ভাইরাল হওয়া আপত্তিকর ভিডিও এবং ছবি ঘিরে শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিনের বিরুদ্ধে এবার সরাসরি মুখ খুলেছেন ভিডিওতে দেখা নারী সেলিনা ইসলাম লিজা। তিনি অভিযোগ করে বলেন, পারিবারিক আত্মীয়তার সুযোগ নিয়ে জেলা প্রশাসক তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা তৈরি করেন এবং বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তার সংসার ভাঙার কারণ হন।
লিজা জানান, তিনি টাঙ্গাইল সদরের বাসিন্দা এবং মিরপুরের বাসিন্দা মাজহারুল ইসলাম সংগ্রামের স্ত্রী ছিলেন। তাদের ঘরে দুটি সন্তান রয়েছে। মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিন তার স্বামীর বড় বোনের জামাই অর্থাৎ তাদের মধ্যে পারিবারিক আত্মীয়তা ছিল।
পারিবারিক সম্পর্কের সুযোগে ডিসি আমাকে ব্যবহার করেছে, অভিযোগ করে লিজা বলেন, ‘উনি কোরআন শরিফে হাত রেখে আমাকে স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। আমি তার কথা বিশ্বাস করে স্বামীর সঙ্গে ডিভোর্সে রাজি হই। কিন্তু পরে তিনি গুরুত্ব না দিয়ে উল্টো বললেন, আমি তাকে ব্ল্যাকমেইল করছি।’
তিনি আরও দাবি করেন, ডিসি আশরাফ উদ্দিন আর্থিকভাবে স্ত্রী ও পরিবারের সঙ্গে জটিলতায় পড়লে তার (লিজার) প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। এমনকি তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
অন্যদিকে জেলা প্রশাসক আশরাফ উদ্দিন একটি জাতীয় গণমাধ্যমকে জানান, লিজার সঙ্গে সম্পর্ক পারিবারিকভাবেই শুরু হয়, তবে পরে লিজা তাকে ঘনিষ্ঠ করে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে ছবি ও ভিডিও ধারণ করেন। এরপর এসব ভিডিও প্রকাশের ভয় দেখিয়ে তাকে ব্ল্যাকমেইল করেন এবং মাসিক ভিত্তিতে অর্থ আদায় করতে থাকেন।
আশরাফ উদ্দিন বলেন, ‘আমাকে প্রতি মাসে টাকা দিতে হতো। ব্যাংক লেনদেনের প্রমাণ আমার কাছে আছে। এমনকি তিনি আমাকে স্ত্রীকে তালাক দিতে বলেছিলেন এবং বিয়েতে রাজি না হলে বড় অঙ্কের টাকা দাবি করেন।’
জেলা জজ আদালতের এক আইনজীবী জানিয়েছেন, দুই পক্ষের মধ্যে দুই মাস ধরে মধ্যস্থতার চেষ্টা চলছিল। বিয়ের প্রস্তাবও দেওয়া হয়, কিন্তু লিজার পক্ষ থেকে মোটা অঙ্কের অর্থ দাবি এবং নির্দিষ্ট সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়। এর মধ্যেই ভিডিওটি ভাইরাল হয়ে পড়ে।
প্রসঙ্গত, আশরাফ উদ্দিন ২০২৪ সালের ৩ নভেম্বর শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব নেন। তিনি ২৭তম বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা। এর আগে তিনি প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ও নিউরো-ডেভেলপমেন্ট ট্রাস্টের পরিচালক হিসেবে কাজ করেন।
ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর বৃহস্পতিবার রাতেই তিনি শরীয়তপুর ত্যাগ করেন বলে জানা গেছে। বর্তমানে তিনি ছুটিতে রয়েছেন, তবে তার অনুপস্থিতিতে কে দায়িত্ব পালন করছেন সে বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য মেলেনি।
আপনার মতামত লিখুন :