সিলেট-১ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে নিজের প্রার্থিতা ঘোষণা করেছেন দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী।
বুধবার (২২ অক্টোবর) হযরত শাহজালাল (রহ.)-এর মাজার প্রাঙ্গণে জোহরের নামাজ শেষে নির্বাচনি ‘পদযাত্রা’ শুরুর মাধ্যমে তিনি এ ঘোষণা দেন।
দীর্ঘদিন ধরে সিলেট-১ আসনকে ‘ভিআইপি আসন’ হিসেবে দেখিয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের কাছে বিশেষ প্রার্থীর প্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন আরিফুল হক। গত মে মাসে তিনি লন্ডনে গিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং তার কাছে নিজে বা জিয়া পরিবারের কাউকে সিলেট-১-এ প্রার্থী করার প্রস্তাব দেন। তবে পাঁচ মাস পেরিয়ে গেলেও কেন্দ্র থেকে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো সিদ্ধান্ত না আসায় এবার নিজেই সরাসরি নির্বাচনি মাঠে নামলেন তিনি।
জোহরের নামাজ শেষে প্রচারপত্র বিলি করে আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু করেন আরিফুল। এ সময় বিএনপির ৩১ দফা কর্মসূচি এবং নিজস্ব নির্বাচনি লিফলেট জনগণের মাঝে বিতরণ করা হয়। পদযাত্রায় হাজারো নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণে পুরো সিলেট শহর উৎসবমুখর পরিবেশে রূপ নেয়।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আরিফুল বলেন, ‘দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার বিষয়ে আমি শতভাগ আশাবাদী। আমি কখনো দলের সিদ্ধান্তের বাইরে যাইনি। আজকের জনসম্পৃক্ততাই প্রমাণ করে—এই আসনে ধানের শীষের আসল দাবিদার কে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি ৪৭ বছর ধরে এই দলের সঙ্গে আছি। আমাদের নেতা বলেছেন, জনগণের ভালোবাসা যার সঙ্গে থাকবে, তিনিই মনোনয়ন পাবেন। আমি সে বিশ্বাস নিয়ে প্রচারণা শুরু করেছি।’
সিলেটের উন্নয়নবঞ্চনার প্রসঙ্গে ক্ষোভ জানিয়ে আরিফুল বলেন, ‘সিলেট সবসময়ই অবহেলিত থেকেছে। এবারও একনেকে যে বাজেট পাশ হয়েছে, সেখানে সিলেটের কোনো প্রকল্প নেই। এই বৈষম্য থেকে মুক্তি পেতে হলে ধানের শীষকে বিজয়ী করতেই হবে।’
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে জয়লাভ করেছিলেন আরিফুল হক চৌধুরী। তবে জাতীয় নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী পরাজিত হন। এবার আগেভাগেই মাঠে নেমে তিনি নিজেকে সিলেট-১ আসনে শক্তিশালী প্রার্থী হিসেবে তুলে ধরতে চান।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, সিলেট বিভাগের সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকায় আরিফুল হকের নাম প্রাধান্য পাচ্ছে। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের ওপর নির্ভর করছে।
দলীয় ‘ভিআইপি প্রার্থী’ না পাওয়ায় এবার নিজেই প্রার্থী হয়ে মাঠে নেমেছেন আরিফুল হক চৌধুরী। এখন দেখার বিষয়, তার এই গণসম্পৃক্ততা বিএনপির মনোনয়ন নিশ্চিত করতে কতটা ভূমিকা রাখে।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন