গাজীপুরের শ্রীপুরে শীতলক্ষ্যা নদীর চর দখল করে একের পর এক অবৈধ স্থাপনা গড়ে তোলা হচ্ছে। ইসলাম ধর্মকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে ‘মসজিদ নির্মাণে’র দোহাই দিয়ে এসব স্থাপনা নির্মাণ করা হলেও, স্থানীয় প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কার্যত নীরব ভূমিকা পালন করছে। বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন পরিবেশ ও নদী রক্ষা আন্দোলনের সঙ্গে জড়িতরা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলার গোসিঙ্গা ইউনিয়নের গোসিঙ্গা বাজার সংলগ্ন শীতলক্ষ্যা নদীর পশ্চিম পাড়ে বহু বছর আগে জেগে ওঠা চরে নির্মাণ করা হয়েছে কয়েকটি দোকানঘর। বর্তমানে দুটি নতুন স্থাপনার নির্মাণকাজ চলছে। সেখানে মজুত রয়েছে ইট-বালু ও কাঠ-বাঁশ। কাজ করছেন কয়েকজন কাঠমিস্ত্রি। এই অবৈধ স্থাপনাগুলো গড়ে তোলা হচ্ছে স্থানীয় খেয়াঘাট ইজারাদার আক্তার হোসেন খানের নেতৃত্বে।
স্থানীয়রা জানান, তারা শুনেছেন ওই স্থানে একটি মসজিদ হবে। তবে তাদের প্রশ্ন, চর এলাকায় যেখানে প্রতি বছরই পানি উঠে, সেখানে কেন মসজিদ হবে? বাজারে তো আগে থেকেই একাধিক মসজিদ রয়েছে। তারা মনে করছেন, মসজিদের নাম ব্যবহার করে মূলত চরের জমি দখল করা হচ্ছে।
আরেকজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, ‘চরের জমি বহু আগের, হঠাৎ করে দোকানপাট গড়ে উঠছে। এত কাছে ভূমি অফিস থাকলেও কেউ কিছু বলছে না। ক্ষমতা না থাকলে তো এগুলো করা সম্ভব নয়।’
অভিযুক্ত আক্তার হোসেন খান বলেন, ‘নদীর চরে একটি নতুন মসজিদ নির্মাণ করা হচ্ছে। বিষয়টি ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে।’ তবে চরে থাকা দোকানঘরগুলোর বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
গোসিঙ্গা ইউনিয়নের সহকারী ভূমি কর্মকর্তা (তহশিলদার) মো. গিয়াস উদ্দিন বলেন, ‘নদীর চর দখল করে স্থাপনা নির্মাণের বিষয়টি আমার জানা নেই। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশনার পর আমি তদন্তে যাচ্ছি। আমাকে কেউ কিছু জানায়নি, এমন দাবি করা মিথ্যা।’
শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সজীব আহমেদ বলেন, ‘বিষয়টি জানতে পেরে আমি তাৎক্ষণিকভাবে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছি।’
আপনার মতামত লিখুন :