ঢাকা শনিবার, ১২ জুলাই, ২০২৫

মারেস্কার সামনে ইতিহাস গড়ার হাতছানি

স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশিত: জুলাই ১২, ২০২৫, ০২:৫৬ পিএম
চেলসির প্রধান কোচ এনজো মারেস্কা। ছবি- সংগৃহীত

ফুটবল কখনো নিষ্ঠুর হতে পারে—আবার কখনো ইতিহাস গড়ার মঞ্চও। এবার সেই সুযোগ পেয়েছেন চেলসির প্রধান কোচ এনজো মারেস্কা।

ঘরোয়া মৌসুমে নানা সমালোচনার মুখে থাকা এই ইতালিয়ান কোচের নেতৃত্বে চেলসি এখন ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের ফাইনালে মুখোমুখি হবে বর্তমান ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়ন প্যারিস সেইন্ট-জার্মেইনের (পিএসজি) বিরুদ্ধে।

মাত্র এক মৌসুম আগেও মারেস্কার ফুটবল স্টাইলকে নিয়ে ছিল অস্বস্তি ও হতাশা। ‘মারেস্কা বল’ মনে হতো জটিল ও খেলার সৌন্দর্যহীন এক পন্থা। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তন এসেছে।

ক্লাব বিশ্বকাপে চেলসির পারফরম্যান্সে দেখা গেছে গতি, আত্মবিশ্বাস। একমাত্র ফ্ল্যামেঙ্গোর বিপক্ষে ছয় মিনিটের ছন্দপতন ছাড়া পুরো টুর্নামেন্টে ছিল চেলসির আধিপত্য।

তবে এই পথচলায় সবচেয়ে আলোচনার জন্ম দিয়েছেন নতুন সাইনিং জোয়াও পেদ্রো। ৬০ মিলিয়ন পাউন্ডের প্রশ্নবিদ্ধ বিনিয়োগকে যৌক্তিক প্রমাণ করেছেন মাত্র একটি ম্যাচেই।

নিজ জন্মস্থান ফ্লুমিনেন্সের বিপক্ষে নিউ জার্সির মেটলাইফ স্টেডিয়ামে জোড়া গোল করে ফাইনালে চেলসির জায়গা নিশ্চিত করেন তিনি। সেই সঙ্গে ক্লাবের ঘরে নিয়ে আসেন বাড়তি ২৩.৭ মিলিয়ন পাউন্ড পুরস্কারও।

চেলসির সাম্প্রতিক দলবদলে এসেছে গতি ও গতিশীলতা। তবে চেলসির জন্য সামনে অপেক্ষা করছে এক ভয়ংকর প্রতিপক্ষ—পিএসজি।

লুইস এনরিকে’র অধীনে নিজেদের দুর্বলতা দূর করে পিএসজি এখন দুর্দান্ত। আট-বারের ব্যালন ডি’অর জয়ী লিওনেল মেসির ইন্টার মিয়ামিকে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে পা রাখে পিএসজি।

এরপর বায়ার্ন মিউনিখ ও রিয়াল মাদ্রিদের মতো জায়ান্টদের ধরাশায়ী করে আসে ফাইনালে।

বিশেষ করে রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে ৪-০ গোলের ঐতিহাসিক জয়ে স্পষ্ট হয়, এই পিএসজিকে থামানো প্রায় অসম্ভব। দেজিরে দুয়ে ও নতুন রূপে ফেরা উসমান ডেম্বেলের দুর্দান্ত ছন্দে পার্ক দেস প্রিন্সেস ছাড়িয়ে এখন তারা বিশ্বসেরার পথে।

চেলসি জানে, এই ফাইনালে তাদের কেবল পারফরম্যান্স নয়—প্রয়োজন ভাগ্য, সাহস ও দৃঢ় মানসিকতা। বাম-ডান উইংয়ে মালো গুস্তো ও মার্ক কুকুরেলা’র সামনে থাকবেন দুয়ে ও কভারাতস্কেলিয়া’র মতো ফর্মে থাকা প্রতিপক্ষ।

একপাশে যেখানে পিএসজি যেন ‘অপরাজেয়’, সেখানে চেলসি এখনো গঠন প্রক্রিয়ায় থাকা একটি দল।

কিন্তু ফুটবলে শেষ শব্দ বলে কিছু নেই। টুর্নামেন্টের ইতিহাসে অপ্রত্যাশিত জয়ের গল্প নতুন নয়। ফাইনালে জয় মারেস্কার জন্য হতে পারে এক নবযাত্রার সূচনা। বিপরীতে, পরাজয় হয়ে দাঁড়াতে পারে মনোবল ভেঙে যাওয়ার ‘ট্রিগার’।