বুধবার, ১৩ আগস্ট, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


বরিশাল ব্যুরো

প্রকাশিত: আগস্ট ১৩, ২০২৫, ০৭:৪৬ পিএম

অনশন ভাঙাতে ব্যর্থ, ফিরে গিয়ে হুঁশিয়ারি দিলেন স্বাস্থ্য মহাপরিচালক

বরিশাল ব্যুরো

প্রকাশিত: আগস্ট ১৩, ২০২৫, ০৭:৪৬ পিএম

শেবাচিম হাসপাতালে আয়োজিত বৈঠকে কথা বলেন স্বাস্থ্য মহাপরিচালক আবু জাফর। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

শেবাচিম হাসপাতালে আয়োজিত বৈঠকে কথা বলেন স্বাস্থ্য মহাপরিচালক আবু জাফর। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালের অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধ করাসহ স্বাস্থ্যখাত সংস্কারের দাবিতে অনড় রয়েছে ছাত্র-জনতা। তাদের এই যৌক্তিক দাবি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বরিশালে সপ্তম দিনের মতো বুধবারও মহাসড়ক অবরোধ ও শিক্ষার্থীদের অনশন চলে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবু জাফর জরুরি ভিত্তিতে এ দিন বরিশালে এসে আন্দোলনকারী, স্থানীয় প্রশাসন, রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করলেও শেবাচিমের সামনে অনশনরতদের মান ভাঙাতে পারেননি। পাশাপাশি সড়ক থেকে আন্দোলনকারীদের সরানো যায়নি।

অনশনকারীদের মান ভাঙাতে ব্যর্থ হলেও মহাপরিচালক শেবাচিম হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা উন্নত করার জন্য কিছু পদক্ষেপ গ্রহণের কথা জানিয়েছেন। তিনি ছাত্র-জনতার চলমান আন্দোলন নিয়ে ভবিষ্যতে কঠোর হবারও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

জানা গেছে, বুধবার (১৩ আগস্ট) বেলা একটার দিকে শেবাচিম হাসপাতালে আয়োজিত বৈঠকে অংশ নেন স্বাস্থ্য মহাপরিচালক আবু জাফর। তিনি সেখানে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে একতা প্রকাশ করেন এবং শেবাচিম নিয়ে সকলের মতামত গ্রহণ করে আন্দোলনকারীদের ঘরে ফেরার আহ্বান জানান।

বৈঠকে মহাপরিচালক বলেন, ‘স্বাস্থ্যখাত সংস্কারে শিক্ষার্থীরা যে তিন দফা দাবি তুলেছে, তার সবগুলোই সংস্কার কমিশনের সুপারিশে রয়েছে। এগুলো রাতারাতি বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। স্বল্পমেয়াদি, মধ্যমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনায় স্বাস্থ্যখাত সংস্কার হবে। আন্দোলনকারীরা সংস্কার কমিশনের সুপারিশ পড়েনি।’

‘গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টে জানা গেছে, এ আন্দোলনে তৃতীয় কোনো শক্তির ইঙ্গিত আছে। এমনকি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে স্কুলের শিশু শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে নামানো হয়েছে। শিক্ষার্থীরা আন্দোলন থেকে না সরলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের দায়িত্ব পালন করবে এবং কঠোর হবে।’

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বৈঠকে ব্যস্ত থাকলেও বরিশালের রূপাতলী এবং নথুল্লাবাদ এলাকায় মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন ছাত্র-জনতা। বৈঠক শেষে মহাপরিচালক শেবাচিমের সামনে গিয়ে অনশনরত শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে-শুনিয়ে মান ভাঙানোর চেষ্টা করেন, কিন্তু তারা রাজি হননি।

বরং স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেন, স্বাস্থ্য উপদেষ্টাকে বরিশালে আসতে হবে। এর আগে মঙ্গলবার রাতে বরিশাল জেলা প্রশাসক দেলোয়ার হোসেনও অনশনকারীদের মান ভাঙানোর চেষ্টায় ব্যর্থ হন।

এদিকে, বুধবার সপ্তম দিনের মতো বরিশাল-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধের কারণে যাত্রীসাধারণ চরম ভোগান্তিতে পড়েন। নথুল্লাবাদ ও রূপাতলী এলাকায় মহাসড়ক অবরোধের কারণে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ আরও বৃদ্ধি পায়।

রাজধানী ঢাকা থেকে আসা একাধিক বাস যাত্রী অভিযোগ করেছেন, কিছুটা দূরত্বে পরপর দুই স্থানে সড়ক অবরোধ হওয়ায় মহাভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। প্রথমে নথুল্লাবাদ বাসস্ট্যান্ডে নামতে হয়েছে, এরপর অটোরিকশায় রূপাতলীতে যাওয়ার পথে আবারও অবরোধের কবলে পড়তে হয়েছে।

এ সীমাহীন দুর্ভোগ ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন। বরগুনাগামী চল্লিশোর্ধ্ব যাত্রী হাসান আলী বড় ব্যাগ কাঁধে নিয়ে হাঁটছিলেন এবং ক্ষোভের সঙ্গে বলছিলেন, ‘অভাগা জাতি, আমাদের মুক্তি নেই।’

আন্দোলন যৌক্তিক হলেও এতে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি হচ্ছে বলে স্বীকার করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিলুপ্ত জেলা কমিটির আহ্বায়ক সাব্বির হোসেন সোহাগ এবং সাহাবউদ্দিন মিয়া। তবে তারা বলছেন, স্বাস্থ্যখাত সংস্কার ‘আশ্বাস নয়, বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত’ আন্দোলনরতরা ঘরে ফিরবেন না।

জানা গেছে, আন্দোলনকারীদের নেতারা স্বাস্থ্য মহাপরিচালকের সঙ্গে বৈঠকেও একই ধরনের বক্তব্য রাখেন, যা দুইপক্ষের মধ্যে কিছুটা উত্তেজনা সৃষ্টি করে। দুই ঘণ্টা বৈঠকের পরে বেলা ৩টায় মহাপরিচালক তাদের কাছে শেষ অনুরোধ জানান, কিন্তু অনশনকারীরা তা প্রত্যাখ্যান করেন। পরে মহাপরিচালক রাজধানীর উদ্দেশ্যে বরিশাল ত্যাগ করেন।

এ সময় বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার (চলতি দায়িত্ব) আহসান হাবিবসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে অংশ নেওয়া সূত্রগুলো জানিয়েছে, স্বাস্থ্যখাত সংস্কারে চলমান আন্দোলন নিয়ে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) সভাপতি ডা. কবিরুজ্জামানসহ একাধিক চিকিৎসক প্রশ্ন তুলেছেন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হস্তক্ষেপ চেয়েছেন।

শিক্ষানবিশ (ইন্টার্ন) চিকিৎসকরা নিরাপত্তার জন্য ৬ দফা দাবি করেছেন এবং তা বাস্তবায়ন না হলে ২৪ ঘণ্টা পর কাজ বন্ধের হুমকি দিয়েছেন। তবে রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা প্রশাসনিকভাবে কঠোর অবস্থান নেওয়ার আগে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনা করার ওপর গুরুত্ব দেন।

স্বাস্থ্যখাত সংস্কারের দাবিতে বরিশালে আন্দোলন শুরু হয় ২৭ জুলাই থেকে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সংগঠক মহিউদ্দিন রনি ফেসবুকে ঘোষণা দিয়ে এই দাবি বাস্তবায়নে সকলকে সাথে নিয়ে মাঠে নামেন।

Shera Lather
Link copied!