বৃহস্পতিবার, ২২ মে, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: মে ২২, ২০২৫, ০৪:৪৫ এএম

২২ বছর বয়সেই ইথিক্যাল হ্যাকিংয়ে চমক জিহাদ হোসেন রাফির

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: মে ২২, ২০২৫, ০৪:৪৫ এএম

২২ বছর বয়সেই ইথিক্যাল হ্যাকিংয়ে চমক জিহাদ হোসেন রাফির

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

ডিজিটাল যুগে সাইবার অপরাধ এবং অনলাইনে নিরাপত্তা ঝুঁকি বৃদ্ধি পাওয়ার প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের সামনে নতুন চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি হয়েছে। এমন এক সময়ে, ১৪ বছর বয়সে ইথিক্যাল হ্যাকার হওয়ার স্বপ্নে পথচলা শুরু করে ২২ বছর বয়সেই ইথিক্যাল হ্যাকিং এবং প্রোগ্রামিংয়ে চমক লাগানো সাফল্য পেয়েছেন জিহাদ হোসেন রাফি।

জানা যায়, রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার ভাংনী ইউনিয়নের দুর্গাপুর গ্রামের কৃষক মো. মোনতাজ হোসেনের দ্বিতীয় সন্তান জিহাদ হোসেন রাফি পঞ্চম শ্রেণিতে অধ্যয়নকালীন সময়েই ইথিক্যাল হ্যাকার ও প্রোগ্রামার হওয়ার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন। এরপর ইন্টারনেটে অনুসন্ধান করে এক সময় পরিচয় হয় বিদেশি ইথিক্যাল হ্যাকার এবং প্রোগ্রামারদের সঙ্গে।

এদিকে ভার্চুয়াল জগতে পরিচিত হওয়া এথিক্যাল হ্যাকার (ছন্দনাম) এক্সেল রেভিনান্ট এর পরামর্শে তিনি সাইবার সিকিউরিটি নিয়ে কাজ শুরু করেন। হ্যাকিংয়ের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের অ্যাকাউন্ট পুনরুদ্ধার করে সাইবার হামলায় ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়িয়ে রাফি তার কর্মজীবন শুরু করেন। ক্রমান্বয়ে দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার মাধ্যমে তিনি সাইবার নিরাপত্তার খাতে নতুন এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। বর্তমানে তিনি একজন "সার্টিফায়েড এথিক্যাল হ্যাকার" এবং ‘প্রোগ্রামার’ হিসাবে পরিচিত, যার কাজের মাধ্যমে বাংলাদেশের ডিজিটাল নিরাপত্তা আরও শক্তিশালী হচ্ছে।

এথিক্যাল হ্যাকিং: ওয়েবসাইট নিরাপত্তা নিরীক্ষণ

জিহাদ হোসেন রাফি সাইবার নিরাপত্তা খাতে তার কর্মজীবন শুরু করেন ‘এথিক্যাল হ্যাকিং’ দিয়ে। তিনি ‘ওয়েবসাইটের নিরাপত্তা ত্রুটি’ চিহ্নিত করে তা সংশোধনের জন্য কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেন। তার এই উদ্যোগ সাইবার আক্রমণের ঝুঁকি কমানোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। অনেক প্রতিষ্ঠান রাফির পরামর্শের মাধ্যমে সাইবার আক্রমণের পূর্বেই তাদের সাইটের নিরাপত্তা বৃদ্ধি করতে সক্ষম হয়েছে।

এ বিষয়ে রাফি বলেন, ‘আমার কাজের মূল উদ্দেশ্য হল ওয়েবসাইটের নিরাপত্তা দুর্বলতা চিহ্নিত করা এবং সেগুলি সংশোধন করতে সাহায্য করা, যাতে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মগুলো নিরাপদ থাকে।’

