শুক্রবার, ০১ আগস্ট, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


নওগাঁ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: জুলাই ৩১, ২০২৫, ০৩:১৫ পিএম

১০ কোটি টাকার সাইলো নির্মাণ অনিশ্চিত, ঠিকাদার লাপাত্তা

নওগাঁ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: জুলাই ৩১, ২০২৫, ০৩:১৫ পিএম

নওগাঁয়  খাদ্য সংরক্ষণাগার (সাইলো) নির্মাণ প্রকল্প আটকে আছে। বর্তমানে ঠিকাদার লাপাত্ত রয়েছে। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

নওগাঁয় খাদ্য সংরক্ষণাগার (সাইলো) নির্মাণ প্রকল্প আটকে আছে। বর্তমানে ঠিকাদার লাপাত্ত রয়েছে। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

খাদ্যশস্য উৎপাদনে দেশের অন্যতম জেলা নওগাঁ। এই জেলায় আধুনিক খাদ্য সংরক্ষণাগার (সাইলো) নির্মাণের উদ্যোগ ছিল স্থানীয় কৃষক ও ব্যবসায়ীদের আশার আলো।

কিন্তু প্রকল্প শুরুর পর অল্প সময়েই থমকে গেছে কাজ। লাপাত্তা হয়েছে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। এতে প্রকল্পটির ভবিষ্যৎ নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা।

জানা গেছে, নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার ভীমপুর এলাকায় ১৫ একর জমিতে প্রায় ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে সাইলো নির্মাণের উদ্যোগ নেয় খাদ্য মন্ত্রণালয়। পুরো প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ১০ কোটি ৫৬ লাখ ৭১ হাজার টাকা। এর মধ্যে শুধু মাটি ভরাটের বরাদ্দ ৫ কোটি ৮৭ লাখ টাকা।

ভূমি উন্নয়ন কাজের দায়িত্ব পায় ঢাকার মেসার্স চন্দ্রদ্বীপ কনস্ট্রাকশন, রাজশাহীর মেসার্স ডন এন্টারপ্রাইজ ও নওগাঁর মেসার্স ইথেন এন্টারপ্রাইজ। গত বছরের ৩ সেপ্টেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও ৯৫ শতাংশ মাটি ভরাট করে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান গা ঢাকা দেয়। গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের মেয়াদ শেষে প্রতিষ্ঠানগুলোকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি।

তিন বছর ধরে বন্ধ কাজ, মাঠে খেলাধুলা

স্থানীয়রা জানান, প্রায় তিন বছর ধরে মাটি ভরাটের কাজ সম্পূর্ণ না হওয়ায় প্রকল্প এলাকা এখন গো-চারণভূমি ও শিশু-কিশোরদের ফুটবল খেলার মাঠে পরিণত হয়েছে।

ভীমপুর গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল মান্নান বলেন, ‘সাইলো হবে—এই আশায় এতদিন অপেক্ষা করছি। কিন্তু এখন তা শুধু মাঠে খেলাধুলার জায়গা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আদৌ নির্মাণ হবে কি না, বোঝা যাচ্ছে না।’

আরেক বাসিন্দা আরমান আলীর অভিযোগ, ‘তিন ফসলি জমিকে এক ফসলি দেখিয়ে জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। এ ছাড়া মাটি ভরাটে ব্যবহার করা হয়েছে এঁটেল মাটি, যা অনিয়ম ও দুর্নীতির ইঙ্গিত দেয়। সংশ্লিষ্টদের জবাবদিহির আওতায় আনা উচিত।’

তিন বছর ধরে মাটি ভরাটের কাজ সম্পূর্ণ না হওয়ায় প্রকল্প এলাকা গো-চারণভূমি ও শিশু-কিশোরদের ফুটবল খেলার মাঠে পরিণত হয়েছে। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

নওহাটা এলাকার বাসিন্দা শাহজাহান অভিযোগ করেন, তৎকালীন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার রাজনৈতিক ও ব্যক্তিস্বার্থে এই সাইলো প্রকল্প হাতে নেন। ‘এই প্রকল্প দেখিয়ে তার নিজ এলাকায় বিশ্ববিদ্যালয় নেওয়ার পাঁয়তারা ছিল,’ দাবি করেন তিনি।

তবে স্থানীয়দের একটি অংশ বলছেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন না হলে, অন্তত সরকারি বা স্থানীয় প্রয়োজনীয় অন্য কোনো উন্নয়নমূলক কাজে জমিটি যেন ব্যবহৃত হয়।

জেলা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি এসএম আজাদ হোসেন মুরাদ বলেন, ‘এত বড় জায়গা পতিত না রেখে মৌসুমি ফসল, ফলজ গাছ কিংবা খাদ্যশস্য উৎপাদনে ব্যবহার করা যেতে পারে। এতে স্থানীয় অর্থনীতিও চাঙা হবে।’

খাদ্য সংরক্ষণে চাহিদা ও বাস্তবতা

নওগাঁ চালকল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ হোসেন চকদার বলেন, ‘নওগাঁ জেলায় প্রতিবছর প্রায় ২৭ লাখ টন ধান উৎপাদন হয়। সরকারি গুদামে জায়গা না থাকায়, সংরক্ষণের জন্য পাশের জেলায় পাঠাতে হয়—যা ব্যয়বহুল ও সময়সাপেক্ষ।’

তিনি আরও বলেন, ‘একটি আধুনিক সাইলো নির্মিত হলে জেলার ১১ উপজেলার উৎপাদিত খাদ্যশস্য স্থানীয়ভাবে সংরক্ষণ করা সম্ভব হবে, যা কৃষক ও ব্যবসায়ীদের জন্য হবে আশীর্বাদ।’

নওগাঁ জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. ফরহাদ খন্দকার বলেন, ‘প্রকল্পে মাটি ভরাটের কাজ ৯৫ শতাংশ শেষ হলেও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানগুলো অজ্ঞাত কারণে কাজ বন্ধ রেখেছে। তাদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।’

তিনি জানান, এখনো ১০ শতাংশ অর্থ জামানত হিসেবে রক্ষিত আছে। খালি জায়গায় ফলজ গাছ রোপণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ‘সাইলো প্রকল্প নিয়ে পরবর্তী করণীয় বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে অধিদপ্তর। তবে জেলায় খাদ্য সংরক্ষণের যথেষ্ট ব্যবস্থা বর্তমানে আছে।’

Shera Lather
Link copied!