কিশোরগঞ্জে ১৭ বছর পরে কলেজছাত্র হত্যা মামলায় তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত।
মঙ্গলবার (২০ মে) দুপুরে কিশোরগঞ্জ আদালতের বিচারক ফাতেমা আক্তার স্বর্ণা এ রায় দেন। এ সময় ফাঁসির মাধ্যমে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার নির্দেশ দেন তিনি।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত তিন আসামি হলেন- ভৈরবের উত্তরপাড়া গ্রামের শাকিল উদ্দিনের ছেলে মো. সুমন মিয়া (৩৯), ব্রাম্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর দৌলতদিয়া গ্রামের মো. কাইয়ুম সরকারের স্ত্রী সেলিনা বেগম (৪১) ও একই জেলার আশুগঞ্জ সোনারামপুর গ্রামের মৃত আ. খালেকের মেয়ে শোভা প্রকাশ (৩৭)।
এদের মধ্যে সেলিনা বেগম ছাড়া বাকি দুই আসামি রায় ঘোষণার পর থেকে পলাতক রয়েছেন। রায়ে আসামিদের মৃত্যৃদণ্ডের পাশাপাশি দশ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়।
হত্যার শিকার কলেজছাত্র মোহাম্মদ আলী (২২) জেলার কুলিয়ারচর উপজেলার তারাকান্দি মধ্যপাড়া এলাকার মো. সামছুদ্দিন মিয়ার ছেলে। তিনি ভৈরব হাজী আসমত কলেজে বিএসসি ১ম বর্ষের ছাত্র ছিলেন। কলেজের ছাত্রাবাসে থেকে লেখাপড়া করতেন।
কিশোরগঞ্জের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মো.জালাল উদ্দিন এই রায়ের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, কলেজছাত্র মোহাম্মদ আলীর পিতা মো. সামছুদ্দিন ২০০৮ সালের ৬ জানুয়ারি দিবাগত রাত আনুমানিক ১টার দিকে কুলিয়ারচর থানা পুলিশের মাধ্যমে সংবাদ পান, তার ছেলে মোহাম্মদ আলীকে দুষ্কৃতকারীরা চুরিকাঘাতে হত্যা করেছে।
তখন তিনি ভৈরব এসে জানতে পারেন, তার ছেলের মরদেহ ভৈরবের মাতৃকা হাসপাতালে রয়েছে। নিহত মোহাম্মদ আলীর বুকের বাম পাশে পেটের ডান পাশসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্রের আঘাত ছিল।
এ ছাড়াও তিনি কলেজের ছাত্রদের থেকে জানতে পারেন, ৬ জানুয়ারি রাত আনুমানিক ৯টার দিকে তার ছেলে মোহাম্মদ আলী ও তার বন্ধু মোরাদকে কলেজ গেটের ভেতরে অজ্ঞাতনামা দুষ্কৃতকারীরা এলোপাতাড়ি চুরিকাঘাত করে গুরুতর আহত করে। এ সময় অন্য ছাত্ররা তাদের উদ্ধার করে ভৈরবের মাতৃকা হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মোহাম্মদ আলীকে মৃত ঘোষণা করেন। গুরুতর আহত মোরাদকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
এ ঘটনায় পরদিন মোহাম্মদ আলীর পিতা শামছুদ্দিন বাদী হয়ে ২০০৮ সালের ৭ জানুয়ারি ভৈরব থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
একই বছরের ৩০ মে ভৈরব থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আ. আজিজ চারজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। দীর্ঘ শুনানি শেষে মঙ্গলবার (২০ মে) আদালত এ মামলার রায় ঘোষণা করেন।
এ মামলায় আসামিপক্ষের আইনজীবী ছিলেন মিজানুর রহমান এবং রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন এপিপি শফিউল জামান ভূঁইয়া।
আপনার মতামত লিখুন :