বুধবার, ২৩ জুলাই, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


মুহাম্মদ ফজলুল করিম, ফটিকছড়ি (চট্টগ্রাম)

প্রকাশিত: জুলাই ২২, ২০২৫, ১০:০৮ পিএম

লোকালয়ে পোল্ট্রি খামার, দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী

মুহাম্মদ ফজলুল করিম, ফটিকছড়ি (চট্টগ্রাম)

প্রকাশিত: জুলাই ২২, ২০২৫, ১০:০৮ পিএম

ফটিকছড়িতে অব্যবস্থাপনায় গড়ে ওঠা মা এগ্রো খামার। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

ফটিকছড়িতে অব্যবস্থাপনায় গড়ে ওঠা মা এগ্রো খামার। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির ‘মা এগ্রো’ নামক এক লেয়ার ও ব্রয়লার মুরগির খামারের বর্জ্যের দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী। পরিবেশ আইন উপেক্ষা করে লোকালয়ে গড়ে ওঠা এ খামারটির বর্জ্য নিয়মকানুনের তোয়াক্কা না করে ফেলা হচ্ছে পার্শ্ববর্তী খাল, ফসলি জমিতে। 

এতে করে নষ্ট হচ্ছে কৃষকের ফসল ও মাটির গুণাগুণ। পাশাপাশি হুমকির মুখে পড়েছে কৃষি ও মৎস্য উৎপাদন। এ ছাড়া সৃষ্ট দুর্গন্ধ বাতাসে মিশে দুষিত হচ্ছে বায়ুমণ্ডল, যার ফলে বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি।

সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার নারায়নহাট ইউনিয়নের হাঁপানিয়া গ্রামের লোকালয়ের মাঝখানে গড়ে ওঠা খামারটির বর্জ্য ফেলার নেই কোনো আধুনিক ব্যবস্থা। ফলে এলাকার মানুষ পরিবেশ দূষণের মারাত্মক হুমকিতে রয়েছে। এতে দূষিত বাতাসে শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত সমস্যাসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।

অন্যদিকে, বৃষ্টির পানিতে খামারের বর্জ্য মিশে আশপাশে অন্তত ৩ কিলোমিটার এলাকার পানি দূষিত হয়ে কালচে আকার ধারণ করেছে। বর্তমানে এসব জমিতে চাষাবাদ ও পুকুর-জলাশয়ে মাছ চাষ বন্ধ হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া বায়ু ও পানিবাহিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন শিশু ও বৃদ্ধরা।

ময়লা-আবর্জনায় ভরে গেছে খামার। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

ভুক্তভোগী এলাকাবাসীর অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে এমন পরিস্থিতি বিরাজ করলেও রহস্যজনক কারণে নীরব রয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তর, প্রাণিসম্পদ অফিস ও উপজেলা প্রশাসন। বিগত সরকারের আমলে বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগে অভিযোগ করা হলে রহস্যজনক কারণে ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন।

স্থানীয়রা জানান, এ খামার থেকে প্রতিদিন শত শত কেজি বর্জ্য উৎপন্ন হচ্ছে। আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা না থাকায় তারা এসব বর্জ্য ফেলছে আবাদি জমি ও খোলা জায়গায়। ফলে হাজার হাজার পথচারী ও এলাকার মানুষ দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে।

হাপানিয়া গ্রামের বাসিন্দা আব্দুস সালাম বলেন, ‘এই খামারের বর্জ্যের দুর্গন্ধে আমাদের জীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। বিকাল হলেই দুর্গন্ধ ক্রমান্বয়ে বেড়ে যায়। ফলে সূর্য ডোবার আগে ঘরের দরজা-জানালা বন্ধ করে দিয়ে ঘরে ঢুকে যেতে হয়। অভিযোগ করলে খামার মালিক গ্রাম ছেড়ে চলে যাওয়ার পরামর্শ দেন।’

খামারের ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে পাশে থাকা উন্মুক্ত খালে। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

একই গ্রামের ষাটোর্ধ্ব বয়সি রহিমা খাতুন বলেন, ‘দুর্গন্ধে আমরা নিঃশ্বাস নিতে পারি না। বৃষ্টির পানিতে ভেসে খামারের ময়লা-আবর্জনা আমাদের ঘরে উঠে যায়। এতে চরম অশান্তিতে আছি। বাসায় মেহমান এলে চরম লজ্জায় পড়তে হয়। দুর্গন্ধে খাবার খেতে গিয়ে বমি করে দেয় ছোট বাচ্চারা। আমরা এর থেকে পরিত্রাণ চাই।’

জানতে চাইলে খামার মালিক খোরশেদুল আলম বলেন, ‘পোল্ট্রি খামার থেকে দুর্গন্ধ হবেই। ভাড়া নিয়ে খামার পরিচালনা করছি। এলাকাবাসীর অসুবিধা হলে তারা অন্যত্র চলে যাক।’

তিনি সাংবাদিকদের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, ‘আমার খামারের ছবি তুলতে গিয়েছেন কার থেকে অনুমতি নিয়েছেন? খামারে কোটি টাকার বিনিয়োগ আছে—আপনারা কী কোটি টাকার লোক?’

স্বচ্ছ ড্রেনেজ ব্যবস্থা নেই মা এগ্রো খামারটি। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

লোকালয়ে এমন পোল্ট্রি খামার করার নিয়ম আছে কি না জানতে চাইলে, তিনি আরও ক্ষিপ্ত হয়ে যা মন চায় তাই করতে বলেন। প্রয়োজনে থানা বা আদালতে মামলা করারও পরামর্শ দেন তিনি।

ফটিকছড়ি উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আব্দুল মোমিন বলেন, ‘আমাদের কাছে এমন কোনো অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নিব।’

এদিকে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ‘জানতে পেরেছি, খামারটি এলাকা ও পরিবেশের ক্ষতি করছে। খবর পেয়ে আমি নারায়নহাট ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তাকে খামারটি পরিদর্শনে পাঠিয়েছি। সেও জানালেন যে খামারটি পরিবেশের মারাত্বক ক্ষতি করছে, এলাকাবাসী কষ্ট পাচ্ছেন।’

Shera Lather
Link copied!