লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় তিস্তা ব্যারেজের মেঘমুক্ত আকাশে উঁকি দিচ্ছে কাঞ্চনজঙ্ঘা। প্রতি বছর শীতের আগমনি বার্তা নিয়ে হাজির হয় বিশ্বের তৃতীয় সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গটি। মনোমুগ্ধকর এ দৃশ্য দেখতে ইতোমধ্যে দর্শনার্থীদের ভিড় জমেছে ব্যারেজ এলাকাজুড়ে।
বুধবার (৫ নভেম্বর) সকালে লালমনিরহাটের তিস্তা ব্যারেজ এলাকা ও সানিয়াজান নদীর ওপর থেকে স্পষ্ট দেখা যায় কাঞ্চনজঙ্ঘা।
টানা কয়েকদিনের মেঘলা আবহাওয়ার পর গত তিন দিন ধরে মেঘমুক্ত আকাশে দেশের সর্ববৃহৎ সেচ প্রকল্প—তিস্তা ব্যারেজ থেকে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে এই পর্বতশৃঙ্গটি। ভোরের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গে দিগন্তজোড়া সাদা রুপালি চূড়া যেন নতুন দিনের সৌন্দর্যে যোগ করছে অন্যরকম আবেশ।
আকাশ পরিষ্কার থাকায় সকাল থেকেই তিস্তা ব্যারেজ ও সানিয়াজান নদী এলাকায় ভিড় করছেন স্থানীয় বাসিন্দা ও দূরদূরান্ত থেকে আসা দর্শনার্থীরা। অনেকেই পরিবার-পরিজন নিয়ে এই মনোমুগ্ধকর দৃশ্য উপভোগ করছেন এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছবি ও ভিডিও শেয়ার করছেন।
উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা লালমনিরহাটে কয়েকদিন ধরে দূর আকাশে দেখা মিলছে কাঞ্চনজঙ্ঘা। বিনা পাসপোর্টে ভারত বা নেপালে না গিয়েই তিস্তা ব্যারেজ থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা যাওয়ায় উচ্ছ্বসিত স্থানীয়রা।
ভূগোলবিদদের মতে, কাঞ্চনজঙ্ঘা হিমালয়ের পূর্বাংশে নেপাল ও ভারতের সিকিম রাজ্যের সীমান্তে অবস্থিত। এর উচ্চতা ৮ হাজার ৫৮৬ মিটার (২৮ হাজার ১৬৯ ফুট), যা এভারেস্ট ও কে-টু’র পর বিশ্বের তৃতীয় সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ। তিস্তা ব্যারেজ থেকে এই শৃঙ্গের দূরত্ব তুলনামূলক কম হওয়ায় আকাশ পরিষ্কার থাকলে প্রায়ই ধরা দেয় এর অপরূপ সৌন্দর্য।
দর্শনার্থী কাওছার আহমেদ বলেন, ‘১৭ কিলোমিটার দূর থেকে এসে সকালে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে পেয়েছি। মনে হলো সাদা বরফে মোড়া কোনো স্বপ্নের পাহাড় দেখছি। এমন দৃশ্য দেখতে পেয়ে আমরা আনন্দিত। আপনারাও তিস্তা বেড়াতে আসতে পারেন কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে।’
প্রকৃতিপ্রেমী আরএম রিমন বলেন, ‘কাঞ্চনজঙ্ঘার এই মনোমুগ্ধকর দৃশ্য শীতের অল্প সময়ের জন্য হলেও তিস্তাপাড়ের সৌন্দর্যকে এক নতুন মাত্রা দিয়েছে। আমি মনে করি, এই দৃশ্যকে কেন্দ্র করে তিস্তা ব্যারেজকে দ্রুতই একটি আন্তর্জাতিক মানের পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার সুযোগ রয়েছে।’


সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন