নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ভূমিকম্পে দেয়াল চাপায় দশ মাসের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন অন্তত পাঁচজন। শুক্রবার সকাল ১০টা ৩৯ মিনিটে সারাদেশের মতো রূপগঞ্জেও ভূমিকম্প অনুভূত হয়, যা মুহূর্তেই এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল নরসিংদীর পার্শ্ববর্তী হওয়ায় রূপগঞ্জে ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা ছিল বেশি। ভূমিকম্পের সময় একটি টিনশেড বাড়ির সামনের উঁচু দেয়াল ভেঙে পড়ে। এতে চাপা পড়ে ব্যবসায়ী আব্দুল হকের দশ মাসের শিশুকন্যা ফাতেমা আক্তার ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারায়। একই ঘটনায় আহত হন শিশুটির মা কুলসুম বেগম এবং প্রবাসী মাসুদ মিয়ার স্ত্রী জেসমিন বেগম।
এছাড়া রূপসী এলাকায় বাবুল হোসেন ও তার মেয়ে সুমাইয়া ছাদের প্লাস্টার খসে পড়ে আহত হন। টান মুসুরি এলাকায় রফিক নামে এক ব্যক্তি দেয়ালচাপায় গুরুতর আহত হন।
ভূমিকম্পের প্রভাবে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি স্থাপনায় ফাটল দেখা দিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত স্থাপনাগুলোর মধ্যে রয়েছে, রূপগঞ্জ থানা ভবন, কাঞ্চন চিনতলা মন্দিরের দেয়াল, হাটাবো বাজারের একটি দোকানের দেয়াল ধসে ক্ষতি, গোলাকান্দাইল ও বরপা এলাকার বহু আবাসিক ভবন, দুটি গার্মেন্ট কারখানার বহুতল ভবন।
হঠাৎ এই ভূমিকম্পে আতঙ্কে স্থানীয়রা ঘরবাড়ি ছেড়ে বাইরে বের হয়ে আসেন। ঘটনাস্থল ও আশপাশের এলাকায় প্রশাসন দ্রুত তদারকি শুরু করেছে।
রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, এ ধরনের ভূমিকম্পে আমাদের করণীয় খুব কম। তবে যেসব প্রাচীর ঝুঁকিপূর্ণভাবে নির্মিত হয়েছে, সেগুলোর জন্য আমরা সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিচ্ছি। যে দেয়ালটি ভেঙে প্রাণহানি ঘটেছে, সেটি অত্যন্ত উঁচু ছিল এবং এতে কোনো পিলার বা রডের কাজ করা হয়নি। ফলে এটি ধসে পড়ে। আমরা এ ধরনের সব দেয়াল পরিদর্শনের নির্দেশ দিয়েছি এবং যেগুলো ঝুঁকিপূর্ণ—গ্রাম পুলিশের মাধ্যমে সেগুলো ভেঙে ফেলার ব্যবস্থা করব।
তিনি আরও বলেন, মারা যাওয়া শিশুটির দাফনের জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আহত মা এবং আরেক প্রতিবেশীর চিকিৎসার খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। প্রয়োজনে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হবে।

সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন