বুধবার, ১২ নভেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: নভেম্বর ১২, ২০২৫, ০২:৪৮ এএম

৬০ শতাংশ পণ্য যায় পাঁচ দেশে!

রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: নভেম্বর ১২, ২০২৫, ০২:৪৮ এএম

৬০ শতাংশ পণ্য যায় পাঁচ দেশে!

বর্তমানে বাংলাদেশে প্যাকেটজাত খাবারের বাজার ৪ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলারের, যা ২০৩০ সালে প্রায় ৬ বিলিয়নে উন্নীত হবে। রপ্তানি খাতে এই খাদ্যপণ্যের অবদান দিনে দিনে বাড়ছে। তবে এর রপ্তানির প্রায় ৬০ শতাংশের গন্তব্য বিশ্বের মাত্র পাঁচটি দেশে। পাশাপাশি মোট রপ্তানির অর্ধেকই পাঁচ ধরনের পণ্য। ফলে বাংলাদেশি খাদ্যপণ্য রপ্তানির নতুন নতুন গন্তব্য সৃষ্টি ও পণ্য বহুমুখীকরণে দুর্বলতা রয়েছে। কৃষি প্রক্রিয়াজাত শিল্পের পথিকৃৎ প্রাণ গ্রুপের উদ্যোগে আয়োজিত এক কর্মশলায় উপস্থাপিত মূল প্রবন্ধে এসব তথ্য তুলে ধরেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে ‘কৃষি ও কৃষি প্রক্রিয়াজাত শিল্প: দেশের সার্বিক উন্নয়নে গণমাধ্যমকর্মীদের দক্ষতা বৃদ্ধি’ শীর্ষক এ কর্মশালা হয়। দেশের কৃষি প্রক্রিয়াজাত শিল্পের সম্ভাবনা, চ্যালেঞ্জ ও জাতীয় উন্নয়নে এর অবদান তুলে ধরতে অনুষ্ঠানটি হয়। এতে দেশে কৃষি ও প্রক্রিয়াজাত কৃষি খাত নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকেরা উপস্থিত ছিলেন।

গোলাম মোয়াজ্জেম জানান, বাংলাদেশের কৃষি প্রক্রিয়াকরণ খাত প্রাথমিক কৃষি ও উৎপাদনের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করে। এটি জিডিপি, রপ্তানি বৈচিত্র্য ও গ্রামীণ কর্মসংস্থানে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখে। কৌশলগত গুরুত্ব সত্ত্বেও এই খাত সম্ভাবনার তুলনায় পিছিয়ে রয়েছে, বিশেষ করে মূল্য সংযোজনসহ বেশ কিছু ক্ষেত্রে।

সিপিডির গবেষণা পরিচালক বলেন, ‘রপ্তানি পণ্যের ক্ষেত্রে নতুন নতুন গন্তব্য ও বহুমুখী পণ্য উৎপাদনে আমরা পিছিয়ে রয়েছি। আমাদের পণ্যের এখনো মূল ক্রেতা ওই বাংলাদেশি প্রবাসীদের এথনিক মার্কেট। আর আমরা গতানুগতিক পণ্যের বাইরে বিশ্বের উন্নত দেশের মূল খাবারগুলো উৎপাদন করতে পারছি না। আমাদের উন্নত দেশের পণ্য উৎপাদন ও তাদের মান মেনে সেগুলো করতে হবে।’

এই বিশেষজ্ঞ সতর্ক করে দেন যে, স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণের পর কৃষি প্রক্রিয়াকরণ খাত বর্তমানে নগদ প্রণোদনা, আমদানি করা উপকরণের ওপর শুল্ক ছাড়সহ যেসব সুবিধা ভোগ করছে, তার ওপর প্রভাব পড়তে পারে। এলডিসি থেকে উত্তরণের পর এই খাতের সামর্থ্য বাড়ানোর জন্য নানা সহায়তা দিতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে সুদের হার সমন্বয়ের মাধ্যমে কম খরচে অর্থায়ন ও উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারের জন্য প্রণোদনা।

