শুক্রবার, ০২ মে, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রাব্বি আহমেদ, মেহেরপুর

প্রকাশিত: অক্টোবর ২০, ২০২৪, ০৪:৩৫ পিএম

ঋতু পরিবর্তন

মেহেরপুরে বেড়েছে রোগীর সংখ্যা

রাব্বি আহমেদ, মেহেরপুর

প্রকাশিত: অক্টোবর ২০, ২০২৪, ০৪:৩৫ পিএম

মেহেরপুরে বেড়েছে রোগীর সংখ্যা

ছবি: রুপালী বাংলাদেশ

মেহেরপুরে ঋতু পরিবর্তন এর সাথে সাথে বেড়েছে বিভিন্ন রোগের সংখ্যা। দিনের বেলায় প্রখর রোদের তাপ। রাতের শেষে আবহাওয়া হালকা শীতের শিরশিরানি। ফলে এই আবহাওয়া পরিবর্তনের সাথে সাথে শিশুসহ সব বয়সী মানুষ ঠান্ডা, কাশি, নিউমোনিয়া সহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। প্রতিদিন এই অনেকেই চিকিৎসা নিতে আসছেন হাসপাতাল, বিভিন্ন ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে।  বিষয়টি স্বীকার করে চিকিৎসকরা চিকিৎসা গ্রহণের পাশাপাশি সাবধানতা অবলম্বনের পরামর্শ দেন।

উপজেলার তিনটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদিন সাড়ে ৫ হাজার থেকে ৬ হাজার মানুষ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও ও বিভিন্ন হাসপাতাল গুলোতে চিকিৎসা নিয়ে থাকেন।  নারী নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়া, সর্দি-জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি। আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে কখনো ঠান্ডা কখনো গরম। দিনে গরমের কারণে সমস্যা আর রাতে ঘুমানোর সময় ঘরে বৈদ্যুতিক পাখা চালানোর কারণে ঠান্ডা লেগে শরীরে তাপমাত্রার হেরফের হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে অসুস্থতা ও জ্বরের স্বাভাবিক কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর বাইরের বিভিন্ন খাবার ও পানি খাওয়ায় ডায়রিয়া ও পানিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটছে। অসুস্থদের মধ্যে শিশু ও বয়স্কদের সংখ্যা বেশি।

সরেজমিনে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে দেখা যায়, আউটডোরে রোগীদের দীর্ঘ সারি। টিকিট রেজিস্টারে দেখা গেছে, প্রতিদিন গড়ে দু’হাজার রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন।  মুজিবনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেটিতে  প্রতিদিন ৫ শত থেকে ৭ শত রোগি চিকিৎসা নিচ্ছেন। মেহেরপুর ২৫০ বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে প্রতিদিন ৩ হাজার থেকে সাড়ে ৩ হাজার রোগি চিকিৎসা নিচ্ছে। পা ফেলার জায়গা নেই। মেঝে ও সিঁড়িতেও রোগীরা ভর্তি রয়েছেন। চিকিৎসা সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসক ও নার্স। শিশুদের কান্নায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবেশ ভারী হয়ে উঠেছে। রোগীদের অধিকাংশই জ্বর, সর্দিকাশি, শ্বাসকষ্ট ও ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত। আর শিশুরা নিউমোনিয়াতে আক্রান্ত।

বামন্দীর আমেনা খাতুন দৈনিক রূপালী বাংলাদেশকে জানান, তিনি তার ছেলে বাপ্পি (০২) নিয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আছেন তিন দিন। ছেলে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত। প্রথমে হালকা জ্বর হওয়ায় স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা নেন। পরে রোগীর অবস্থা গুরুতর হওয়ায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। পরীক্ষা করে ধরা পড়ে নিউমোনিয়াতে আক্রান্ত। শিশিরপাড়া গ্রামের গৃহবধূ সালমা  তার মেয়ে ছয় মাস বয়সি আপিয়াকে নিয়ে ভর্তি আছেন ৭ দিন। আরও ৫ দিন থাকতে হবে বলে পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসক। এছাড়াও রোগী আরাফাত জানান, তিনি জ্বর ও ডায়রিয়াতে আক্রান্ত হয়ে দু’দিন ভর্তি রয়েছেন।

মুজিবনগর উপজেলার রামনগর গ্রামের গৃহবধূ আয়শা বেগম দৈনিক রূপালী বাংলাদেশকে জানান, তিনদিন আগে তার তিন মাসের নবজাতক সন্তানকে এই হাসপাতালে ভর্তি করেন। গত এক সপ্তাহ থেকে শিশুটির ঠান্ডা লাগায় শ্বাস নিতে পারছিল না। স্থানীয় চিকিৎসক দেখিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষায় তার নিউমোনিয়া ধরা পড়ায় মেহেরপুর ২৫০ শষ্য বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে আনা হয়েছে।

৬৫ বছর বয়সী রোগী আব্দুল আলীম দৈনিক রূপালী বাংলাদেশকে জানান ‍‍`গত দুদিন ধরে ঠান্ডা-জ্বর ও কাশি নিয়ে মেহেরপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের পুরুষ ওয়ার্ডের, ১ বেডে ভর্তি আছি। শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রাখার জন্য চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে, খাবার দেওয়া হচ্ছে নাকে নল দিয়ে। সঙ্গে চলছে ইনজেকশন ও স্যালাইন।‍‍`

গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক এম কে রেজা দৈনিক রূপালী বাংলাদেশকে জানান, বর্তমান আবহাওয়ার কারণে জ্বর, নিউমোনিয়া, সর্দি, কাশি আর ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীরা চিকিৎসা নিতে আসছেন। অনেকেই আউটডোরে পরামর্শ নিয়ে বাড়ি ফিরছেন। আর যে রোগীর অবস্থা একটু সংকটাপন্ন তাকে ভর্তি রাখা হচ্ছে। রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কোনো ওষুধ সংকট নেই বলেও জানান এই চিকিৎসক।

মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের সিভিল সার্জন মহিউদ্দিন আহমেদ দৈনিক রূপালি বাংলাদেশকে জানান জানান, আবহাওয়ার পালা বদলে বিভিন্ন রোগজীবাণুও সক্রিয় হয়ে ওঠে। শিশু ও বয়স্কদের রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা কম থাকায় তাদের শরীরে পরিবর্তন বিশেষ ছাপ ফেলে। এক আবহাওয়া থেকে অন্য আবহাওয়ায় অভ্যাস হতে আমাদের সামান্য সময় লাগে। যতক্ষণ না আমাদের শরীর সেই পরিবর্তন মানিয়ে নিতে পারে না ততক্ষণ শরীরে তার নানা প্রভাব পড়ে। একবার অভ্যস্ত হয়ে গেলেই কিন্তু আর সমস্যা থাকে না। সেক্ষেত্রে সবাইকে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।
 

আরবি/জেআই

Link copied!