টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে গেল বছরের ৫ মে বিল থেকে উদ্ধার হওয়া সেই কঙ্কালের দাঁত থেকে লাশের পরিচয় শনাক্ত করে পুলিশ। ডিএনএ পরীক্ষা শেষে পুলিশ জানতে পেরেছে, ওই কঙ্কাল উপজেলার তরফপুর ইউনিয়নের টাকিয়া কদমা গ্রামের নিখোঁজ গৃহবধূ স্বপ্না আক্তারের। স্বপ্না ২০২৩ সালের ২২ জুলাই শ্বশুরবাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়েছিলেন।
এ ঘটনায় শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) মির্জাপুর থানায় স্বপ্নার স্বামীসহ ছয়জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেছেন তার মা জুলেখা বেগম। মামলার পরপরই পুলিশ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- স্বপ্না আক্তারের শ্বশুর ও টাকিয়া কদমা গ্রামের মৃত মুকাররম আলীর ছেলে সালাম মিয়া (৬৫) এবং একই এলাকার আব্দুল মান্নানের ছেলে চাচাশ্বশুর শফিকুল (৪৫)।
ঘটনা সূত্রে জানা যায়, ২০২৩ সালের ২২ জুলাই নিখোঁজ হন স্বপ্না আক্তার। স্বপ্না নিখোঁজ হওয়ার দিন ভোরে প্রবাসে থাকা স্বামী দুলাল মিয়া বাড়িতে হাজির হন। অর্থ সম্পদ চুরি করে স্বপ্না পরকীয়া প্রেমিকের সাথে চলে গেছে বলে দাবি করেন তিনি। এরপর ২০২৪ সালের ৫ মে স্থানীয়দের সংবাদের ভিত্তিতে বিল থেকে খুঁটির সাথে বাঁধা অবস্থায় একটি কঙ্কাল উদ্ধার করে পুলিশ। কঙ্কাল উদ্ধার হওয়ার সংবাদ শুনেই আত্মগোপনে চলে যান স্বপ্নার স্বামী। ওই বিলের পাশে পাওয়া একটি তাবিজ দেখে ওই কঙ্কালকে নিজের মেয়ে বলে দাবি করেন স্বপ্নার মা জুলেখা বেগম। পুলিশ ওই কঙ্কাল উদ্ধার করে কঙ্কালের হাড় ডিএনএ টেস্টের জন্য পাঠায়। কিন্তু হাড় থেকে ডিএনএ শনাক্ত করতে জটিলতার সৃষ্টি হওয়ায় পরে নমুনা হিসেবে দাঁত পাঠানো হয়। দাঁতের ডিএনএ পরীক্ষা করে প্রমাণিত হয় ওই কঙ্কাল নিখোঁজ স্বপ্নারই ছিল।
স্বপ্নার মা জুলেখা বেগম বলেন, ‘আমার মেয়ে নিখোঁজ হওয়ার পর মাঝেমধ্যে আমার মেয়ের জামাই আমাদের বাড়িতে আসত। কিন্তু কঙ্কাল উদ্ধারের পর থেকে তাকে আর দেখা যায়নি। যারা আমার মেয়েকে হত্যা করেছে, আমি তাদের সবার বিচার চাই।’
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক মো. ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনে গ্রেপ্তারদের আদালতে সোপর্দ করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হবে।’
মির্জাপুর থানার ওসি মুহাম্মদ রাশেদুল ইসলাম বলেন, ‘এটি একটি পরিকল্পিত হত্যা। আমরা তদন্ত চালাচ্ছি। এ ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে।’
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন