জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে সাম্প্রতিক এক ভয়াবহ হামলায় ২৬ জন নিহত হয়েছেন। পর্যটকদের লক্ষ্য করে চালানো সেই হামলার পর থেকেই ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক আবার উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। টানা নবম দিনের মতো পাকিস্তান-ভারত সীমান্তে দুই দেশের মধ্যে গোলাগুলি হয়েছে। এমন উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যেই, এ হামলাকে ঘিরে সামনে এসেছে এক চাঞ্চল্যকর তথ্য।
ভারতীয় গণমাধ্যম দ্য হিন্দুস্তান টাইমসের তথ্যমতে, পেহেলগামে হামলার আগেই এ সম্ভাব্য হামলার বার্তা পৌঁছেছিল স্থানীয় নিরাপত্তা বাহিনীর কাছে। ভারতের গোয়েন্দা ব্যুরো (আইবি) এবং অন্যান্য সংস্থা স্থানীয় কর্মকর্তাদের এই সতর্কবার্তা দিয়েছিল।
তবে সেই গোয়েন্দা বার্তায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নির্ধারিত সফরের সময়কে ঘিরে হামলার স্থান হিসেবে উল্লেখ ছিল শ্রীনগরের আশপাশের এলাকা। ১৯ এপ্রিলের সেই সফর বাতিল হলেও, চারদিন পরই ২২ এপ্রিল হামলা হয় ৯০ কিলোমিটার দূরের পহেলগামে। যে হামলায় প্রাণ হারান ২৬ জন।
এই গোয়েন্দা ত্রুটির দায়ভার ঘিরে প্রশ্নের মুখে স্থানীয় প্রশাসন। যদিও পুলিশ ও সেনাবাহিনী আগাম সতর্ক ছিল, তবে গোয়েন্দা প্রতিবেদনে স্পষ্টভাবে পেহেলগামের নাম ছিল না।
প্রতিবেদনে জানানো হয়, হামলার পর থেকেই জঙ্গিরা স্থানীয় এলাকায় লুকিয়ে রয়েছে বলে আশঙ্কা করছে স্থানীয় নিরাপত্তা বাহিনী।
গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর মতে, হামলার সময় দুটি বিদেশি ও দুটি স্থানীয় সন্ত্রাসীগোষ্ঠী জড়িত ছিল। স্থানীয় গোষ্ঠী দুটি পর্যটকদের একপাশে জড়ো করে, এরপর গুলি ছোড়ে বিদেশি সদস্যরা। বৈসারান উপত্যকায় একটি মাত্র প্রবেশপথ ও টিকিটিং ব্যবস্থা থাকায় কেউ পালাতে পারেননি বলে দুঃখপ্রকাশ করেছেন এক কর্মকর্তা।
এদিকে, পেহেলগামে হামলার জন্য নয়াদিল্লি পরোক্ষভাবে ইসলামাবাদকে দায়ী করে বেশকিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে সিন্ধু পানিচুক্তি স্থগিত, পাকিস্তানিদের ভিসা বাতিল করা এবং ওয়াঘা-আটারি সীমান্ত ক্রসিং বন্ধ করা। এ ঘটনার পর পাল্টা পদক্ষেপ নিয়েছে ইসলামাবাদও।
এমন পরিস্থিতির মধ্যেই পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ হুমকি দিয়েছেন, সিন্ধু নদের চুক্তি ভঙ্গ করে ভারত যদি কোনো কাঠামো নির্মাণ করে, তাহলে তা গুঁড়িয়ে দেবে ইসলামাবাদ। তিনি নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে নাটক মঞ্চস্থ করার অভিযোগ এনে কড়া ভাষায় নিন্দা জানিয়েছেন।