শুরু হয়েছে পবিত্র মাহে রমজান। এই মাসকে ঘিরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ওপর দেওয়া হয় বিভিন্ন ছাড়। তবে বাংলাদেশে সাধারণ মানুষকে এক প্রকার জিম্মি করে নিত্যপণ্যের দাম বাড়িয়ে দেন ব্যবসায়ীরা। তবে এবার রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামে কিছুটা ভিন্নতা দেখা গেছে। গত বছর রমজানের দামেই মিলছে বিভিন্ন পণ্য।
বিশেষ করে ইফতারির প্রচলিত পণ্যগুলোর দাম আগের বছরের মতোই। দুয়েকটার দাম কমেছে। তবে মাত্রাতিরিক্ত বেড়েছে লেবুর দাম। ফলে ইফতারিতে কিছুটা স্বস্তি মিললেও লেবুর শরবতে গলা ভেজাতে কষ্ট হয়ে যাবে অনেকের।
গতকাল সোমবার শ্রীমঙ্গল শহরের নতুন বাজার পুরান, বাজারসহ বেশকিছু বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়। শেষ সময়ে রোজার বাজার করতে মানুষের ভিড়। তারা ইফতার এবং সেহরির জন্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনছেন।
ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এবার ইফতার পণ্যের দাম না বাড়ায় কিছুটা স্বস্তিতে আছেন। তবে লেবুর দাম নিয়ে হতাশ সবাই। মাত্র তিনদিনের ব্যবধানে দাম দুই থেকে আড়াইগুণ বেড়ে যাওয়ায় অনেকে ক্ষোভও ঝেরেছেন।
শহরের ক্রেতা রহিম শরিফ সুমন রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, দুদিন আগেও লেবু কিনেছি ৪০ টাকা হালি দরে। এসে দেখি সেই লেবু ১২০ টাকা হালি। আবার কোনো দোকানে ১০০ টাকা। দুদিনে কী এমন হলো যে, লেবুর দাম এত বেড়ে গেল? এবার তো শরবতই তেমন খেতে পারব না। মানুষকে কষ্ট দিতেই লেবু নিয়ে এমন কারসাজি।
বাজার থেকে ইফতারির পণ্য কিনে ফিরছিলেন রফিক নামে একজন। তিনি জানান, অনেকটির দাম গত রোজার মতোই রয়েছে। তবে আরও কম হওয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি। এদিকে ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, বাজারে চাহিদা অনুযায়ী সরবারহ কম।
শ্রীমঙ্গলের জসিম উদ্দিন বলেন, কিছুদিন আগেও লেবুর এত চাহিদা ছিল না। রোজার কারণে চাহিদা কয়েকগুণ বেড়ে গেছে। কিন্তু সে অনুযায়ী সরবরাহ পাচ্ছি না। ফলে বাধ্য হয়েই দাম বাড়াতে হয়েছে। আমরাও নিরুপায়। আগামী ১০-১৫ দিনের মধ্যে লেবুর দাম আগের জায়গায় যাবে বলে আশা করছি।
বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি ছোলা বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৩০ টাকা কেজিতে, যা গত বছর ছিল ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা। ক্যাঙ্গারু মসুর ডাল গত বছরের তুলনায় ১০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়, বেসন ২০ টাকা কমে মানভেদে ১০০ থেকে ১১০ টাকায়, চিনি প্রতি কেজি ১২৫ থেকে ১৩০ টাকায়, আলু প্রতি কেজি ২০ টাকায়, মুড়ি ৮০ টাকা কেজি এবং পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪০থেকে ৪৫ টাকা কেজি দরে। বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা কেজিতে।
ইফতারির অন্যতম অনুষঙ্গ খেজুরের দামও এবার তুলনামূলক কম। শুল্ক ছাড়ের কারণে গত বছরের তুলনায় এবার আমদানি বেড়েছে। ফলে বাজারে খেজুরের পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে।
জাত ও মানভেদে প্রতি কেজিতে দাম কমেছে ৪০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত। আজওয়া খেজুর মানভেদে প্রতি কেজি ৬৫০ থেকে ৮৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মিশর থেকে আমদানি করা প্রতি কেজি মেডজুল খেজুর বিক্রি হচ্ছে ৯০০ থেকে ৯৭০ টাকায়। অন্যান্য খেজুর মানভেদে ২০০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
ফল ব্যবসায়ী শাকিল ব্যাপারী বলেন, বাজারে পর্যাপ্ত খেজুর রয়েছে। এজন্য দামও কমে মিলছে। অনেক খেজুরের দাম আগের বছরের তুলনায় ৫০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত কমেছে। দাম কম থাকলে বিক্রি বেশি হয়। আর দাম বেশি হলে মানুষ কিনতে পারে না। আমাদের ব্যবসাও ভালো হয় না।