রবিবার, ১৭ আগস্ট, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


বাগেরহাট প্রতিনিধি

প্রকাশিত: আগস্ট ১৭, ২০২৫, ০২:৪১ পিএম

বাগেরহাটে শতবর্ষী পান বাজার বিলুপ্তির পথে

বাগেরহাট প্রতিনিধি

প্রকাশিত: আগস্ট ১৭, ২০২৫, ০২:৪১ পিএম

ফকিরহাট উপজেলার শতবর্ষী ঐতিহ্যবাহী পান বাজার।   ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

ফকিরহাট উপজেলার শতবর্ষী ঐতিহ্যবাহী পান বাজার। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

বাগেরহাট জেলার ফকিরহাট উপজেলার শতবর্ষী ঐতিহ্যবাহী টাউন নওয়াপাড়া পান বাজার ধ্বংসের পথে। দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে বাজারের শতাধিক চান্দিনা (দোকানঘর) ভেঙে চুরমার হয়ে পড়েছে। বৃষ্টি ও রোদে পান নষ্ট হয়ে ক্ষতির শিকার হচ্ছেন কৃষক ও বিক্রেতারা।

ক্রেতা-বিক্রেতারা বলছেন, ৮ থেকে ১০ বছরেও কোনো সংস্কার না হওয়ায় তারা চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। অথচ প্রতি বছর সরকার এই বাজার থেকে প্রায় ১৫ থেকে ১৬ লাখ টাকা ইজারা পেয়ে থাকে। কিন্তু সেই অর্থের কোনো অংশই বাজার উন্নয়নে ব্যয় হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে।

শত বছরেরও বেশি পুরোনো এই পান বাজার একসময় দেশের অন্যতম বৃহত্তম পান বাজার হিসেবে খ্যাতি লাভ করেছিল। এখানকার পান শুধু দেশের বিভিন্ন জেলায় নয়, বিদেশেও রপ্তানি হতো। রোববার ও বৃহস্পতিবার সপ্তাহে দুই দিন ভোর ৪টা থেকেই বাগেরহাট, খুলনা, পিরোজপুর, মাদারীপুরসহ আশপাশের বিভিন্ন জেলা থেকে শত শত পানচাষি, ব্যবসায়ী ও ক্রেতা এখানে ভিড় জমাতেন। প্রতি হাটে প্রায় কোটি টাকার লেনদেন হয়। কিন্তু বর্তমানে অব্যবস্থাপনা, অবহেলা ও জরাজীর্ণ অবকাঠামোর কারণে ঐতিহাসিক এই বাজার হারাচ্ছে তার পুরোনো জৌলুস।

বাজারে আগত ব্যবসায়ী মামুন সরদার বলেন, চান্দিনার পুরনো টিনের চাল ফুটো হয়ে গেছে। ফলে সামান্য বৃষ্টি হলেই ভেতরে পানি ঢুকে যায়, ভিজে যায় পান। এতে চাষি ও বিক্রেতাদের বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়।

মো. রাজ্জাক বলেন, ক্রেতা-বিক্রেতাদের জন্য কোনো পাবলিক টয়লেটও নেই। ভোররাতে দূর-দূরান্ত থেকে আসা মানুষদের নানাভাবে দুর্ভোগ পোহাতে হয়।

স্থানীয় কৃষক পবিত্র দাস বলেন, বাজারের জরাজীর্ণ অবস্থার কারণে একদিকে আর্থিক ক্ষতি, অন্যদিকে ঐতিহ্য হারানোর শঙ্কায় আছেন তারা। তাদের দাবি, দ্রুত বাজার সংস্কার না হলে এই ঐতিহ্যবাহী হাট পুরোপুরি বিলুপ্ত হয়ে যাবে।

স্থানীয় বাসিন্দা মো. নাসির উদ্দিন বলেন, সরকারের একটু উদ্যোগ ও চান্দিনাগুলো সংস্কার করা হলে আবারও প্রাণ ফিরে পাবে শতবর্ষী এই ঐতিহ্যবাহী বাজার। এখানে লেনদেন যেমন বাড়বে, তেমনি কর্মসংস্থান ও কৃষকরা তাদের ন্যায্যমূল্য পাবেন।

টাউন নওয়াপাড়া পান হাটের ইজারাদার মো. তাইজুল ইসলাম জানান, সরকার বছরে প্রায় ১৫ থেকে ১৬ লাখ টাকা ইজারা পেলেও সংস্কারের জন্য কোনো উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না। ফলে চান্দিনা অচল হয়ে পড়েছে। লেনদেনও দিন দিন কমে যাচ্ছে। হারিয়ে যাচ্ছে পুরোনো দিনের জমজমাট পরিবেশ।

এ বিষয়ে ফকিরহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুমনা আইরিন বলেন, আমাদের কাছে এখনো কেউ লিখিতভাবে আবেদন করেনি। তবে বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে দেখব।

এলাকাবাসীর দাবি, শত বছরের ইতিহাস-ঐতিহ্য বহনকারী টাউন নওয়াপাড়া পান বাজার আজ বিলুপ্তির দ্বারপ্রান্তে। চান্দিনা মেরামত ও অবকাঠামো উন্নয়নে সরকারি উদ্যোগই এখন একমাত্র ভরসা। তা না হলে হারিয়ে যাবে দেশের অন্যতম প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী এই পান বাজার।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!