সাতক্ষীরার শ্যামনগরের নূরনগর ইউনিয়নের রামজীবনপুর কেয়াতলায় বিরোধপূর্ণ জমি দখলকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে ৫ জন গুলিবিদ্ধসহ ১০ জন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় থানায় একটি মামলা দায়েরের পর চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
রোববার (৩ আগস্ট) রামজীবনপুর গ্রামের হাতেম আলী গাজীর ছেলে মো. সোহেল রেজা ফরেজ বাদী হয়ে পুরাতন সাতক্ষীরার আব্বাস আলীর ছেলে আশরাফুল ইসলামসহ সাতজনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ২০-২৫ জনকে আসামি করে শ্যামনগর থানায় মামলা দায়ের করেন।
স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির বিষয়টি নিশ্চত করেছেন আদালতের পুলিশ পরিদর্শক মো. খায়রুল কবীর আনাম।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, কেয়াতলার ১৬ বিঘা জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। জমিটির বৈধ মালিকানা দাবি করে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র থাকার পরও রামজীবনপুর গ্রামের আওয়ামী লীগ কর্মী শাহাজান ও তার পরিবারের সদস্যরা জমিটি দখলে রেখেছিলেন। তবে উচ্চ আদালতের রায় সোহেল রেজা ফরেজের পক্ষে যাওয়ায় গত বছরের ৫ আগস্ট জমির দখল নেন তিনি।
শনিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে শাহাজান বহিরাগত সন্ত্রাসীদের নিয়ে একটি বাস ও সিএনজিচালিত অটোতে করে জমিটি পুনরায় দখল করতে যান। এ সময় বাধা দিলে সন্ত্রাসীরা গুলি চালায়। এতে রামজীবনপুর গ্রামের আব্দুল মালেক গাজী (৫০), আরিফুল ইসলাম (১৫), আমিনুল ইসলাম (২৮), কেয়াতলা গ্রামের আবু সাঈদ (১৫) ও আব্দুল্লাহ আল মামুন (৩৫) গুলিবিদ্ধ হন। পাশাপাশি লোহার রড ও লাঠির আঘাতে আহত হন আরও পাঁচজন।
হামলার সময় পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে চারজনকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন পুরাতন সাতক্ষীরার আব্বাস আলীর ছেলে আশরাফুল ইসলাম, সদর উপজেলার মোহাম্মদ আলী হোসেনের ছেলে মো. আমানুল্লাহ ইমন, দেবহাটার সখীপুরের রবিউল সরদারের ছেলে মারুফ হোসেন এবং দেবহাটার নারিকেলির আব্দুল লতিফ সরদারের ছেলে আব্দুল্লাহ আল মামুন।
রোববার বিকেলে এ চারজন সাতক্ষীরার আমলী আদালত-৫-এর বিচারক রাফিয়া সুলতানার কাছে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তারা স্বীকার করেন যে, শাজাহান কবীর তাদেরকে ঘটনাস্থলে ডেকে নিয়ে গিয়েছিলেন। আদালত জবানবন্দি গ্রহণের পর তাদেরকে কারাগারে পাঠানো হয়।
মো. খায়রুল কবীর আনাম বিষয়টি নিয়ে বলেন, ‘আসামিরা আদালতে দোষ স্বীকার করেছে এবং জানিয়েছে, তারা শাজাহানের ডাকে সেখানে গিয়েছিল।’
শ্যামনগর থানার ওসি মো. হুমায়ুন কবীর মোল্লা জানান, মামলার অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
আপনার মতামত লিখুন :