সোমবার, ০৭ জুলাই, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


যশোর প্রতিনিধি

প্রকাশিত: জুলাই ৬, ২০২৫, ১০:০০ পিএম

রেস্ট হাউজে নারীসহ ওসি, ছাত্রদল নেতাকে টাকা দিয়ে রক্ষা

যশোর প্রতিনিধি

প্রকাশিত: জুলাই ৬, ২০২৫, ১০:০০ পিএম

মহেশপুর থানার ওসি সাইফুল ইসলাম ও তার নারী নিয়ে পালানোর দৃশ্য। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

মহেশপুর থানার ওসি সাইফুল ইসলাম ও তার নারী নিয়ে পালানোর দৃশ্য। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

ঝিনাইদহের মহেশপুর থানার ওসি সাইফুল ইসলামের নারী কেলেঙ্কারির ঘটনা ফাঁস হয়েছে। স্ত্রী পরিচয়ে এক নারীকে সঙ্গে নিয়ে যশোরে রেস্ট হাউসে উঠে ধরা পড়ার পর হেনস্তার শিকার হয়েছেন তিনি। তাকে জিম্মি করে মোটা অঙ্কের টাকাও হাতিয়েছেন একটি চক্র।

ঘটনাটি গত ৩০ জুনের হলেও রোববার (৬ জুলাই) প্রকাশ্যে আসে। যদিও ওসি সাইফুল দাবি করেছেন, সেদিন ছাত্রদলের কিছু ছোট ভাই রেস্ট হাউজে তার কাছে গিয়েছিলেন। স্বাভাবিকভাবে কথা বলে তারা চলে যান। কোতোয়ালি থানা পুলিশ বলছে, ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগেই বিষয়টি মিটমাট হয়ে যায়। কারও কোনো অভিযোগ ছিল না।

সিসিটিভি ফুটেজ ও রেস্ট হাউস কর্তৃপক্ষের তথ্যমতে, ৩০ জুন সন্ধ্যা ৬টা ১০ মিনিটে এক নারীকে সঙ্গে নিয়ে যশোর পানি উন্নয়ন বোর্ডের পুরাতন রেস্ট হাউসের কপোতাক্ষ কক্ষে উঠেন পার্শ্ববর্তী জেলা ঝিনাইদহের মহেশপুর থানার ওসি সাইফুল ইসলাম। এর ঘণ্টা দুয়েক পরে পাঁচ-ছয়জন সহযোগী নিয়ে রেস্ট হাউসে হাজির হন জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম হাসান সনি। দরজায় ধাক্কা দিতেই বাইরে বেরিয়ে আসেন ওসি সাইফুল। ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা কক্ষে প্রবেশ করতে গেলে বাধা দেন তিনি। এক পর্যায়ে টেনে হিঁচড়ে ধস্তাধস্তি করে ওসিকে সঙ্গে নিয়েই কক্ষে প্রবেশ করেন তারা।

বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে ছাত্রদল নেতা সনি ও সহযোগীরা ভাঙচুর চালান এবং তাদের ভিডিও ধারণ করেন। এ সময় আনসার সদস্য ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের এক কর্মচারীকে মারধরও করেন তারা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে হাজির হলে ওসি ও ওই নারীকে পেছনের দরজা দিয়ে বের করে দেন ছাত্রদল নেতা সনি।

পাউবো রেস্ট হাউসের কেয়ারটেকার মিজানুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, স্ত্রী পরিচয়ে এক নারীকে সঙ্গে নিয়ে বাংলোয় উঠেন ওসি সাইফুল। তিনি নিজেই দরজা খুলে দিয়ে কপোতাক্ষ গুছিয়ে, বুঝিয়ে দিয়ে চলে যান। তারা ওই কক্ষে ঘণ্টাখানেক অবস্থান করার পরে এলাকার কিছু লোকজন প্রবেশ করেন। রেস্ট হাউসের সামনে এসে দরজা ধাক্কাধাক্কি করেন। এর কিছুক্ষণ পর সাইফুল দরজা খুলে বের হওয়ার যাওয়ার চেষ্টা করেন। আর লোকজন তাকে টেনে হিঁচড়ে ওই নারীসহ ঘরে ঢোকায়।

