রাজশাহীর পুঠিয়ায় পৌর সদর এলাকায় চলছে মাদকের রমরমা কারবার। এ কারবার থেকে বাদ পড়েনি নারী-পুরুষ কেউই। পাশাপাশি অর্থলোভে কিশোর যুবকরাও জড়িয়ে পড়ছে মাদক কারবারে। মাদক সেবনকারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় এলাকায় চুরি-ছিনতাইয়ের সংখ্যাও ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পেয়েছে।
এদিকে পুঠিয়া পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ড কৃষ্ণপুর আদিবাসী পাড়ায় প্রকাশ্যে প্রতিদিন হাজার হাজার লিটার চোলাই মদ তৈরি হচ্ছে। থানা হতে এই আদিবাসী পাড়ার দূরত্ব মাত্র তিনশ মিটার।
আদিবাসী পাড়ার পার্শ্ববর্তী এলাকার স্থানীয়রা জানায়, এখানে প্রতিটি মাদক কারবারিদের সঙ্গে মাদকদ্রব্য কর্মকর্তা এবং থানা পুলিশের কিছু সদস্যের সমঝোতা রয়েছে। এছাড়াও আদিবাসী পাড়ায় প্রতিদিন একটি রাজনৈতিক দলের কিছু ক্যাডার চোলাই মদের টাকা নেয় বলে অভিযোগ উঠেছে। সংশ্লিষ্ট মাদক বিক্রেতা বলছে, পুলিশ এবং মাদকদ্রব্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে চুক্তি করে তারা মাদক কারবার করে আসছে। চুক্তি না করলে একদিনও মাদক কারবার করা সম্ভব না।
আদিবাসী পাড়ায় নতুন কায়দায় চোলাই মদ বিক্রি হচ্ছে। তা হলো, বিভিন্ন স্থানে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকা কোমল পানির বোতলের ভেতরে চোলাই মদ বোতলজাত করে চড়া দামে বিক্রি করা হচ্ছে। এদিকে পৌরবাসীর পক্ষ হতে একাধিকবার মৌখিক এবং লিখিতভাবে থানায় অভিযোগ দিয়েও কোনো সুরাহা হচ্ছে না। চোলাই মদ সেবন করে রাস্তায় বেহুঁশ হয়ে যেখানে সেখানে অনেক ব্যক্তিকে পড়ে থাকতেও দেখা যাচ্ছে।
আদিবাসী পাড়ার আশপাশের স্থানীয়রা বলেন, চোলাই মদ তৈরি করার ৩০ মিটার দূরেই একটি মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ রয়েছে। বিদ্যালয়টি চলাকালীন ছাত্র-ছাত্রীরা প্রতিনিয়ত মাদক সেবনকারীদের রোশানলে পড়ছে। এই পাড়ায় চোলাই মদ বিক্রির পাশাপাশি অনেকে আবার অসামাজিক কার্যকলাপের সঙ্গে লিপ্ত হয়ে পড়ার অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয়দের দাবি, আদিবাসী পাড়াটি সরকারি খাস সম্পত্তির ওপর রয়েছে। সরকারের উচিত হবে, বিদ্যালয়ের স্বাভাবিক কার্যক্রম ও সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে এদের অন্যত্রে পুনর্বাসন করা।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর রাজশাহীর পুঠিয়া সার্কেলের পরিদর্শক সাইফুল ইসলাম বলেন, আদিবাসী পাড়ায় আমরা অভিযানে গেলে চোলাই মদ তৈরি করার কোনো আলামত পাই না। মদ তৈরিকারীরা আগে থেকে কিভাবে যেন বুঝতে পরে। আদিবাসী পাড়া থানার পাশে। থানা একটু কঠোর হলে, আদিবাসী পাড়ায় চোলাই মদ তৈরি করতে পারবে না। আমাদের লোকবল সংকট রয়েছে। তাই আমরা ঘনঘন অভিযান করতে পারছি না।
পুঠিয়া থানার ওসি কবির হোসেন জানান, মাদকের বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখা হচ্ছে। এই এলাকায় মাদক কারবারি ও এদের শেল্টারদাতাদের নামের তালিকা তৈরির কাজ শেষ পর্যায়ে। খুব শিগগিরই মাদক ক্রয়-বিক্রয়ের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হবে।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন