আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে স্থানীয় বিএনপির দুই পক্ষের নেতাকর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে।
শনিবার (১৮ অক্টোবর) দুপুরে মেঘনাবেষ্টিত কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়নের খালিয়ারচর এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের সময় উভয় পক্ষ গুলি বিনিময়, ককটেল বিস্ফোরণ এবং দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র ব্যবহার করে। এই ঘটনায় ছয়জন গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন। আহতদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালসহ আশপাশের বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
আহতদের মধ্যে হলেন- খায়ের উদ্দিন (৪২), আব্দুল মতিন (৫০), জোনায়েত মিয়া (২৫), কালু মিয়া (৩৭), খলিলুর রহমান (৪০), আল আমিন (২৫), পশিদ মিয়া, (৫০), মনির হোসেন (৩৫), মজিবুর রহমান (৫০), সালাউদ্দিন মিয়া (৩৫), বিল্লাল হোসেন (৩৫), শুভ মিয়া (২৫), জুনায়েদুর রহমান জুনায়েত (২৫), রাজীব মিয়া (১৫), আহাদ মিয়া (১৮), তামিম মিয়া (১৪), আব্দুর রহিম (৪৫), আলমগীর হোসেন (৪২), স্বপন মিয়া (৪০), আমির আলী (৬০), জমির আলী (৫০), রাফি মিয়া (২৪)।
এদের মধ্যে খায়ের উদ্দিন (৪২), আব্দুল মতিন (৫০), জোনায়েত মিয়া (২৫), কালু মিয়া (৩৭), খলিলুর রহমান (৪০) ও আল আমিনকে (২৫) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এলাকাবাসি জানায়, কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়ন বিএনপির সহসভাপতি কবির হোসেনের সঙ্গে ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি ফকির জহিরুল ইসলামের অনুসারীদের মধ্যে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। এর জেরে কবির হোসেন তার বলয় ভারী করার জন্য ইউনিয়ন যুবলীগের সহসভাপতি দেলোয়ার হোসেনের অনুসারীদের দলে বেড়ান। এ নিয়ে উভয় পক্ষের নেতাকর্মীদের মধ্যে বেশ কয়েকবার ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছিল। পরে শুক্রবার বিকেলে বিষয়টি নিয়ে আবারও যুবদল নেতা জহিরুলের লোকজনের সঙ্গে বিএনপি নেতা কবির হোসেনের লোকজনের কথা কাটাকাটির ঘটনা ঘটে।
তবে সম্প্রতি জহিরুল ইসলামের চাচা রিপনকে হত্যার ঘটনায় ১৭ জনের নামে মামলা দায়ের করা হয়। এই মামলার আসামিরা জামিন না নিয়ে এলাকায় প্রবেশ করতে চাইলে শনিবার (১৮ অক্টোবর) এই সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে। এই সময় খালিরচর পশ্চিমপাড়া ফকির বাড়ি জামে মসজিদের সামনে উভয় পক্ষের শত শত লোক দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। সংঘর্ষের সময় গোলাগুলির ঘটনাও ঘটে।
ঘটনার সময় এলাকার লোকজন আতঙ্কে ছুটাছুটি করতে থাকে। রণক্ষেত্রে পরিণত হয় খালিয়ারচর এলাকা। খবর পেয়ে থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। তবে এখনও ওই এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
ফকির জহিরুল ইসলাম অভিযোগ করেন, হত্যা মামলায় জামিন না নিয়ে কবিরের লোকজন এলাকায় প্রবেশ করতে চাইলে এলাকাবাসী এতে বাঁধা দেয়। এতে সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে।
অভিযোগ অস্বীকার করে কবির বলেন, কোনো কারণ ছাড়াই জহিরের লোকজন আমাদের ওপর হামলা করে।
আড়াইহাজার থানার ওসি খন্দকার নাসির উদ্দিন বলেন, পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। যে-কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে
ঘটনাস্থল ও আশপাশে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন