বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবীর রিজভী বলেছেন, ‘১৬ বছর ধরে দমন-পীড়ন চালিয়েও বিএনপির মনোবল এতটুকু নষ্ট করা যায়নি। বরং আওয়ামী লীগ সরকারের দুর্নীতির ভয়াবহ চিত্র এখন জাতির সামনে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। দেশের সকল শ্রেণিপেশার মানুষ আজ অনুতপ্ত।’
বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টায় রংপুর নগরীর গ্র্যান্ড হোটেল মোড়স্থ দলীয় কার্যালয়ে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব), রংপুর-এর আয়োজনে স্বেচ্ছায় রক্তদান ও ব্লাড গ্রুপিং কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
আনুপাতিক ভোট পদ্ধতির সমালোচনা করে রিজভী বলেন, ‘আনুপাতিক ভোটের প্রয়োজন কী? এতে স্থানীয় কোনো জনপ্রতিনিধি তৈরি হবে না, নেতৃত্বের বিকাশ ঘটবে না। একজন নেতা যিনি জনগণের পাশে থেকে বড় হয়েছেন, তাকে বাদ দিয়ে কেবল দলকে ভোট দেওয়া হবে আরও বেশি স্বৈরাচারী ব্যবস্থাকে উসকে দেওয়া।’
তিনি আরও বলেন, ‘যে দেশে প্রায় ১২ কোটি ভোটার রয়েছে, সেই ১৮ কোটি মানুষের দেশে এমন পদ্ধতির কথা বলা গণতন্ত্রের অপমান। মানুষ জীবনের বিনিময়ে যে গণতন্ত্র চেয়েছিল, সেই গণতন্ত্র আজ প্রশ্নবিদ্ধ।’
গত ১৬ বছরের শাসনকালকে 'ভয়াবহ সময়' আখ্যা দিয়ে রিজভী বলেন, ‘দেশের কোনো তরুণ শান্তিতে ঘুমাতে পারেনি। কার রক্তাক্ত লাশ কোন নদীর পাড়ে পাওয়া যাবে এই শঙ্কায় মানুষ দিন কাটিয়েছে। শেখ হাসিনার দমন-পীড়নের হাত থেকে কেউ রেহাই পায়নি। সেই রক্তপিপাসু শক্তিকে রুখতে এখন গণতান্ত্রিক শক্তির ঐক্য প্রয়োজন।’
দলের নেতাকর্মীদের সতর্ক করে তিনি বলেন, ‘চাঁদাবাজি, দখলবাজির সঙ্গে বিএনপির কোনো নেতাকর্মী জড়াতে পারবে না। সাধারণ মানুষ যেন আমাদের আচরণে কষ্ট না পায় এটা নিশ্চিত করতে হবে। কেউ অপকর্মে জড়ালে দল তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘জুলাই-আগস্টে যেভাবে ছাত্র-জনতার রক্ত ঝরানো হয়েছে, সেসব হত্যাকাণ্ডের পরও শেখ হাসিনার মধ্যে কোনো অনুশোচনা নেই। হাজারো শিশু, কিশোর, তরুণের রক্ত নেওয়ার পরও তার রক্তের পিপাসা মেটেনি। তিনি ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করার জন্য নির্বাচন ও গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছেন ২০১৪ সালে ভোটারবিহীন নির্বাচন, ২০১৮ সালে রাতের ভোট এবং ২০২৪ সালে প্রহসনের নির্বাচন তার প্রমাণ।’
জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান এবং বিএনপির 'বিজয়ের বর্ষপূর্তি' উপলক্ষ্যে ঘোষিত কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে এই স্বেচ্ছায় রক্তদান ও ব্লাড গ্রুপিং কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় ভাইস প্রেসিডেন্ট ডা. জাহিদ হোসেন, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় ভাইস প্রেসিডেন্ট ডা. আউয়াল, রংপুর মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মাহফুজ উন নবী ডন, ড্যাব নেতৃবৃন্দসহ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা।
আপনার মতামত লিখুন :