সাদা পাথরের রাজ্য, তৃষ্ণার্ত ঝরনার জল গড়িয়ে পড়ছে পাথরের বুকে। যেখানে জলকেলিতে মগ্ন পর্যটকেরা। ঘুরতে কে না চায়; ভ্রমণের কথা ভাবনায় এলেই একটা গভীর সুখ অনুভব হয়। আর সেই ভ্রমণ যদি হয় আকাশ, ঝর্ণা, পাথরের দেশে, তাহলে তো কথাই নেই।
ওপারে ভারতের মেঘালয় রাজ্য, উঁচু পাহাড়। এপারে বাংলাদেশের সাদা পাথরের রাজ্য। উঁচু পাহাড় দেখে আনন্দ যেন থামছেই না, পাঁচ একর জমিতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে এই সাদা পাথর। ছোট, মাঝারি, বড় আকৃতির পাথর। সাদার মধ্যে নিকষকালো পাথরও আছে। কোনোটি খয়েরি রঙের। যেন এলাকাজুড়ে পাথরের বিছানা।
পাথর মাড়িয়ে ঝরনার আবাহন। কোথাও হাঁটু সমান, আবার কোথাও কোমর পানি। কোথাও তারও অনেক বেশি। তবে শীত মৌসুমে পানি কম। পাথরের ওপর দিয়ে জল গড়িয়ে পড়ছে তৃষ্ণার্ত ধলাইয়ের মুখে।
কোথাও কোথাও পানির রং খয়েরি, আবার পাশেই পাহাড় থেকে ঝরনার পানিতে চেহারা দেখা যায়। শীতেও পর্যটকদের ওই ঝরনার পানিতে নেমে কেউ গোসল করছেন আবার কেউ কোমর সমান নেমে ছবি তুলছেন। জীবনকে খানিকটা চাঙা করতে অনেকেই সাঁতার কাটছেন ধলাইয়ের শীতল জলরাশিতে। এ এক অসাধারণ
রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা!
নদের পানিতে নামতে হলে আপনার জিনিসপত্র রাখার জন্য এখানে সুব্যবস্থা রয়েছে। সামান্য খরচে জিনিসপত্র নিরাপদে রেখে নিতে পারেন এক রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা।
পাহাড়-পাথর-জল, পাহাড়ের ওপরে কালো আর সাদা মেঘ, নিচে সাদা পাথর আর ঝরনার পানি মাঝে মাঝে রূপ পরিবর্তন করে একসঙ্গে এমন প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের দেখা পাওয়া গেছে শুধু সিলেটের বিছনাকান্দিতে। সেখানে যেন পাথরের সুবিশাল এক ‘বিছানা’ (শয্যা) পাতানো।
এ মৌসুমের প্রথম পাহাড়ি ঢলের সুবাদে ঠিক সে রকম আরেক ‘বিছানা’ তৈরি হয়েছে। তবে এখানে এসে কিছুটা সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। কারণ সাদা পাথরের বিছানা এলোমেলো হওয়াতে সতর্কতার সঙ্গে হাঁটাচলা করতে হবে, না হয় ঘটতে পারে দুর্ঘটনা।
‘সাদা পাথর’ বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তবর্তী কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জ পাথর কোয়ারির পাশের একটি এলাকা। সীমান্তের শূন্য রেখার কাছে অবস্থান। এলাকাটি ‘সাদা পাথর’ পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে পরিচিতি।
যেভাবে যাবেন:
সড়ক পথ : সিলেট শহরের আম্বরখানা থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় ভোলাগঞ্জ বাজার। ভাড়া জনপ্রতি ১৬০-২০০ টাকা। চাইলে লেগুনা কিংবা অন্য অন্যান্য গাড়ি ভাড়া করেও যাওয়া যায়। ভোলাগঞ্জ বাজারের ফেরিঘাট থেকে নৌকা ভাড়া করতে হবে। ভাড়া যাওয়া-আসা মিলিয়ে ৮০০-১০০০ টাকা।
নৌপথ : সিলেট শহর থেকে বাদাঘাট হয়ে উমাইরগাঁও। সেখান থেকে সরাসরি ভোলাগঞ্জের নৌকা ভাড়া করা যায়। রিজার্ভ ভাড়া ২৫০০-২৮০০ টাকা। জনপ্রতি ভাড়া ১০০ টাকা করে। ১১২/১৫ জন হলেই ছেড়ে দেয় নৌকা।