কুড়িগ্রামের রাজিবপুরে এইচএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণের নির্ধারিত সময়ে টাকা পরিশোধ করেন মোশাররফ হোসেন। কিন্তু তার ফরম পূরণ হয়নি। ফলে পরীক্ষা দেওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে এই শিক্ষার্থীর।
পরে ওই ছাত্রের কাছ থেকে আবারও অতিরিক্ত টাকা নিয়ে ফরম পূরণের আশ্বাস দেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। এদিকে চলতি মাসের ২৬ জুন থেকে এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা।
জানা গেছে, চলতি বছরের মার্চ মাসে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের ফরম পূরণের কার্যক্রম শুরু করে কলেজ কর্তৃপক্ষ। ফি নির্ধারণ করা হয় দুই হাজার ৩৬৫ টাকা। মোশাররফ হোসেন ওই টাকা পরিশোধ করলেও তার ফরম পূরণ হয়নি।
ভুক্তভোগী মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আমরা ছয় বন্ধু একসঙ্গে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও টাকা জমা দিয়ে রসিদ কলেজে জমা দেই। আমাদের কাছে থাকা অতিরিক্ত দুটি রসিদ কলেজের সহকারী অফিস সহায়ক মো. শাজাহান নিয়ে নেন। বিপত্তি দেখা দেয় (সোমবার ২৩ জনু) যখন আমরা কলেজে এডমিট কার্ড নিতে যাই।’
তিনি বলেন, ‘সবাইকে এডমিট কার্ড দেওয়া হলেও আমারটা পাওয়া যায়নি। পরে শিক্ষকরা খতিয়ে দেখে জানান, আমার ফরম পূরণই হয়নি। আমাকে জানানো হয়, এবার পরীক্ষা দেওয়া সম্ভব নয়, পরবর্তী বছর পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে। তবু আমি কলেজে বিকেল ৩টা পর্যন্ত অপেক্ষা করি। পরে শাজাহান স্যার আমাকে ডেকে বলেন, ফরম পূরণ করতে চাইলে ৫ হাজার টাকা লাগবে।’
মোশাররফ আরও বলেন, ‘আমার কাছে টাকা না থাকায় একজন বড় ভাইয়ের কাছ থেকে ধার নিয়ে কলেজের কম্পিউটার অপারেটর মনোয়ার হোসেনের কাছে টাকা জমা দেই।’
ঘুষ গ্রহণের বিষয়টি স্বীকার করে কলেজের কম্পিউটার অপারেটর মনোয়ার হোসেন বলেন, ‘মিস ফরম ফিলাপের জন্য ৫ হাজার টাকা নিয়েছি। রৌমারী সিজি জামান উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নাজিমুদ্দিনের মাধ্যমে ফরম পূরণ করিয়ে দেব।’
এ বিষয়ে সহকারী অফিস সহায়ক মো. শাজাহান বলেন, ‘ভুলবশত ফরম পূরণ হয়নি। কলেজের ফান্ডে টাকা না থাকায় সাময়িকভাবে মোশাররফের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে ৫ হাজার টাকা ফেরত দেওয়া হবে।’
তিনি আরও জানান, ‘এই টাকা কলেজ থেকেই ফেরত দেওয়া হবে, আমরা শুধু সমস্যা সমাধানের জন্য তার কাছ থেকে নিয়েছি।’
কলেজ কর্তৃপক্ষের এমন গাফিলতিতে হতাশা প্রকাশ করে আরেক পরীক্ষার্থী জাহিদ হাসান বলেন, ‘স্যারদের দায়িত্বে অবহেলার কারণে মোশাররফের ফরম পূরণ হয়নি। এখন তার ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। আমরা চাই, দ্রুত তার ফরম পূরণ করে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হোক। একইসাথে দোষীদের শাস্তির দাবি জানাই, কারণ এদের মতো অসচেতনদের কারণে অনেক শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ নষ্ট হয়ে যায়।’
রাজীবপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মঞ্জুল কাদের বলেন, ‘কোনো কারণে হয়তো তার ফরম পূরণটি মিস্টেক হয়েছে। পরে বিষয়টি জানার পর বোর্ডে টাকা পাঠানো হয়েছে। আশা করছি, সে পরিক্ষা দিতে পারবে।’
আপনার মতামত লিখুন :