সোমবার, ০৬ অক্টোবর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


কালীগঞ্জ (লালমনিরহাট) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: অক্টোবর ৬, ২০২৫, ০২:০৫ পিএম

তিস্তাপাড়ে পানিবন্দি লাখো মানুষ

কালীগঞ্জ (লালমনিরহাট) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: অক্টোবর ৬, ২০২৫, ০২:০৫ পিএম

পানিবন্দি লাখো মানুষ। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

পানিবন্দি লাখো মানুষ। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

কয়েকদিনের অনবরত বর্ষণ আর উজানের পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি বেড়ে রাতে বিপৎসীমার ২৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও সকালে বিপৎসীমার নিচে নেমে এসেছে। রবিবার মধ্যরাতে ব্যারাজ রক্ষায় ফ্লাড বাইপাস কেটে দিয়ে পানি নিয়ন্ত্রণ করে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

ফলে লালমনিরহাটের লাখো মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

সোমবার (০৬ অক্টোবর) সকাল ৯টায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজ ডালিয়া পয়েন্টে পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ১২ মিটার, যা বিপৎসীমার (স্বাভাবিক ৫২.১৫ মিটার) ৩ সেন্টিমিটার নিচে। গেল রাতে বিপৎসীমার ২৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।

স্থানীয়রা জানায়, গত তিনদিনের ভারী বৃষ্টি আর উজানের পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি বাড়তে থাকে। রোববার সকাল থেকে ১২ ঘণ্টার ব্যবধানে ৮০ সেন্টিমিটার পানি বেড়েছে। সন্ধ্যা ৬টায় ডালিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। যা ক্রমেই বেড়ে গিয়ে রাতে বিপৎসীমার ২৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। তিস্তাপাড়ে রেড অ্যালার্ট জারি করে পানি উন্নয়ন বোর্ড।  

অতিরিক্ত পানির চাপ নিয়ন্ত্রণ করতে ফ্লাড বাইপাস কেটে দিয়ে পানিপ্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করে। ফলে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করে। নির্ঘুম রাত কাটে তিস্তাপাড়ের লাখো মানুষের। ফলে লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা জেলার কিছু অংশ বন্যার কবলে পড়ে।

বর্তমানে পানিবন্দি অবস্থায় আছেন লালমনিরহাটের পাঁচটি উপজেলার তিস্তা পাড়ের লাখো মানুষ। পানির চাপে ঝুঁকিতে পড়েছে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধগুলো। বিশেষ করে আদিতমারী উপজেলার সোলেডি স্পার বাঁধ-২ এর ব্রিজ অংশের নিচে সুড়ঙ্গ হয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে বাঁধটি ধসে যাওয়ারও শঙ্কা দেখা দিয়েছে। বেশ কিছু রাস্তা-ঘাট, সড়ক ডুবে গেছে।

হাতীবান্ধার দোয়ানী-গড্ডিমারী সড়ক উপচে নতুন নতুন এলাকায় ঢুকে পড়েছে বন্যার পানি। সময়ের সঙ্গে বাড়ছে পানিবন্দি এলাকার সংখ্যা। নিদারুণ কষ্টে পড়েছে পানিবন্দি পরিবারগুলো। বিশেষ করে শিশু, বৃদ্ধ আর প্রতিবন্ধীদের নিয়ে বিপাকে পড়েছেন বন্যাকবলিতরা। চারদিকে শুধু পানি আর পানি। গবাদি পশুপাখি নিয়ে বেশ বিপদে পড়েছেন খামারিরা। কেউ কেউ এসব পশুকে পাশে সড়কে বা উঁচু এলাকায় তাবুর নিচে রেখেছেন। উঁচু স্থানে মাচা বানিয়ে চলছে রান্না।

টিউবওয়েল-টয়লেট ডুবে যাওয়ায় বিড়ম্বনায় পড়েছেন এসব এলাকার নারীরা। ডুবে গেছে মৎস্য খামার, আমন ধানসহ নানান জাতের সবজির খেত।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, ভারী বৃষ্টি ও উজানের ঢলে বাড়ছে তিস্তা নদীর পানি প্রবাহ। রোববার সন্ধ্যা ৬টায় ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি প্রবাহ বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার ওপর রেকর্ড করা হয়। রাতে তা বেড়ে বিপৎসীমার ২৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও সকালে নিচে নেমে আসে। সোমবার সকাল ৯টায় ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় বিপৎসীমার ৩ সেন্টিমিটার নিচে।

সিন্দুর্না এলাকার রইচ উদ্দিন বলেন, বাড়ির উঠানে কোমর পানি। রাতে ঘুমাতে পারিনি। শিশুদের কোলে নিয়ে রাত কাটাতে হয়েছে। কখন কোন সন্তান বিছানা থেকে পড়ে পানিতে ডুবে যায়, সে আতঙ্কে রাত কেটেছে।

গোবর্দ্ধন গ্রামের ছকমল মিয়া বলেন, হুহু করে বাড়ছে তিস্তার পানি। সবখানে পানি আর পানি। মধ্যবয়সী আমন ধানের খেতসহ ফসল ডুবে নষ্ট হচ্ছে। পুকুর ডুবে ভেসে যাচ্ছে মাছ।

লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনিল কুমার বলেন, ভারী বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে তিস্তার পানি বেড়ে রাতে ডালিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ২৯ সেন্টিমিটার ওপরে প্রবাহিত হলেও সকালে কমে বিপৎসীমার নিচে নেমে এসেছে। বৃষ্টির পানি থাকায় বন্যার পানি নেমে যেতে একটু সময় লাগছে। তবে উজানের চাপ কমে যাওয়ায় বিকেলে জেলার বন্যার পরিস্থিতির উন্নতি ঘটতে পারে। পরিস্থিতি আমরা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!