ফেসবুক ও সোশ্যাল মিডিয়া নিরাপত্তা: হ্যাকড অ্যাকাউন্ট পুনরুদ্ধার

ফেসবুকসহ বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের ‘হ্যাকড অ্যাকাউন্ট পুনরুদ্ধার’ করতে রাফি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছেন। সাধারণ মানুষ তার মাধ্যমে সাইবার অপরাধের শিকার হওয়ার পর তাদের অ্যাকাউন্ট নিরাপদে পুনরুদ্ধার করেছেন। তিনি ‘সাইবার অপরাধ প্রতিরোধে সচেতনতা’ ছড়ানোর জন্য সোশ্যাল মিডিয়ায় নিয়মিত ভিডিও পোস্ট ও ব্লগ লিখে থাকেন। তার পাঠানো সচেতনতামূলক তথ্যের মাধ্যমে হাজারো মানুষ সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ে সচেতন হয়ে উঠেছে।

এ বিষয়ে রাফি বলেন, ‘সোশ্যাল মিডিয়া নিরাপত্তা একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমি চাই মানুষ বুঝুক কীভাবে তাদের অ্যাকাউন্ট নিরাপদ রাখতে হবে এবং সাইবার আক্রমণ থেকে নিজেদের রক্ষা করতে হবে।’

আন্তর্জাতিক সাইবার নিরাপত্তা প্ল্যাটফর্মে অবদান

রাফির সাইবার নিরাপত্তা সম্পর্কিত কাজ শুধুমাত্র দেশীয় পর্যায়ে সীমাবদ্ধ নয়, তিনি ‘GitHub’ সহ আন্তর্জাতিক ওপেন সোর্স প্ল্যাটফর্মগুলোতে তার কাজের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী সুনাম অর্জন করেছেন। বিভিন্ন ওয়েবসাইটের নিরাপত্তা দুর্বলতা চিহ্নিত করে তিনি অনেক আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানকে সাইবার নিরাপত্তা শক্তিশালী করতে সহায়তা করেছেন। তার এই অবদান তাকে ‘সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ’ হিসেবে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে পরিচিত করেছে।

এ বিষয়ে রাফি বলেন, ‘প্রযুক্তি যদি সঠিকভাবে ব্যবহৃত হয়, তাহলে এটি সমাজে একটি ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারে। আমি বিশ্বাস করি প্রযুক্তির মাধ্যমে নিরাপদ ও সুরক্ষিত ডিজিটাল পরিবেশ তৈরি করা সম্ভব।’

রাফির ভবিষ্যৎ লক্ষ্য: সাইবার নিরাপত্তা প্রশিক্ষণ কেন্দ্র

রাফি ভবিষ্যতে সাইবার নিরাপত্তা প্রশিক্ষণ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করতে চান, যেখানে তরুণদের সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। তার লক্ষ্য হল বাংলাদেশের সাইবার নিরাপত্তা খাতকে আরও শক্তিশালী করা এবং সাইবার অপরাধ প্রতিরোধে তরুণদের প্রভাবশালী ভূমিকা রাখা।

রাফি বলেন, ‘আমার বিশ্বাস, সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ে আরও বেশি মানুষকে শিক্ষিত করলে আমাদের দেশের সাইবার অপরাধ কমানো সম্ভব হবে।’

ডিজিটাল নিরাপত্তায় নতুন দৃষ্টান্ত: জিহাদ হোসেন রাফি

জিহাদ হোসেন রাফি শুধু একজন এথিক্যাল হ্যাকার নন, তিনি প্রযুক্তি শিক্ষাবিদ এবং সাইবার নিরাপত্তা সচেতনতায় বিশেষ ভূমিকা রাখা একজন যোদ্ধা। তার কাজের মাধ্যমে বাংলাদেশ সাইবার নিরাপত্তার নতুন এক দিগন্তের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। সাইবার অপরাধ প্রতিরোধ, সচেতনতা এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা বিষয়ে তার ‘GitHub’ নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের তরুণদের জন্য এক প্রেরণার উৎস।

Link copied!