এদিকে কর্মশলায় ‘কৃষি ও কৃষি প্রক্রিয়াজাত শিল্পের বর্তমান প্রেক্ষাপট’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক কামরুজ্জামান কামাল। তিনি বলেন, ‘প্রাণ গ্রুপ শুরু থেকেই বাংলাদেশের কৃষির উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করছে। বর্তমানে আমরা যেসব খাদ্যপণ্য উৎপাদন করি, তার অধিকাংশ কাঁচামাল স্থানীয়ভাবে কৃষকদের কাছ থেকে সংগ্রহ করে থাকি এবং ১৪৮টি দেশে রপ্তানি করছি।’

এই কর্মকর্তা জানান, ফসল উৎপাদনে মাত্রাতিরিক্ত সার ও কীটনাশক ব্যবহারে অনেক ক্ষেত্রে এ দেশের খাদ্যপণ্য অনিরাপদ হচ্ছে, যেটা পণ্য প্রক্রিয়াজাতকারীদের জন্য ক্ষতির কারণ। আবার অনিরাপদ ফসলের জন্য অনেক কিছু দেশে উৎপাদিত হওয়া সত্ত্বেও আমদানি করতে হচ্ছে। এ দেশে গ্যাপ (গুড এগ্রিকালচার প্রাকটিস) নেই, যে কারণে ফসল উৎপাদনের সময় ক্ষতিকারক পদার্থ মিশে যাচ্ছে, যা প্রক্রিয়াকরণের সময় আলাদা করা যাচ্ছে না।

কামরুজ্জামান কামাল বলেন, ‘আবার আমাদের সংরক্ষণ ও সরবরাহ পর্যায়ে দুর্বলতা রয়েছে। দেশের অনেক খাদ্যপণ্য এসব পর্যায়ে নষ্ট হচ্ছে, অনিরাপদ হচ্ছে। অন্যদিকে দেশে খাদ্যমান পরীক্ষার জন্য ভালো টেস্টিং ল্যাব নেই। আমরা বারবার সরকারকে একটি বিশ্বমানের ল্যাব প্রতিষ্ঠার জন্য বলেছি, সেটা হয়নি। এ দেশে রেগুলেটরি ও পলিসি সমস্যা রয়েছে। খাদ্যপণ্যের একটি ব্যবসা শুরু করতে প্রায় ৪২ সংস্থার অনুমতি নিতে হয়। এরপর ব্যবসা পরিচালনায় মাত্রারিক্ত নবায়ন ফি, লাইসেন্স ফিসহ নানা ফি দিতে হয়, যা পার্শ্ববর্তী দেশ কিংবা প্রতিযোগী যেকোনো দেশের চেয়ে বেশি।’

প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্যের গুণমান এখন আন্তর্জাতিক মান অর্জন করেছে। দেশের গণমাধ্যম এই ইতিবাচক চিত্র তুলে ধরলে দেশীয় ব্র্যান্ডের প্রতি মানুষের আস্থা আরও বাড়বে। পাশাপাশি এই খাত এগিয়ে নিতে আরও বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে। ট্যারিফ ব্যারিয়ার, শিপিং লাইন ও কনটেইনার ভাড়া বৃদ্ধি, সরকারের অপর্যাপ্ত ওয়্যারহাউস ফ্যাসিলিটি এবং বিশ্বব্যাপী ব্র্যান্ডিংয়ের দুর্বলতার কারণে বাংলাদেশি পণ্য পিছিয়ে রয়েছে।

কর্মশলায় ঢাকা ট্রিবিউনের সম্পাদক রিয়াজ আহমদ কৃষি ও কৃষি প্রক্রিয়াজাত শিল্প সমৃদ্ধকরণে গণমাধ্যমের প্রভাব তুলে ধরেন। তিনি বলেন, গণমাধ্যম শুধু সংবাদ প্রচার করে না, বরং সমাজে দৃষ্টিভঙ্গি ও নীতিনির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কৃষি ও কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাত খাতের সাফল্য, কৃষকদের গল্প, উদ্ভাবন ও বাজার সম্ভাবনা নিয়ে ধারাবাহিক ইতিবাচক প্রচারণা দেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে সাহায্য করবে।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!