কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ভিক্ষাবৃত্তি না ছাড়ায় এক বৃদ্ধকে গলা টিপে হত্যা করেছেন তারই ছেলে। রোববার (২২ জুন) দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে ভৈরব পৌর শহরের ভৈরবপুর উত্তরপাড়া সায়দুল্লাহ মিয়া হাউজিং সোসাইটিতে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত হাফিজ উদ্দিন (৭৫) নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার দড়িহাইরমারা গ্রামের বাসিন্দা।
অভিযুক্ত ছেলে আল আমিন (২৫) পেশায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাচালক।
ভৈরব থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আবু তালেব জানান, এ ঘটনায় নিহতের মেয়ে আসমা বেগম থানায় মামলা করেছেন। ঘটনাস্থল থেকে আল আমিনকে আটক করা হয়েছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, হাফিজ উদ্দিন স্ত্রী মারা যাওয়ার পর দুই সন্তানকে নিয়ে ভৈরবে ভাড়া থাকতেন। বয়সের কারণে তিনি কাজ করতে না পেরে ভিক্ষাবৃত্তিতে যুক্ত হন। তবে ছেলে আল আমিন দীর্ঘদিন ধরে চাইতেন তার বাবা যেন এ পেশা থেকে সরে আসেন। এ নিয়ে বাবা-ছেলের মধ্যে প্রায়ই কথা-কাটাকাটি হতো।
রোববার রাতে ওই বিষয় নিয়ে ফের বাকবিতণ্ডা হলে একপর্যায়ে আল আমিন তার বাবার গলা টিপে ধরেন ও ধাক্কা দিয়ে মেঝেতে ফেলে দেন। এতে ঘটনাস্থলেই হাফিজ উদ্দিন মারা যান।
প্রতিবেশীরা জানান, মৃত্যুর আগে হাফিজ উদ্দিনের গোঙানির শব্দ শুনে তারা ছুটে আসেন। ঘরের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ থাকায় পুলিশকে ফোন (৯৯৯) করে খবর দেওয়া হয়। পরে পুলিশ এসে দরজা খুলে লাশ উদ্ধার করে এবং আল আমিনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
স্থানীয় বাসিন্দা তিথি বেগম বলেন, ‘তারা আমাদের বাড়িতে ভাড়া থাকত। আল আমিন অটো চালাত এবং ঘরের সব কাজ করত। তবে বাবার সঙ্গে ভিক্ষা নিয়ে প্রায়ই ঝগড়া হতো। সেদিন রাতেও ঝগড়া চলছিল। মাঝরাতে দরজা বন্ধ দেখে আমরা পুলিশে ফোন দিই।’
তদন্ত কর্মকর্তা আবু তালেব বলেন, ‘আল আমিন জিজ্ঞাসাবাদে শুধু একটি কারণই জানিয়েছে—সে তার বাবার ভিক্ষা পেশা মেনে নিতে পারেনি। অন্য কোনো কারণ আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আল আমিনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’
আপনার মতামত লিখুন :