুটবলার। গতকাল মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে আনুষ্ঠানিকভাবে হামজা চৌধুরীকে এক বছরের জন্য তাদের নতুন ব্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে রবি। এই অনুষ্ঠানে জাতীয় দল নিয়েও কথা বলেছেন হামজা। ঘরের মাঠে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে জয়ের ব্যাপারে আত্মবিশ^াসী তিনি।
হামজা চৌধুরী বাংলাদেশের জাতীয় ফুটবল দল ও ইংলিশ ক্লাব লেস্টার সিটির খেলোয়াড়। বাংলাদেশের হয়ে খেলা প্রথম ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ফুটবলারও হামজা। রাজধানীর তেজগাঁওয়ে রবির করপোরেট কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন রবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী জিয়াদ সাতারা, চিফ কমার্শিয়াল অফিসার শিহাব আহমাদ, চিফ করপোরেট ও রেগুলেটরি অফিসার শাহেদ আলম এবং নতুন শুভেচ্ছাদূত হামজা চৌধুরী। জিয়াদ সাতারা বলেন, “হামজা চৌধুরীকে শুভেচ্ছাদূত হিসেবে পেয়ে আমরা অত্যন্ত আনন্দিত। বাংলাদেশের হয়ে খেলতে হামজা চৌধুরী নিজের শিকড়ে ফিরে এসে দেশপ্রেমিক চেতনার প্রকাশ ঘটিয়েছেন। রবির ‘বিলিভ ইউ ক্যান’ প্রচারণার মূল ভাবনাও তাই।” হামজা চৌধুরী রবির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘রবির সঙ্গে কাজ করতে পেরে আমি আনন্দিত। আশা করি, বাংলাদেশের যুব সমাজকে অনুপ্রাণিত করতে পারব এবং দেশের ফুটবলের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি আরও উন্নত করতে সাহায্য করতে পারব।’
সাংবাদিকদের সঙ্গে প্রশ্ন-উত্তর পর্বে হামজা ১৮ নভেম্বর ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ প্রসঙ্গে জানান, ‘ইনশা আল্লাহ আমরা ভারতের বিপক্ষে জিতব।’ গত মার্চে বাংলাদেশের জার্সিতে অভিষেক হয় হামজার। সেই থেকে বাংলাদেশে তাকে নিয়ে বিপুল আগ্রহ তৈরি হয়েছে। হামজার খেলা দেখতে ভরে যাচ্ছে গ্যালারি। ভারত ম্যাচের সব টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে ছয় মিনিটের মধ্যে। লেস্টার সিটির ফুটবলার হিসেবে হামজা এক সপ্তাহে যে বেতন পান, তা বাংলাদেশের পটভূমিতে অকল্পনীয়। ফলে কোনো করপোরেট চুক্তি, অর্থÑ এসব তার কাছে দেশের প্রতি আবেগের চেয়ে আগে নয়। বাংলাদেশ, বাংলাদেশের মানুষের ভালোবাসাই আগেÑ এ কথা জানিয়ে হামজা বাংলাদেশকে নিয়ে নিজের অনুভূতির কথা বলেন। হামজা বলেন, ‘আমি বাংলাদেশের হয়ে কয়েক মাস হলো খেলছি। এখনো সত্যি বলতে অবাস্তব মনে হয় এই ভ্রমণটা। আমি শুধু চাই এই দেশের অংশ হয়ে গর্ব করতে এবং যেকোনোভাবে দেশকে প্রতিনিধিত্ব করতে। বিশেষ করে আমার মা-বাবার জন্য।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার বাবা এ দেশেই জন্মেছেন এবং বড় হয়েছেন। তাই তাদের মুখে সেই হাসিটা দেখতে পাওয়াই আমার আসল প্রাপ্তি। প্রত্যেক সন্তানই চায় তার বাবা-মাকে গর্বিত করতে, আর আমি মনে করি আমি ভাগ্যবান যে পুরো জাতিকেই গর্বিত করতে পারি।’ এ নিয়ে চতুর্থবার বাংলাদেশে এলেন হামজা। এখানে এসে অনেক ভালোবাসা পান জানিয়ে লেস্টারের ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার বলেন, ‘আমি যে ভালোবাসা পাই, সেটা আমি খুব ভালোভাবে লালন করি। আমি চেষ্টা করি সেই ভালোবাসা ও সমর্থনটা সবার সঙ্গে ভাগাভাগি করতে। যখনই আমি বাংলাদেশ ছাড়ি, আমার সন্তানেরা বলে, ওরা বাংলাদেশে ফিরতে চায়। ইনশাআল্লাহ, ওরা মার্চে আবার ফিরে আসবে।’

সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন