রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে নুরুল হক ওরফে ‘নুরাল পাগলার’ দরবারে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় মামলা করেছে পুলিশ। মামলায় অজ্ঞাত সাড়ে তিন হাজারজনকে আসামি করা হয়েছে। শুক্রবার বিকেলে গোয়ালন্দ পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের জুড়ান মোল্লাপাড়ায় এলাকায় নুরাল পাগলার দরবার শরীফে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
আজ শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) সকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি মো. রাকিবুল ইসলাম। শুক্রবার রাত ১২টার পর গোয়ালন্দ ঘাট থানার এসআই সেলিম বাদী হয়ে মামলাটি করেন।
নিজেকে ইমাম মাহাদি দাবি করা নুরুল হক সম্প্রতি মারা যাওয়ার পর মাটি থেকে কিছুটা উপরে কবর তৈরি করে তাকে দাফন করা হয়। কবরটিতে কাবা শরিফের আদল দেওয়া হয়। এ নিয়ে তৌহিদী জনতার মধ্যে গত কয়েকদিন ধরেই উত্তেজনা চলছিল।
শুক্রবার জুমার নামাজের পর ‘তৌহিদী জনতা’ হামলা চালায় নুরাল পাগলার দরবার শরীফে। পাল্টা আক্রমণ করেন তাঁর ভক্তরা। সংঘর্ষে একজন নিহত ও অর্ধশত মানুষ আহত হন। পরে নুরাল পাগলার দরবার শরীফে আগুন দরিয়ে দেয় ‘তৌহিদী জনতা’। মরদেহ কবর থেকে তুলে সড়কে নিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়।
এ সময় স্থানীয় প্রশাসন দুপক্ষকে সঙ্গে নিয়ে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করছিলেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণকালে হামলা চালানো হয় পুলিশের ওপর, ভাঙচুর করা হয় গাড়ি।
ওসি) মো. রাকিবুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় অজ্ঞাত সাড়ে তিন হাজার মানুষকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে নুরাল পাগলার দরবার শরীফ এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। দরবার শরীফে সাধারণ মানুষের প্রবেশ বন্ধ রাখা হয়েছে।
এদিকে, নুরাল পাগলার মরদেহ কবর থেকে তুলে পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। শুক্রবার এক বিবৃতিতে সরকার এ ঘটনাকে ‘অমানবিক ও ঘৃণ্য’ বলে উল্লেখ করে।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘গোয়ালন্দে নুরুল হকের (নুরাল পাগলা নামেও পরিচিত) কবরকে জঘন্যভাবে অপবিত্র করা এবং তার মৃতদেহকে জঘন্যভাবে পুড়িয়ে দেওয়ার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এই অমানবিক ও ঘৃণ্য কাজ আমাদের মূল্যবোধ, আমাদের আইন এবং একটি ন্যায় ও সভ্য সমাজের মূল ভিত্তির ওপর সরাসরি আঘাত।’