হবিগঞ্জের নবীগঞ্জে জনতার বাজার পশুর হাট অপসারণে জেলা প্রশাসনের নির্দেশনা উপেক্ষা করে অবৈধভাবে পশুর হাট বসিয়েই যাচ্ছে বাজার পরিচালনা কমিটি। পশুর হাটের কারণে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে সৃষ্টি হয় যানজটের।
বাজার পরিচালনা কমিটির এহেন কাণ্ডে তাদের খুঁটির জোর নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। এ ঘটনায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। জনতার বাজার পরিচালনা কমিটি অবৈধভাবে পশুর হাট চালিয়ে গেলেও প্রশাসন কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় সর্বত্র চলছে নানা সমালোচনা। তবে জেলা প্রশাসকের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।
শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) তৃতীয়বারের মতো সারাদিন ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ঘেঁষা নবীগঞ্জ উপজেলার গজনাইপুর ইউনিয়নের অবৈধ জনতার বাজার পশুর হাটে গরু-ছাগল বেচাকেনা হয়।
জানা যায়- মামলা সংক্রান্ত জটিলতায় ইজারা দিতে না পারা জনতার বাজারে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আদায় করা হতো হাসিল। রশিদের মাধ্যমে ওঠা টাকা জমা হতো সরকারি কোষাগারে। সিলেটের বৃহত্তম পশুর হাট নবীগঞ্জ উপজেলার দিনারপুরের জনতার বাজারে প্রতি বছর কোটি টাকার গরু-ছাগল বিক্রি হয়। তবে নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে রশিদ ছাড়াও হাসিল আদায়ের অভিযোগ দীর্ঘদিনের।
গত ৭ জানুয়ারি হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক ড. মো. ফরিদুর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জনতার বাজার পশুর হাট অপসারণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশনা প্রদান করেন।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়- অবৈধভাবে স্থাপিত জনতার বাজার পশুর হাট জনসাধারণের চলাচলের সুবিধার্থে ৩১ জানুয়ারির মধ্যে অপসারণ করার জন্য এবং ওই স্থানে পুনরায় বাজার স্থাপন করা হলে মহাসড়ক আইন, ২০২১ অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে মর্মে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তির বিলবোর্ড-সাইনবোর্ড সাটানোর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলা হয়। এরপর জনতার বাজার অপসারণে জেলা প্রশাসনের নিদের্শনার কথা উল্লেখ করে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তির সাইনবোর্ড সাটানো হয়।
সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়- কোনো ব্যক্তি সরকারের অনুমতি ছাড়া কোনো হাট পরিচালনা করলে বা অবৈধভাবে হাট পরিচালনায় সহযোগিতা করলে অথবা মহাসড়কে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করলে হাট-বাজার আইন ২০২৩ ও মহাসড়ক আইন ২০২১ অনুসারে দণ্ডনীয় অপরাধ হবে। আইন অমান্যকারীকে সংশ্লিষ্ট আইন মোতাবেক কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ড প্রদান করা হবে। গত (২৮ জানুয়ারি) মঙ্গলবার দিবাগত রাতে জনতার বাজার পশুরহাট অপসারণে প্রশাসন কর্তৃক সাটানো সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তির সাইনবোর্ড ছিঁড়ে ফেলে কে বা কারা।
শনিবার সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়- জনতার বাজার পশুর হাটে প্রায় ৫ হাজার গরু ছাগল নিয়ে আসেন বিক্রেতারা। হাটকে কেন্দ্র করে সিলেট বিভাগের বিভিন্ন উপজেলা থেকে বাজারে আসেন ক্রেতারা। বাজারের একটি অংশে জনতার বাজার পরিচালনা কমিটির লোকজনকে অবস্থান করতে দেখা যায়।
ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে আলাপকালে জানা যায়, শনিবার বাজারে প্রায় ৩ শতাধিক গরু-ছাগল ক্রয়-বিক্রয় হয়েছে। হাটের কারণে গরু নিয়ে আসা গাড়ির ও মানুষের ভিড়ে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।
চুনারুঘাট থেকে বাজারে আসা আছকির মিয়া বলেন, জনতার বাজারে গরু কিনতে এসেছিলাম, রশিদ না দেওয়ার কারণে গরু ক্রয় করিনি।
মৌলভীবাজার সদর উপজেলার আথানগিরি এলাকার গরু বিক্রেতা কদ্দুছ মিয়া বলেন, বাড়িতে দীর্ঘদিন ধরে ৩টি গরু লালন-পালন করি, বাজারে নিয়ে এসেছিলাম গরু বিক্রি করার জন্য, ২টি বিক্রি করেছি, ১টি গরু দাম-ধর হলেও রশিদ না দিতে পারার কারণে বিক্রি করতে পারিনি।
এ প্রসঙ্গে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রুহুল আমিন বলেন, জনতার বাজার পশুর হাটে আমাদের পক্ষ থেকে কোন ধরণের হাসিল আদায় করা হয় না, হাসিল আদায় না হলে আস্তে-আস্তে বাজার অপসারণ হয়ে যাবে।
তিনি বলেন- গত (৮ ফেব্রুয়ারি) জনতার বাজার পশুরহাট পরিচালনা কমিটি টাকার বিনিময় যদি পশু ক্রয়-বিক্রয়ের প্রত্যয়ণপত্র দিয়ে থাকে তাহলে জেলা প্রশাসক মহোদয়ের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 
                             
                                    



 সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন 
                                     
                                     
                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                             
       -20251031160223.webp) 
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
       -20251025002118.webp) 
        
        
        
        
        
        
       
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন