নারী কাবাডি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে উঠে পদক জয় নিশ্চিত করল বাংলাদেশ। গতকাল শনিবার থাইল্যান্ডকে হারিয়ে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে উঠেছে স্বাগতিকেরা। টুর্নামেন্ট শুরুর আগের লক্ষ্যটাও পূরণ হয়ে গেল রূপালী, আঞ্জুয়ারা রাত্রি ও স্মৃতিদের। ২০১২ সালের প্রথম বিশ্বকাপে পঞ্চম হয়েছিল বাংলাদেশ। এবার লক্ষ্য ছিল সেই রেকর্ড ছাপিয়ে যাওয়ার। মিরপুরের শহীদ সোহরাওয়ার্দী ইনডোর স্টেডিয়ামে থাইল্যান্ডকে ৪০-৩১ পয়েন্টে হারায় বাংলাদেশ। এই জয়ের সুবাদে ৬ পয়েন্ট নিয়ে ‘এ’ গ্রুপ থেকে সেরা চার নিশ্চিত করলেন স্মৃতি-রূপালীরা। এর আগে উগান্ডা ও জার্মানিকে উড়িয়ে দেওয়ার পর গ্রুপ পর্বে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে ভারতের কাছে হেরেছিল বাংলাদেশ। এরই মধ্যে টুর্নামেন্টের সেমিফাইনাল খেলা নিশ্চিত করেছে ২০১২ বিশ^কাপের চ্যাম্পিয়ন ভারত ও রানার্সআপ ইরান।
থাইল্যান্ডের বিপক্ষে খেলার প্রথমার্ধে তুমুল লড়াই হলো দুই দলের মধ্যে। থাইল্যান্ডের বিপক্ষে ২ পয়েন্টে এগিয়ে বিরতিতে গেল বাংলাদেশ। দ্বিতীয়ার্ধে থাইল্যান্ড মরিয়া চেষ্টা করেও উজ্জীবিত বৃষ্টি-শ্রাবণীদের আটকাতে পারল না। দারুণ জয়ে নারী কাবাডি বিশ^কাপের সেমিফাইনালে উঠল স্বাগতিকেরা। শুরু থেকেই দুই দল জমিয়ে তোলে লড়াই। চার মিনিটের মধ্যে থাইল্যান্ড এগিয়ে যায় ৫-২ পয়েন্টে। দ্রুত পাল্লা দিয়ে ৭-৭ সমতায় ফেরে বাংলাদেশ। নবম মিনিটে রেইড দিতে গিয়ে চোট পান শ্রাবণী মল্লিক। স্ট্রেচারে করে মাঠ ছাড়েন তিনি। প্রথমার্ধের শেষ দিকে বৃষ্টি বিশ্বাস সফল রেইডে দুই পয়েন্ট এনে দেন। বাংলাদেশ এগিয়ে যায় ১৩-১১ পয়েন্টে। একটু পর বাজে বিরতির বাঁশি। ১৪-১২ ব্যবধানে এগিয়ে থেকে প্রথমার্ধ শেষ করে স্বাগতিকেরা। চিকিৎসা নিয়ে দ্বিতীয়ার্ধে ফেরেন শ্রাবণী। এরপর তিন মিনিটের মধ্যে থাইল্যান্ডকে অল আউট করে বাংলাদেশ এগিয়ে যায় ১৮-১৩ ব্যবধানে। এই অর্ধের নবম মিনিটে থাইল্যান্ডকে আবারও অলআউট করে ৩১-১৮ পয়েন্টে এগিয়ে যায় দল। জাগে জয়ের সম্ভাবনাও। শেষ পর্যন্ত ৯ পয়েন্টের ব্যবধানে ম্যাচ জিতে নেয় বাংলাদেশ। ম্যাচ শেষের বাঁশি বাজতেই লক্ষ্যপূরণের উল্লাসে মাতে পুরো দল। লাল-সবুজের পতাকা উড়িয়ে, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ম্যাটেই এক দফা উদযাপন সেরে নেন রূপালী, সুচরিতারা। ম্যাচ জয়ের উচ্ছ্বাস নিয়ে বৃষ্টি বিশ্বাস বললেন, থাইল্যান্ডকে হারানোর পরিকল্পনা তারা করে রেখেছিলেন গ্রুপিং হওয়ার সময়ই। পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পেরে খুশি তিনি। বৃষ্টি বিশ^াস বলেন, ‘অনেক ভালো লাগছে।
যখন গ্রুপ নিশ্চিত হয়েছিল, তখন থেকেই আমাদের লক্ষ্য ছিল থাইল্যান্ড ম্যাচ। আমাদের লক্ষ্য ছিল যেকোনোভাবেই সর্বোচ্চটুক দিয়ে আমরা থাইল্যান্ডকে হারাব। আমরা এটা পেরেছি। আমাদের কোচ, আমাদের সেক্রেটারি, আমাদের টিমের সবাই এক ছিলাম ছিল বিধায় আমরা জিততে পারছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘এখন আমাদের লক্ষ্য ফাইনাল খেলা। চাইনিজ তাইপের বিপক্ষে সেমিফাইনাল খেলতে হবে। আমরা হাল ছাড়ব না। আমরা আমাদের সর্বোচ্চটুকু দিয়ে খেলব।’

