চলন্ত ট্রেন থেকে এক ব্যক্তিকে টেনেহিঁচড়ে ফেলে দেওয়ার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। এ নিয়ে আলোড়ন তৈরি হয়েছে। অনেকেই জানাচ্ছেন ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওই ব্যাক্তি পেশায় একজন অটোরিকশা চালক ছিলেন। তবে তিনি দুই বছর আগে দূতাবাস এবং এজেন্সির মাধ্যমে বিভিন্ন দেশে লোক পাঠানোর কাজ শুরু করেন।
এদিকে ওই ঘটনার ২০ দিন আগে বগুড়ার আদমদিঘী উপজেলার তালশান গ্রামের মোহাম্মদ হেলালের ছেলে সজীব হোসেনকে সাড়ে ৪ লাখ টাকার বিনিময়ে সৌদি আরবে পাঠিয়েছেন। সৌদি আরবে গিয়ে সজীবের বৈধ কাগজপত্র পেতে দেরি হওয়ায় তার পরিবারের সদস্যরা ৭-৮ দিন আগে মতিউরের বাড়িতে গিয়ে কাগজপত্রের বিষয়ে জানতে চায়। এ নিয়ে সেখানে ঝামেলার সৃষ্টি হয়।
এরই জের ধরে বগুড়া থেকে ট্রেনে মতিউরকে একা পেয়ে সজীবের ছোট ভাই রাকিব এবং সজীবের শ্যালকরা মিলে মোবাইল চোর এবং ছিনতাইকারী আখ্যা দিয়ে তাকে ট্রেন থেকে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করে এবং তার কাছে থেকে ৫০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেন বলে অভিযোগ মতিউরের পরিবারের।
মতিউরকে চোর ও ছিনতাইকারী বলে দাবির বিষয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়াও জানিয়েছে মতিউরের পরিবার।
মতিউরের ছেলে আহসান হাবিব বলেন, ‘বাবার কাছে ব্যবসায়িক কাজের ৫০ হাজার টাকা ছিল, সেটিও তারা কেড়ে নেয়। একপর্যায়ে ট্রেনটি আদমদিঘী উপজেলার নশরৎপুর স্টেশনে এলে সেখানকার প্লাটফর্মের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে আমার বাবা ট্রেনের নিচে পড়ে যায়।’
‘ট্রেনের নিচে পড়লেও বাবা কোনোরকম প্রাণে বেঁচে যান। কিন্তু সেখানকার উৎসুক জনতা বাবাকে মোবাইল চোর ও ছিনতাইকারী ভেবে বেধড়ক মারধর করতে থাকেন।’
তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘এ ঘটনায় আদমদীঘি থানা পুলিশের কাছে অভিযোগ জানাতে গেলে তারা আমার অভিযোগ নিতে চাননি। আদমদিঘী থানার ওসি আমার সঙ্গে অনেক খারাপ ব্যবহার করেন। তারা আমাকে বলেন এটি রেলওয়ের বিষয়, এই অভিযোগ সান্তাহার রেলওয়ে থানায় গিয়ে করুন।’
মতিউরের ছেলে বলেন, ‘আদমদিঘী থানা পুলিশের কথা শুনে সান্তাহার রেলওয়ে থানায় অভিযোগ জানাতে‘ গেলে তারা বলেন, আপনার বাবা জীবিত রয়েছেন। মারা গেলে মামলা নেওয়া যেত। আমরা এখন কোথায় গিয়ে অভিযোগ করব? এ ঘটনার পর থেকে মানুষের সামনে যেতে পারছি না। আমার বাবা তো ছিনতাইকারী না। তিনি বৈধ পথে ব্যবসা করে আসছিলেন। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।’
এদিকে মতিউরের পরিবার জানিয়েছে, তিনি বেঁচে আছেন। তবে তিনি ওই ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন। তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।