পরে ওসি সাইফুল ছাত্রদলের ওই নেতাদের হাতে মোটা অঙ্কের টাকা বের করে দেন। টাকা লেনদেন তিনি দেখে ফেলায় তাকে ও বাবুর্চি মিজানকে মারপিট করে চক্রের সদস্যরা। ওসি সাইফুল টাকা দেওয়ার পর ঘটনা থেকে রক্ষা পান।

রেস্ট হাউসের ইনচার্জ উপ-সহকারী প্রকৌশলী তরুণ হোসেন সাংবাদিকদের জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ড যশোরের নির্বাহী প্রকৌশলীর নির্দেশনায় তিনি ওসি সাইফুল ইসলামকে কক্ষ বরাদ্দ দিয়েছিলেন। সঙ্গের নারীকে স্ত্রী পরিচয় দিয়েছিলেন। আর সাইফুল রেস্ট হাউসে অবস্থানকালে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পাউবো ও থানার লোকজন সেখানে যান।

যশোর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী পলাশ কুমার ব্যানার্জী জানান, ঝিনাইদহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে ওসিকে কক্ষ বরাদ্দ দেওয়া হয়। পরে সেখানে বহিরাগতরা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটায়। বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী খতিয়ে দেখছে।

এ বিষয়ে ওসি সাইফুল ইসলাম বলেন, সেদিন পানি উন্নয়ন বোর্ডের রেস্ট হাউজে এক বান্ধবীকে নিয়ে বেড়াতে গিয়েছিলেন। কোনো কেলেঙ্কারির ঘটনা ঘটেনি। এটা ভিন্নভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে।

এক প্রশ্নে ওসি জানান, গোলাম হাসান সনি, রাজেদুর রহমান সাগর, জিসানসহ ছাত্রদলের কিছু ছোট ভাই তার সঙ্গে দেখা করার জন্য রেস্ট হাউজে গিয়েছিলেন। তারা স্বাভাবিকভাবে কথাবার্তা বলে চলেও যান। তাকে জিম্মি করে কেউ কোনো টাকাপয়সা হাতিয়ে নেননি। ঘটনাটি ভিন্নভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে।

তাহলে সিসিটিভি ফুটেজের ভিডিও চিত্র কি মিথ্যা প্রশ্ন করা হলে ওসি বলেন, বিষয়টি নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাই না।

যশোর জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম হাসান সনি জানান, ওসি সাইফুল নারী নিয়ে রেস্ট হাউজে গিয়েছিল ঠিক আছে। তাদের এলাকাবাসী ধরেছে সত্যি। তবে জিম্মি করে টাকা আদায় করার অভিযোগ মিথ্যা।

সনি আরও জানান, আমি রেস্ট হাউজের রুমে ঢুকে তার সঙ্গে কোনো নারীকে পাননি। পরে দেখি তার রুমে থাকা ব্যক্তি তার পূর্ব পরিচিত বড় ভাই ওসি সাইফুল। এ সময় তার সঙ্গে ৫/১০ মিনিট  আলাপ-আলোচনা করে চলে আসি। এখন ভিত্তিহীন কথাবার্তা রটানো হচ্ছে।

যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল হাসনাত জানান, পাউবো রেস্ট হাউজের ঘটনাটি জানার সঙ্গেই সেখানে পুলিশের একটি টিম পাঠানো হয়েছিল। পুলিশ যাওয়ার ঘটনার মিটমাট হয়ে যায়। কারও কোনো অভিযোগ না থাকায় পুলিশ ফিরে আসে।

রূপালী বাংলাদেশ

Shera Lather
Link copied!